ইসলামি জীবনধারা/সীমারেখা
একথা সর্বসম্মতিক্রমে একমত যে জনসাধারণের মধ্যে মানুষের জীবন ধারা ব্যক্তিগত মূল্যবোধ এবং আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। কিছু আইন প্রণেতারা জনসাধারণের ক্ষেত্রে সম্মতির প্রভাবকে "ইসলামী আইন" বলে অভিহিত করেন। কেউ কেউ এটিকে "আইন" বলে থাকেন। এমনকি যখন এটিকে ইসলামী আইন বলা হয়, তখনও সঠিক আইনটি দেশ ভেদে ভিন্ন হয়। যেমন মালয়েশিয়ায়, এক প্রদেশ থেকে আরেক প্রদেশে আলাদা হয়।
এ পার্থক্য এই কারণে যে, প্রতিটি দেশ বা রাষ্ট্রের বিভিন্ন লক্ষ্য এবং ভিন্ন ইতিহাস রয়েছে। কুরআন শুধুমাত্র উপরের এবং নিম্ন তাত্ত্বিক আইনি সীমাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে।[১] এটি প্রত্যেক জাতিকে তাদের আইন হতে তাত্ত্বিক আইনি সীমার মধ্যে যেকোনো বিন্দু বা পরিসর বেছে নিতে সুযোগ দেয়। শাস্তির সর্বোচ্চ সীমা কমানোর উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ব্রুনাই দারুসসালাম সরকার মৃত্যুদণ্ড বাতিল করেছে।[২] আরেকটি উদাহরণ হলো জর্ডানের রানী তার চুল ঢেকে রাখেন না। এর বিপরীত প্রতিবেশী সৌদি আরব ন্যূনতম সীমা বাড়িয়েছে, তারা নারীদের চুল না ঢেকে রাখাকে অপরাধ বলে। সুতরাং, তাত্ত্বিক আইনি দেশভেদে সীমাকে কভার করবে এবং একই আইনের বিভিন্ন বিধান প্রকৃত স্থানীয় আইন নয়। কুরআনে মানুষের সাধারণ বিধান বর্ণনা করা হয়েছে।[৩] এ গ্রন্থে গ্রহণযোগ্য ও অগ্রহণযোগ্য নীতিকে আইন প্রণয়ন বলা হয়েছে। কোরানের আইনি সীমা লঙ্ঘন না করে মানুষের জন্য আইন প্রণয়ন এবং নেতৃত্ব নির্ধারণের সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে পারস্পরিক পরামর্শ করা।[৪] তাই আলোচনার কোরানিক ধারণা হলো কোনো না কোনোভাবে গণতন্ত্রের ধারণার সঙ্গে তুলনীয় হয়। একইভাবে, আইনি সীমার কোরানিক ধারণাটি মানবাধিকারের ধারণার সাথেও তুলনীয় হয়। এই আইনি সীমাগুলি শুধুমাত্র স্বাধীনতাই নয়, বরং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্যও প্রণয়ন করা হয়েছে। রাজনীতির ক্ষেত্রে ইসলামের ভূমিকা নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। আফগানিস্তান অথবা পাকিস্তানের আয়মান জাওয়াহিরির মতো পণ্ডিতরা মনে করেন কোরান ও হাদিসের বাইরে আইনের অন্য কোনো উৎস নাই। সিরিয়ার মুহাম্মাদ শাহরুর মত পণ্ডিতরা কোরানকে আইনগত সীমা এবং হাদিসকে উদাহরণ হিসাবে গ্রহণ করেন। তারা আল্লাহর আরোপিত আইনী সীমা দ্বারা সমস্যা সমাধানের অনুমতি দেন। কাতারের ইউসুফ কারাধাভির মতো পণ্ডিত, ইউরোপীয় ফতোয়া বিভাগ ও গবেষণা পরিষদের প্রধানগণও মধ্যম পথ বেছে নেন। যাইহোক, তারা সকলেই ব্যক্তিগত জীবনে সবার সম্মতিতে আইন প্রণয়ন এবং বিশ্বাসের গুরুত্ব সম্পর্কে একমত।
দেওয়ানী আইনের সীমা
সম্পাদনাবিঃদ্রঃ:
- বাইবেল শুধুমাত্র তুলনা জন্য উল্লেখ করা হয়।
- প্রকৃত আইন উল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্ন হতে পারে কিন্তু সীমা লঙ্ঘন করে না। উদাহরণস্বরূপ প্রকৃত পোশাক আইন আল্লাহর বিধানের মধ্যে সীমাবদ্ধ হতে পারে। আল্লাহপাক বলেন, “يَا بَنِي آَدَمَ قَدْ أَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْآَتِكُمْ وَرِيشًا وَلِبَاسُ التَّقْوَى ذَلِكَ خَيْرٌ ذَلِكَ مِنْ آَيَاتِ اللَّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ “ অর্খ হে আদম সন্তান, আমি তোমাদেরকে তিন ধরনের পোশাক দিয়েছি। ১ সাধারণ পোশাক, ২ সৌন্দর্য পূর্ণ পোশাক, ৩ আল্লাহর ভীতি সম্পন্ন পোশাক। শেষের পোশাক উত্তম। এটা আল্লাহর নিদর্শন। আশা করা যায় তারা আল্লাহর যিকির করবে।[৫]
- কিছু আইন বিশেষ ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তা অন্যের জন্য নয়। যেমন নবীর স্ত্রীদের জন্য আইন অন্য নারীর জন্য নয়। যেমন আল্লাহ পাক বলেন, “তোমরা তোমাদের গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করো, প্রাচীন জাহেলী যুগের নারীদের ন্যায় নিজেদেরকে প্রর্দশন করো না।[৬] এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যখন তোমরা তাদের (নবী পত্মীদের) কাছে কিছু চাইবে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এ বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ।[৭]
পোশাকের বিধান
সম্পাদনা- কুরআনে পুরুষদের পোষাকের বিধান। আল্লাহ পাক বলেন, “ قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ “ অর্থ “মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত।” [৮] আয়াতের উদ্দেশ্য অবৈধ ও হারাম পন্থায় কাম প্রবৃত্তি চরিতার্থ করা এবং তার সমস্ত ভূমিকাকে নিষিদ্ধ করা। তন্মধ্যে কাম-প্রবৃত্তির প্রথম ও প্রারম্ভিক কারণ হচ্ছে- দৃষ্টিপাত করা ও দেখা এবং সর্বশেষ পরিণতি হচ্ছে ব্যভিচার। এ দু'টিকে স্পষ্টতঃ উল্লেখ করে হারাম করে দেয়া হয়েছে। এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী হারাম ভূমিকাসমূহ- যেমন কথাবার্তা শোনা, স্পর্শ করা ইত্যাদি প্রসঙ্গক্রমে এগুলোর অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। তদ্রূপ নিজের সতরকে অন্যের সামনে উন্মুক্ত করা থেকে দূরে থাকাও যৌনাঙ্গ সংযত করার পর্যায়ভুক্ত। পুরুষের জন্য সতর তথা লজ্জাস্থানের সীমানা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত নির্ধারণ করেছেন। তিনি বলেছেনঃ “নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত সতর।”[৯] শরীরের এ অংশ স্ত্রী ছাড়া আর কারোর সামনে ইচ্ছাকৃতভাবে খোলা হারাম। জারহাদে আল-আসলামী বৰ্ণনা করেছেন, একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মজলিসে আমার রান খোলা অবস্থায় ছিল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “তুমি কি জানো না, রান ঢেকে রাখার জিনিস?”[১০][১১]
- বাইবেলে নারীর পোশাকের বিধান। বাইবেলে আছে, “মহিলারা পুরুষদের পোশাক পরবে না, পুরুষরাও মহিলাদের পোশাক পরবে না; যে কেউ এই কাজ করে তা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের কাছে ঘৃণ্য৷[১২] খ্রিস্টান পুরুষ বা মহিলাদের কানের দুল পরা উচিত।[১৩] এভাবে বাইবেলে আছে যে স্ত্রীলোক মাথা না ঢেকে প্রার্থনা করে বা ভাববানী বলে, সে তার নিজের মাথার অপমান করে, সে মাথা মোড়ানো স্ত্রীলোকের মত হয়ে পড়ে৷ স্ত্রীলোক যদি তার মাথা না ঢাকে তবে তার চুল কেটে ফেলাই উচিত৷ কিন্তু চুল কেটে ফেলা বা মাথা নেড়া করা যদি স্ত্রীলোকের পক্ষে লজ্জার বিষয় হয়, তবে সে তার মাথা ঢেকে রাখুক৷[১৪] অনুরূপভাবে আমি চাই নারীরা যেন ভদ্রভাবে ও যুক্তিযুক্তভাবে উপযুক্ত পোশাক পরে তাদের সজ্জিত করে৷ তারা নিজেদের যেন শৌখিন খোঁপা করা চুলে বা সোনা মুক্তোর গহনায় বা দামী পোশাকে না সাজায়৷ কিন্তু সৎ কাজের অলঙ্কারে তাদের সেজে থাকা উচিত৷ যে নারী নিজেকে ঈশ্বরভক্ত বলে পরিচয় দেয়, তার এইভাবেই সাজা উচিত৷ নারীরা সম্পূর্ণ বশ্যতাপূর্বক নীরবে নতনম্র হয়ে শিক্ষা গ্রহণ করুক৷ আমি কোন নারীকে শিক্ষা দিতে অথবা কোন পুরুষের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করতে দিই না; বরং নারী নীরব থাকুক৷[১৫] আল্লাহপাক বলেন, “আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।[১৬] এ আয়াতের তাফসিরে বলা হয়েছে, যা সাধারণতঃ প্রকাশ থাকে’ বলতে এমন সৌন্দর্য (বাহ্যিক আভরণ) বা দেহের অংশকে বুঝানো হয়েছে যা পর্দা বা গোপন করা অসম্ভব। যেমন কোন জিনিস নিতে বা দিতে গিয়ে হাতের করতল, অথবা কিছু দেখতে গিয়ে চোখ গোপন করা সহজ নয়। অনুরূপভাবে হাতের মেহেন্দী, আঙ্গুলের আংটি, চোখের সুর্মা, কাজল, অথবা পরিহিত সৌন্দর্যময় পোশাককে ঢাকার জন্য যে বোরকা বা চাদর ব্যবহার করা হয়, তাও এক প্রকার সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত; যা গোপন করা অসম্ভব। অতএব এই সব আভরণের প্রকাশ প্রয়োজন মত দরকার সময়ে বৈধ। এভাবে “সৌন্দর্য বলতে এমন পোশাক ও অলংকার বোঝায় যা মহিলারা নিজেদের রূপ-সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করে থাকে। যে সৌন্দর্য একমাত্র স্বামীদের জন্য ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। সুতরাং নারীর পোশাক ও অলংকারের সৌন্দর্য প্রকাশ যদি অন্য পুরুষের সামনে নিষিদ্ধ হয়, তাহলে দেহের কোন অংশ খুলে প্রদর্শন করা ইসলামে কেমন করে অনুমতি থাকতে পারে? এ তো অধিকরূপে হারাম তথা নিষিদ্ধ হবে। যাতে মাথা ঘাড়, গলা ও বুকের পর্দা হয়ে যায়। কারণ এ সমস্ত অঙ্গ খুলে রাখার অনুমতি নেই।
- কোন আত্মীয়রা নারীর দেহ দেখতে দেয়া যায় কি? আল্লাহপাক বলেন, “ঈমান আনয়নকারিনী নারীদেরকে বলঃ তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযাত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভ্রাতুস্পুুত্র, ভগ্নীপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারও নিকট তাদের আভরণ প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের গোপন আভরণ প্রকাশের উদ্দেশে সজোরে পদক্ষেপ না ফেলে। হে মু’মিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।”[১৭]অনেক আলেমের মতেঃ নারীদের জন্য মাহরাম নয়, এমন পুরুষের প্রতি দেখা সর্বাবস্থায় হারাম; কামভাব সহকারে বদ নিয়তে দেখুক অথবা এ ছাড়াই দেখুক। [ইবন কাসীর] তার প্রমাণ উম্মে সালমা বর্ণিত হাদীস যাতে বলা হয়েছেঃ ‘একদিন উম্মে-সালমা ও মায়মুনা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা উভয়েই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। হঠাৎ অন্ধ সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম তথায় আগমন করলেন। এই ঘটনার সময়-কাল ছিল পর্দার আয়াত নাযিল হওয়ার পর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উভয়কে পর্দা করতে আদেশ করলেন। উম্মে-সালমা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল, সে তো অন্ধ, সে আমাদেরকে দেখতে পাবে না এবং আমাদেরকে চেনেও না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তো অন্ধ নও, তোমরা তাকে দেখছি।[১৮][১৯]
- সুন্নত বা লিংগ ছেদন। এটি বাইবেল আছে “ঈশ্বর অব্রাহামকে আরও বললেন, “এই ব্যবস্থায় তোমার যা করবার রয়েছে তা এই: তুমি ও তোমার সমস্ত সন্তানেরা বংশের পর বংশ ধরে এই ব্যবস্থা মেনে চলবে। আমার এই যে ব্যবস্থা, যার চিহ্ন হিসাবে তোমাদের প্রত্যেকটি পুরুষের সুন্নত করাতে হবে, তা তোমার ও তোমার বংশের লোকদের মেনে চলতে হবে। তোমাদের প্রত্যেকের পুরুষাংগের সামনের চামড়া কেটে ফেলতে হবে। তোমার ও আমার মধ্যে এই যে ব্যবস্থা স্থির করা হল, এটাই হবে তার চিহ্ন। বংশের পর বংশ ধরে তোমাদের প্রত্যেকটি পুুরুষ সন্তানের জন্মের আট দিনের দিন এই সুন্নতের অনুষ্ঠান করতে হবে। তোমার বংশের কেউ না হয়ে তোমার বাড়ীর দাস হলেও তাদের সবাইকে এই সুন্নত করাতে হবে, তা তারা তোমার বাড়ীতে জন্মেছে এমন কোন দাসের সন্তানই হোক বা টাকা দিয়ে বিদেশীর কাছ থেকে কিনে নেওয়া দাসই হোক। আমি আবার বলছি, যে দাস তোমার বাড়ীতে জন্মেছে কিম্বা যাকে টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে, তাদের প্রত্যেককে সুন্নত করাতেই হবে। এটাই হবে তোমাদের দেহে আমার চিরকালের ব্যবস্থার চিহ্ন। যে লোকের পুরুষাংগের সামনের চামড়া কাটা নয় তাকে তার জাতির মধ্য থেকে মুছে ফেলা হবে, কারণ সে আমার ব্যবস্থা অমান্য করেছে।”[২০] ও কুরআনের[২১] সমর্থন করে।
- ঋতুস্রাব কালিন বিধান, বাইবেলে আছে, আর সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণকে বল, যে স্ত্রী গর্ভধারণ করিয়া পুত্র প্রসব করে, সে সাত দিন অশুচি থাকিবে, যেমন মাসিকের অশৌচকালে, তেমনি সে অশুচি থাকিবে। পরে অষ্টম দিনে বালকটির পুরুষাঙ্গের ত্বক্ছেদ হইবে। আর সেই স্ত্রী তেত্রিশ দিন পর্যন্ত আপনার শৌচার্থ রক্তস্র্রাব অবস্থায় থাকিবে; যাবৎ শৌচার্থ দিন পূর্ণ না হয়, তাবৎ সে কোন পবিত্র বস্তু স্পর্শ করিবে না, এবং ধর্মধামে প্রবেশ করিবে না। আর যদি সে কন্যা প্রসব করে, তবে যেমন অশৌচকালে, তেমনি দুই সপ্তাহ অশুচি থাকিবে; পরে সে ছেষট্টি দিবস আপনার শৌচার্থ রক্তস্রাব অবস্থায় থাকিবে। পরে পুত্র কিম্বা কন্যা প্রসবের শৌচার্থক দিন সম্পূর্ণ হইলে সে হোমবলির জন্য একবর্ষীয় একটি মেষবৎস, এবং পাপার্থক বলির জন্য একটি কপোতশাবক কিম্বা একটি ঘুঘু সমাগম-তাম্বুর দ্বারে যাজকের নিকটে আনিবে। আর যাজক সদাপ্রভুর সম্মুখে তাহা উৎসর্গ করিয়া সেই স্ত্রীর নিমিত্তে প্রায়শ্চিত্ত করিবে, তাহাতে সে আপন রক্তস্রাব হইতে শুচি হইবে। পুত্র কিম্বা কন্যা প্রসবকারিণীর জন্য এই ব্যবস্থা। যদি সে মেষবৎস আনিতে অক্ষম হয়, তবে দুইটি ঘুঘু কিম্বা দুইটি কপোতশাবক লইয়া তাহার একটি হোমার্থে, অন্যটি পাপার্থে দিবে; আর যাজক তাহার নিমিত্তে প্রায়শ্চিত্ত করিবে, তাহাতে সে শুচি হইবে।[২২] ও কুরআনে আছে, “আর তারা তোমাকে হায়েয সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, তা কষ্ট। সুতরাং তোমরা হায়েযকালে স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। অতঃপর যখন তারা পবিত্র হবে তখন তাদের নিকট আস, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন এবং ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।”[২৩] অর্থ
সাবালিকা হওয়ার পর প্রত্যেক নারীর লজ্জাস্থান থেকে মাসে একবার নিয়মিত যে রক্ত আসে, তাকে হায়েয (মাসিক, ঋতু বা রজঃস্রাব) বলা হয়। আবার কখনো কখনো কোন রোগের কারণে বাঁধা নিয়মের অতিরিক্তও আসে; তাকে ইস্তিহাযা বলে। ইস্তিহাযার বিধান হায়েযের থেকে ভিন্ন। মাসিকের দিনগুলোতে নামায মাফ এবং রোযা রাখা নিষেধ। পরে রোযা কাযা করা আবশ্যক। পুরুষের জন্য কেবল সঙ্গম করা নিষেধ, তবে চুম্বন ও আলিঙ্গন করা জায়েয। অনুরূপ মহিলা এই দিনগুলোতে রান্না সহ সংসারের অন্য সব কাজই করতে পারে। কিন্তু ইয়াহুদীদের মধ্যে এই দিনগুলোতে মহিলাকে সম্পূর্ণ অপবিত্র গণ্য করা হত। তারা তার সাথে মেলামেশা এবং খাওয়া-দাওয়া বৈধ মনে করত না। সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। এতে কেবল সহবাস করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। নিকটবর্তী না হওয়া বা দূরে থাকার অর্থঃ কেবল সঙ্গম করা নিষেধ। চরম যৌন উত্তেজনা বশতঃ ঋতুকালীন অবস্থায় সহবাস অনুষ্ঠিত হয়ে গেলে খুব ভাল করে তাওবা করে নেয়া ওয়াজিব। তার সাথে সাথে কিছু দান-সদকা করে দিলে তা উত্তম।[২৪][২৫]
- দাড়ি রাখা বিষয়ে বাইবেলে আছে, “তোমরা আপন আপন মস্তক প্রান্তের কেশ মণ্ডলাকার করিও না, ও আপন আপন দাড়ির কোণ মুণ্ডন করিও না।”[২৬] ও কুরআনে আছে, “আর তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দিয়েছেন, অতঃপর তোমাদের আকৃতিকে সুন্দর করেছেন।”[২৭]
- সব নারীকে ঘরে রাখতে হবে। আল্লাহপাক বলেন, “আর তোমরা নিজ গৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাক-জাহেলী যুগের মত সৌন্দর্য প্রদর্শন করো না।”[২৮] আয়াতের অর্থ দাঁড়ায়, নারীর আসল অবস্থানক্ষেত্র হচ্ছে তার গৃহ। কেবলমাত্র প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সে গৃহের বাইরে বের হতে পারে। [ইবন কাসীর মুয়াসসার] আয়াতের শব্দাবলী থেকেও এ অর্থ প্রকাশ হচ্ছে এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস একে আরো বেশী সুস্পষ্ট করে দেয়। মুজাহিদ তো তখনই স্থিরচিত্তে আল্লাহর পথে লড়াই করতে পারবে যখন নিজের ঘরের দিক থেকে সে পূর্ণ নিশ্চিন্ত থাকতে পারবে, তার স্ত্রী তার গৃহস্থালী ও সন্তানদেরকে আগলে রাখবে এবং তার অবর্তমানে তার স্ত্রী কোন অঘটন ঘটাবে না, এ ব্যাপারে সে পুরোপুরি আশংকামুক্ত থাকবে। যে স্ত্রী তার স্বামীকে এ নিশ্চিন্ততা দান করবে। সে ঘরে বসেও তার জিহাদে পুরোপুরি অংশীদার হবে। অন্য একটি হাদীসে এসেছে, “নারী পৰ্দাবৃত থাকার জিনিস। যখন সে বের হয় শয়তান তার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখে এবং তখনই সে আল্লাহর রহমতের নিকটতর হয় যখন সে নিজের গৃহে অবস্থান করে।”[২৯]
বিবাহ
সম্পাদনা- বিয়ের অনুমতি দিয়েছে কী? ইসলাম বিবাহের অনুমতি দেয়্ বৈরাগ্যকে ঘৃণা করে। আল্লাহ বলেন, وَأَنْكِحُوا الْأَيَامَى مِنْكُمْ وَالصَّالِحِيْنَ مِنْ عِبَادِكُمْ ‘তোমাদের মধ্যে যারা স্বামীহীন তাদের বিবাহ সম্পাদন কর এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরও’[৩০] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمُ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ- ‘হে যুবসমাজ! তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহের সামর্থ্য রাখে, তাদের বিবাহ করা কর্তব্য। কেননা বিবাহয় দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণকারী, যৌনাঙ্গের পবিত্রতা রক্ষাকারী। আর যার সামর্থ্য নেই সে যেন ছিয়াম পালন করে। কেননা ছিয়াম হচ্ছে যৌবনকে দমন করার মাধ্যম’।[৩১] বিবাহ করা সমস্ত নবীদের সুন্নাত। আল্লাহ বলেন,وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلاً مِّن قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجاً وَذُرِّيَّةً ‘তোমার পূর্বে আমরা অনেক রাসূল প্রেরণ করেছিলাম এবং তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দিয়েছিলাম’[৩২] বিবাহ না করে চিরকুমার ও নিঃসঙ্গ জীবন যাপনের অনুমতি ইসলামে নেই। সা‘আদ ইবনু আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ) বলেন, رَدَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى عُثْمَانَ بْنِ مَظْعُوْنٍ التَّبَتُّلَ، وَلَوْ أَذِنَ لَهُ لاَخْتَصَيْنَا ‘রাসূল (ছাঃ) ওছমান ইবনু মাযঊনকে নিঃসঙ্গ জীবন যাপনের অনুমতি দেননি। তাকে অনুমতি দিলে আমরা নির্বীর্য হয়ে যেতাম।’[৩৩]। আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই রাসূল (ছাঃ) নিঃসঙ্গ জীবন যাপনকে নিষেধ করেছেন’।[৩৪] সুতরাং বিবাহ না করলে ব্যক্তি গোনাহগার না হ’লেও এতে শরী‘আতের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধানকে অগ্রাহ্য করা হয়।
- বহুবিবাহের কারণ: এতিম শিশু/সন্তানের জন্য নাকি খেয়ালখুশি মতো? ইসলামে বিবাহের ব্যাপারে মৌলিক বিধান হল, সামর্থ্য থাকলে পুরুষ একাধিক বিবাহ করবে। তবে বহু স্ত্রীর মাঝে ইনসাফ বজায় না রাখতে পারলে একটি নিয়ে সন্তষ্ট হবে। মহান আল্লাহ বলেছেন, “আর তোমরা যদি আশংকা কর যে, পিতৃহীনাদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিবাহ কর (স্বাধীন)নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে; দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশংকা কর যে, সুবিচার করতে পারবে না, তবে একজনকে (বিবাহ কর) অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত (ক্রীত অথবা যুদ্ধবন্দিনী) দাসীকে (স্ত্রীরূপে ব্যবহার কর)। এটাই তোমাদের পক্ষপাতিত্ব না করার অধিকতর নিকটবর্তী।”[৩৫] পরন্ত বহু বিবাহ করা শর্তসাপেক্ষে সুন্নত ও আফযল। যেহেতু আমাদের গুরু মহানবী (সঃ) বহু বিবাহ করেছেন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) সাঈদ বিন জুবাইরকে বলেছিলেন, ‘বিবাহ কর। কারণ এই উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি , যার সবার বেশি স্ত্রী।’ অথবা ‘এই উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তির সবার চেয়ে বেশি স্ত্রী ছিল।[৩৬]
- বহুবিবাহকে উৎসাহিত বা নিরুৎসাহিত করা হয়? ইসলাম সময় স্থানভেদে বহুবিবাহ বৈধ ও অবৈধ করে। আল্লাহপাক বলেন, “যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, (নারী) ইয়াতীমদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে নারীদের মধ্য হতে নিজেদের পছন্দমত দুই-দুই, তিন-তিন ও চার-চার জনকে বিবাহ কর, কিন্তু যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, তোমরা সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে কিংবা তোমাদের অধীনস্থ দাসীকে; এটাই হবে অবিচার না করার কাছাকাছি।” “তোমরা কক্ষনো স্ত্রীদের মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না যদিও প্রবল ইচ্ছে কর, তোমরা একজনের দিকে সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকে পড়ো না এবং অন্যকে ঝুলিয়ে রেখ না। যদি তোমরা নিজেদেরকে সংশোধন কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”[৩৭] বহু-বিবাহ প্রথাটি ইসলামপূর্ব যুগেও দুনিয়ার প্রায় সকল ধর্মমতেই বৈধ বলে বিবেচিত হত। আরব, ভারতীয় উপমহাদেশ, ইরান, মিশর, ব্যাবিলন প্রভৃতি দেশেই এই প্রথার প্রচলন ছিল। বহু-বিবাহের প্রয়োজনীয়তার কথা বর্তমান যুগেও স্বীকৃত। বর্তমান যুগে ইউরোপের এক শ্রেণীর চিন্তাবিদ বহু-বিবাহ রহিত করার জন্য তাদের অনুসারীদেরকে উদ্ভুদ্ধ করে আসছেন বটে, কিন্তু তাতে কোন সুফল হয়নি। বরং তাতে সমস্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর ফল রক্ষিতার রূপে প্রকাশ পেয়েছে। অবশেষে প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক ব্যবস্থারই বিজয় হয়েছে। তাই আজকে ইউরোপের দূরদর্শী চিন্তাশীল ব্যক্তিরা বহু-বিবাহ পুনঃপ্রচলন করার জন্য চিন্তা-ভাবনা করছেন। ইসলাম একই সময়ে চারের অধিক স্ত্রী রাখাকে হারাম ঘোষণা করেছে। ইসলাম এ ক্ষেত্রে ইনসাফ কায়েমের জন্য বিশেষ তাকিদ দিয়েছে এবং ইনসাফের পরিবর্তে যুলুম করা হলে তার জন্য শাস্তির কথা ঘোষণা করেছে। আলোচ্য আয়াতে একাধিক অর্থাৎ চারজন স্ত্রী গ্রহণ করার সুযোগ অবশ্য দেয়া হয়েছে, অন্যদিকে এই চার পর্যন্ত কথাটি আরোপ করে তার উর্ধ্ব সংখ্যক কোন স্ত্রী গ্রহণ করতে পারবে না বরং তা হবে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ- তাও ব্যক্ত করে দিয়েছে। ইসলাম পূর্ব যুগে কারও কারও দশটি পর্যন্ত স্ত্রী থাকত। ইসলাম এটাকে চারের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে। কায়েস ইবন হারেস বলেন, ‘আমি যখন ইসলাম গ্রহণ করি তখন আমার স্ত্রী সংখ্যা ছিল আট। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসলে তিনি আমাকে বললেন, ‘এর মধ্য থেকে চারটি গ্রহণ করে নাও।[৩৮]
একজন মহিলাকেই বিবাহ করা যথেষ্ট হতে পারে। কেননা, একাধিক স্ত্রী রাখলে সুবিচারের যত্ন নেওয়া বড়ই কষ্টকর হয়। যার প্রতি আন্তরিক টান থাকবে, তার জীবনের প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থাপনার প্রতিই বেশী খেয়াল থাকবে। এইভাবে সে স্ত্রীদের মধ্যে সুবিচার বজায় রাখতে অক্ষম হবে এবং আল্লাহর কাছে অপরাধী গণ্য হবে। কুরআন এই বাস্তব সত্যকে অন্যত্র অতি সুন্দররূপে এইভাবে বর্ণনা করেছে, [وَلَنْ تَسْتَطِيعُوا أَنْ تَعْدِلُوا بَيْنَ النِّسَاءِ وَلَوْ حَرَصْتُمْ فَلا تَمِيلُوا كُلَّ الْمَيْلِ فَتَذَرُوهَا كَالْمُعَلَّقَةِ] অর্থাৎ ‘‘তোমরা যতই সাগ্রহে চেষ্টা কর না কেন, স্ত্রীদের মাঝে ন্যায়পরায়ণতা কখনই বজায় রাখতে পারবে না। তবে তোমরা কোন এক জনের দিকে সম্পূর্ণভাবে ঝুঁকে পড়ো না এবং অপরকে ঝোলানো অবস্থায় ছেড়ে দিও না।’’[৩৯] এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, একাধিক বিবাহ করে স্ত্রীদের মধ্যে ন্যায়পরায়ণতা বজায় না রাখা বড়ই অনুচিত ও বিপজ্জনক ব্যাপার। আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তির দু’টি স্ত্রী আছে, কিন্তু সে তন্মধ্যে একটির দিকে ঝুঁকে যায়, এরূপ ব্যক্তি কিয়ামতের দিন তার অর্ধদেহ ধসা অবস্থায় উপস্থিত হবে।’’[৪০][৪১][৪২]
- জোর করে বিয়ে? ইসলামে জোরপূর্বক বিবাহকে নিষেধ করা হইয়েছে।[৪৩] কেননা ইসলামে বিবাহের চারটি শর্তের কথা বলা হইয়েছে তা হল, ১ পরস্পর বিবাহ বৈধ এমন পাত্র পাত্রী নির্বাচন করা। ২ পাত্র – পাত্রী উভয়ের সম্মতি নেয়া। ৩ মেয়ের ওলী থাকা। ৪ দুজন ন্যায়নিষ্ঠ সাক্ষী থাকা। বর্ণিত চারটি শর্তের কোনোএক শর্ত যদি মানা না হয় তবে বিয়ে শুদ্ধ হবেনা।[৪৪] আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) বলেন, বিবাহিতা মেয়েকে তার পরামর্শ ছাড়া বিবাহ দেয়া যাবে না এবং কুমারী মেয়েকে তার অনুমতি ছাড়া বিবাহ দেয়া যাবেনা। ছাহাবীগণ জানতে চান তার অনুমতি কিভাবে হবে? উত্তরে তিনি বললেন চুপ থাকাই হচ্ছে তার অনুমতি।[৪৫] অন্য আরেক হাদিসে বলা উল্লেখ আছে, যুবতী–কুমারী মেয়ের বিবাহের ব্যাপারে পিতাকে তার অনুমতি নিতে হবে, আর অনুমতি হচ্ছে চুপ থাকা।[৪৬] অন্যদিকে আইনের চোখে সম্মতি ছাড়া বা জোরপূর্বক বিবাহ একটি দন্ডনীয় অপরাধ। দন্ডবিধি, ১৮৬০ ধারা ৩৬৬: যে ব্যক্তি কোন নারীকে তার ইচ্ছার বিরু্দ্ধে – কোন ব্যক্তিকে বিয়ে করতে বাধ্য করা যেতে পারে এ রূপ অভিপ্রায়ে বা তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন ব্যক্তিকে বিয়ে করতে বাধ্য করার সম্ভাবনা রয়েছে জেনে কিংবা তাকে অবৈধ যৌন সহবাস করতে বাধ্য বা প্রলুব্ধ করার উদ্দেশ্যে অথবা তাকে অবৈধ যৌন সহবাস করতে বাধ্য বা প্রলুব্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে জেনে অপহরণ বা হরণ করে সে ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড এবং অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হবে। এবং যে ব্যক্তি কোন নারীকে এই বিধিতে বর্ণিত অপরাধমূলক ভীতিপ্রদর্শন বা ক্ষমতার অপব্যবহারের সাহায্যে বা বাধ্যবাধকতার অন্য কোন উপায়ে, অন্য কোন ব্যক্তির সাথে অবৈধ যৌন সহবাস করতে বাধ্য বা প্রলুব্ধ করা যেতে পারে এই উদ্দেশ্যে অথবা তাকে অন্য কোন ব্যক্তির সাথে অবৈধ যৌন সহবাস করতে বাধ্য বা প্রলুব্ধ করা যেতে পারে জেনে তাকে কোন স্থান হতে গমন করতে প্রলুব্ধ করে সে ব্যক্তিও একই দন্ডে দন্ডিত হবে।
অন্যদিকে সম্মতি ছাড়া বিয়ে হলে একজন নারী ১৯৩৯ সালের মুসলিম আইনের ২ ধারা অনুযায়ী বিবাহ বাতিল অনুযায়ী প্রতিকার পেতে পারে। এই আইনে মেয়েটির অধিকার সুরক্ষিত আছে। কোন নারীর ১৮ বছর পূর্ণ না হলে এবং তার সম্মতি ছাড়া বিয়ে হলে তিনি মুসলিম বিবাহ বাতিল আইন, ১৯৩৯ অনুযায়ী আদালতে বিয়ে বাতিলের আবেদন করতে পারেন তবে এক্ষেত্রে দুটি শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হবে-মেয়েটি যদি স্বামীর সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন না করে অর্থাৎ সহবাস না করে। মেয়েটির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর এবং ১৯ বছর পার হওয়ার আগে বিয়েকে অস্বীকার করতে হবে।
- পিতামাতার অনুমতি ছাড়া নির্ভরশীল মহিলাদের বিয়ে করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন মহিলা অপর মহিলাকে বিয়ে দেবে না। অনুরূপভাবে কোন মহিলা নিজেকেও বিয়ে দেবে না। যে মহিলা নিজেকে নিজে বিয়ে দেয়, সে ব্যভিচারে লিপ্ত।[৪৭] অর্থাৎ বিয়ের ব্যাপারে অবশ্যই অভিভাবকদের অনুমতি নিতে হবে। আল্লাহপাক বলেন, “আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীন-মুমিন নারীদেরকে বিবাহ করার সামর্থ্য রাখে না, সে (বিবাহ করবে) তোমাদের মুমিন যুবতীদের মধ্য থেকে, তোমাদের হাত যাদের মালিক হয়েছে তাদের কাউকে। আর আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। তোমরা একে অন্যের থেকে (এসেছ)। সুতরাং তোমরা তাদেরকে তাদের মালিকদের অনুমতিক্রমে বিবাহ কর এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও এমতাবস্থায় যে, তারা হবে সতী-সাধ্বী, ব্যভিচারিণী কিংবা গোপন যৌনসঙ্গী গ্রহণকারিণী নয়। অতঃপর যখন তারা বিবাহিত হবে তখন যদি ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের উপর স্বাধীন নারীর অর্ধেক আযাব হবে। এটা তাদের জন্য, তোমাদের মধ্যে যারা ব্যভিচারের ভয় করে এবং ধৈর্যধারণ করা তোমাদের জন্য উত্তম। আর আললাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”[৪৮]
- ডেটিং অনুমোদিত কি? আল্লাহপাক বলেন, “এবং তোমরা স্ত্রীলোকদের প্রস্তাব সম্বন্ধে পরোক্ষভাবে যা ব্যক্ত কর অথবা নিজেদের মনে গোপনে যা পোষণ কর তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই; আল্লাহ অবগত আছেন যে, তোমরা তাদের বিষয় আলোচনা করবে, কিন্তু গোপনভাবে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দান করনা, বরং বিহিতভাবে তাদের সাথে কথা বল; এবং নির্ধারিত সময় পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সংকল্প করনা; এবং এটিও জেনে রেখ যে, তোমাদের অন্তরে যা আছে আল্লাহ তা অবগত। অতএব তোমরা তাঁকে ভয় কর এবং জেনে রেখ যে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, সহিষ্ণু।”[৪৯]
- স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বাধ্যবাধকতা কি কি? আল্লাহপাক বলেন, “আর তোমরা নারীদেরকে সন্তুষ্টচিত্তে তাদের মোহর দিয়ে দাও, অতঃপর যদি তারা তোমাদের জন্য তা থেকে খুশি হয়ে কিছু ছাড় দেয়, তাহলে তোমরা তা সানন্দে তৃপ্তিসহকারে খাও।”[৫০] আল্লাহপাক বলেন, “পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত, তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে হিফাযাতকারিনী ঐ বিষয়ের যা আল্লাহ হিফাযাত করেছেনে। আর তোমরা যাদের অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, বিছানায় তাদেরকে ত্যাগ কর এবং তাদেরকে (মৃদু) প্রহার কর। এরপর যদি তারা তোমাদের আনুগত্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমুন্নত মহান।”[৫১]এই আয়াতে পুরুষদের কর্তৃত্ব ও দায়িত্বশীলতার দু’টি কারণ বলা হয়েছে। প্রথমটি হল, আল্লাহ প্রদত্তঃ যেমন, পুরুষোচিত শক্তি ও সাহস এবং মেধাগত যোগ্যতায় পুরুষ সৃষ্টিগতভাবেই নারীর তুলনায় অনেক বেশী। দ্বিতীয়টি হল সব-উপার্জিতঃ এই দায়িত্ব শরীয়ত পুরুষের উপর চাপিয়েছে। মহিলাদেরকে তাদের প্রাকৃতিক দুর্বলতার কারণে এবং তাদের সতীত্ব, শ্লীলতা এবং পবিত্রতার হিফাযতের জন্য ইসলাম বিশেষ করে তাদের জন্য অতীব জরুরী যে বিধি-বিধান প্রণয়ন করেছে সেই কারণেও উপার্জনের ঝামেলা থেকে তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মহিলাদের নেতৃত্ব দানের বিরুদ্ধে কুরআন কারীমের এটা এক অকাট্য দলীল। এর সমর্থন সহীহ বুখারীর সেই হাদীস দ্বারাও হয়, যাতে নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, ‘‘এমন জাতি কখনোও সফলকাম হবে না, যে জাতি তাদের নেতৃত্বের দায়িত্বভার কোন মহিলার উপর অর্পণ করবে।’’ স্ত্রী অবাধ্য হলে সর্বপ্রথম তাকে সদুপদেশ ও নসীহতের মাধ্যমে বুঝাতে হবে। দ্বিতীয়তঃ সাময়িকভাবে তার সংসর্গ থেকে পৃথক হতে হবে। বুদ্ধিমতী মহিলার জন্য এটা বড় সতর্কতার বিষয়। কিন্তু এতেও যদি সে না বুঝে, তাহলে হাল্কাভাবে প্রহার করার অনুমতি আছে। তবে এই প্রহার যেন হিংস্রতা ও অত্যাচারের পর্যায়ে না পৌঁছে; যেমন অনেক মূর্খ লোকের স্বভাব। মহান আল্লাহ এবং তাঁর রসূল (সাঃ) এই যুলমের অনুমতি কাউকে দেননি। ‘অতঃপর যদি তারা তোমাদের অনুগতা হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অন্য কোন পথ অন্বেষণ করো না’ অর্থাৎ, তাহলে আর মারধর করো না, তাদের উপর সংকীর্ণতা সৃষ্টি করো না অথবা তাদেরকে তালাক দিও না। অর্থাৎ, তালাক হল একেবারে শেষ ধাপ; যখন আর কোন উপায় থাকবে না, তখন তার প্রয়োগ হবে। কিন্তু বহু স্বামী তাদের এই অধিকারকে বড় অন্যায়ভাবে ব্যবহার করে থাকে। ফলে সামান্য ও তুচ্ছ কারণে তালাক দিয়ে নিজের, স্ত্রীর এবং সন্তানদের জীবন নষ্ট করে থাকে।
পূর্বের আয়াতাংশে যেমন স্ত্রীদের সংশোধনকল্পে পুরুষদেরকে তিনটি অধিকার দান করা হয়েছে, তেমনিভাবে আয়াতের শেষাংশে একথাও বলা হয়েছে যে, যদি এ তিনটি ব্যবস্থার ফলে তারা তোমাদের কথা মানতে আরম্ভ করে, তবে তোমরাও আর বাড়াবাড়ি করো না এবং দোষ খোঁজাখুঁজি করো না, বরং কিছু সহনশীলতা অবলম্বন কর। আর একথা খুব ভাল করে জেনে রেখো যে, আল্লাহ্ তা'আলা তোমাদেরকে নারীদের উপর তেমন কোন উচ্চ মর্যাদা দান করেননি। আল্লাহ তা'আলার মহত্ত্ব তোমাদের উপরও বিদ্যমান রয়েছে, তোমরা কোন রকম বাড়াবাড়ি করলে তার শাস্তি তোমাদেরকেও ভোগ করতে হবে। অর্থাৎ তোমরাও সহনশীলতার আশ্রয় নাও; সাধারণ কথায় কথায় দোষারোপের পন্থা খুঁজে বেড়িয়ো না। আর জেনে রেখো আল্লাহর কুদরত ও ক্ষমতা সবার উপরেই পরিব্যাপ্ত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন তার স্ত্রীকে চাকর-বাকরদের মত না মারে, পরে সে দিনের শেষে তার সাথে আবার সহবাস করল।[৫২]
আল্লাহপাক বলেন, “আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী এবং তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তাদের সচ্চরিত্রা নারীদের সাথে তোমাদের বিবাহ বৈধ। যখন তোমরা তাদেরকে মোহর দেবে, বিবাহকারী হিসেবে, প্রকাশ্য ব্যভিচারকারী বা গোপনপত্নী গ্রহণকারী হিসেবে নয়। আর যে ঈমানের সাথে কুফরী করবে, অবশ্যই তার আমল বরবাদ হবে এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।”[৫৩]
- বিয়ের জন্য সর্বনিম্ন বয়স কত? ইসলাম বালেগের কথা বলেছে। এর শুরুে ছেলেদের ইহতেলাম হওয়া আর মেয়েদের ঋতুস্রাব হওয়া। তবে ইসলাম যুবতি মেয়েকে বিবাহ করতে বলেছেন। আল্লাহপাক বলেন, “আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীন-মুমিন নারীদেরকে বিবাহ করার সামর্থ্য রাখে না, সে (বিবাহ করবে) তোমাদের মুমিন যুবতীদের মধ্য থেকে, তোমাদের হাত যাদের মালিক হয়েছে তাদের কাউকে।”[৫৪] “তারা তোমার কাছে নারীদের ব্যাপারে সমাধান চায়। বল, আল্লাহ তাদের ব্যাপারে তোমাদেরকে সমাধান দিচ্ছেন এবং সমাধান দিচ্ছে ঐ আয়াতসমূহ যা কিতাবে তোমাদেরকে পাঠ করে শুনানো হয় ইয়াতীম নারীদের ব্যাপারে। যাদেরকে তোমরা প্রদান কর না যা তাদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে, অথচ তোমরা তাদেরকে বিবাহ করতে আগ্রহী হও। আর দুর্বল শিশুদের ব্যাপারে ও ইয়াতীমদের প্রতি তোমাদের ইনসাফ প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে। আর তোমরা যে কোন ভালো কাজ কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে পরিজ্ঞাত।”[৫৫] “আর তোমরা ইয়াতীমদেরকে পরীক্ষা কর যতক্ষণ না তারা বিবাহের বয়সে পৌঁছে। সুতরাং যদি তোমরা তাদের মধ্যে বিবেকের পরিপক্কতা দেখতে পাও, তবে তাদের ধন-সম্পদ তাদেরকে দিয়ে দাও। আর তোমরা তাদের সম্পদ খেয়ো না অপচয় করে এবং তারা বড় হওয়ার আগে তাড়াহুড়া করে। আর যে ধনী সে যেন সংযত থাকে, আর যে দরিদ্র সে যেন ন্যায়সঙ্গতভাবে খায়। অতঃপর যখন তোমরা তাদের ধন-সম্পদ তাদের নিকট সোপর্দ করবে তখন তাদের উপর তোমরা সাক্ষী রাখবে। আর হিসাব গ্রহণকারী হিসেবে আল্লাহ যথেষ্ট।”[৫৬] অর্থাৎ শিশু যখন বালেগ এবং বিয়ের যোগ্য হয়ে যায়, তখন তার অভিজ্ঞতা ও বিষয়বুদ্ধি পরিমাপ করতে হবে। আল্লাহপাক বলেন, “আর নগরীতে মহিলারা বলাবলি করল, ‘আযীয পত্নী স্বীয় যুবককে কুপ্ররোচনা দিচ্ছে। (যুবকের প্রতি) গভীর প্রেম তাকে আসক্ত করে ফেলেছে, নিশ্চয় আমরা তাকে প্রকাশ্য ভ্রান্তিতে দেখতে পাচ্ছি’।[৫৭]
- ইতিমের অভিভাবক কে? আল্লাহপাক বলেন, “আর তোমরা ইয়াতীমদেরকে তাদের ধন-সম্পদ দিয়ে দাও এবং তোমরা অপবিত্র বস্ত্তকে পবিত্র বস্ত্ত দ্বারা পরিবর্তন করো না এবং তাদের ধন-সম্পদকে তোমাদের ধন-সম্পদের সাথে খেয়ো না। নিশ্চয় তা বড় পাপ।”[৫৮] ইয়াতিমের অভিভাবক প্রথমে মা হবেন। মা না থাকলে, দাদি, চাচি, নানি, খালা প্রমুখ।
- দত্তক শিশু কি বৈধ? আল্লাহপাক বলেন, “আর তিনি তোমাদের পোষ্যদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা। আর আল্লাহই সত্য কথা বলেন। আর তিনিই সঠিক পথ দেখান।” কোন মানুষের দুটি অন্ত:করণ থাকে না এবং যেমন স্ত্রীকে মা বলে সম্বোধন করলে সে প্রকৃত মা হয়ে যায় না; অনুরূপভাবে তোমাদের পোষ্য ছেলেও প্রকৃত ছেলেতে পরিণত হয় না। [দেখুন: মুয়াস্সার, সা’দী] অর্থাৎ, অন্যান্য সন্তানদের ন্যায় সে মীরাসেরও অংশীদার হবে না এবং বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন নিষিদ্ধ হওয়া সংশ্লিষ্ট মাসআলাসমূহও তার প্রতি প্রযোজ্য হবে না। সুতরাং সন্তানের তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী যেমন পিতার জন্য চিরতরে হারাম, কিন্তু পোষ্যপুত্রের স্ত্রী পালক পিতার তরে তেমনভাবে হারাম হবে না। তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃ-পরিচয়ে ডাক; আল্লাহর কাছে এটাই অধিক ইনসাফপূর্ণ। অতঃপর যদি তোমরা তাদের পিতৃ-পরিচয় না জান, তাহলে তারা তোমাদের দীনি ভাই এবং তোমাদের বন্ধু। আর এ বিষয়ে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন পাপ নেই; কিন্তু তোমাদের অন্তরে সংকল্প থাকলে (পাপ হবে)। আর আল্লাহ অধিক ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”[৫৯]
যেহেতু এই শেষোক্ত বিষয়ের প্রতিক্রিয়া বহু ক্ষেত্রে পড়ে থাকে; সুতরাং এ নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে যে, যখন পালক ছেলেকে ডাকবে বা তার উল্লেখ করবে, তখন তা তার প্রকৃত পিতার নামেই করবে। পালক পিতার পুত্র বলে সম্বোধন করবে না। কেননা, এর ফলে বিভিন্ন ব্যাপারে নানাবিধ সন্দেহ ও জটিলতা উদ্ভবের আশংকা রয়েছে। হাদীসে এসেছে, সাহাবায়ে কেরাম বলেন, এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে আমরা যায়েদ ইবনে হারেসাকে যায়েদ ইবন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে সম্বোধন করতাম।[৬০] কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে পালক ছেলেরূপে গ্ৰহণ করেছিলেন। এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর সাহাবারা এ অভ্যাস পরিত্যাগ করে। এ আয়াতটি নাযিল হবার পর কোন ব্যক্তির নিজের আসল বাপ ছাড়া অন্য কারো সাথে পিতৃ সম্পর্ক স্থাপন করাকে হারাম গণ্য করা হয়। হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি নিজেকে আপনি পিতা ছাড়া অন্য কারো পুত্র বলে দাবী করে, অথচ সে জানে ঐ ব্যক্তি তাঁর পিতা নয়, তার জন্য জান্নাত হারাম।”[৬১] অন্য হাদীসে এসেছে, “তোমরা তোমাদের পিতাদের সাথে সম্পর্কিত হওয়া থেকে বিমুখ হয়োনা, যে তার পিতা থেকে বিমুখ হয় সে কুফরী করল।’[৬২] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কোন মানুষ যখন না জেনে কোন নসব প্রমান করতে যায় বা অস্বীকার করতে যায় তখন সে কুফরী করে, যদিও তা সামান্য হোক।”[৬৩] শিশু সন্তানকে দত্তক বা পালক নিলে ইসলামী শরিয়তে তার কোনো বিধানই পরিবর্তন হবে না; বরং তার আগের অর্থাত, জন্মদাতা আসল মা-বাবা ও আত্মীয়পরিচয় এবং মা-বাবার অভিভাবকত্বের অধিকার যথারীতি অক্ষুন্ন থাকবে। এককথায়, পালক বা দত্তক দেয়া বা নেয়ার ফলে এই শিশু সন্তানের জন্মদাতা মা-বাবার অভিভাবকত্ব এবং উত্তরাধিকারে কোনো পরিবর্তন আসবে না। দত্তক নেয়ার বা দেয়ার আগের ও পরের বিধান সম্পূর্ণ অভিন্ন। এক্ষেত্রে সন্তান লালন-পালনকারী ব্যক্তির সওয়াব পাওয়াটাই মূখ্য এবং মৌলিক বিষয়।
- দাসীদের সাথে সহবাসে বিবাহ কি বাধ্যতামূলক? আল্লাহপাক বলেন,“আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস দাসীদের বিবাহ দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।”[৬৪] ইসলাম দাস প্রথার বিপক্ষে। তাই দাসি বলে কিছু নেই। কোনো দাসিকে বিবাহ ছাড়া সহবাস করলে তা ব্যভিচার হবে। যুদ্ধ হবে সে যুদ্ধের কারণে কাউকে অধিকারভুক্ত দাস-দাসী বানানোর অধিকার ইসলাম কাউকে দেয়নি। যদি কেউ এটা করতে চায় তবে সেটা হবে সম্পূর্ণ অবৈধ ও ব্যভিচার। এ ধরনের লোকদেরকে ব্যভিচারের শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
- দাসদের সাথে আমাদের কী করা উচিত? আল্লাহ বলেন, “আর আল্লাহ্ জীবনোপকরণে তোমাদের মধ্যে কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে তারা তাদের অধীনস্থ দাসদাসীদেরকে নিজেদের জীবনোপকরণ হতে এমন কিছু দেয় না যাতে ওরা এ বিষয়ে তাদের সমান হয়ে যায়। তবে কি তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ অস্বীকার করছে?[৬৫] আবু হুরাইরা বলেন, নবী মুহাম্মাদ বলেছেন: যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করবে, তার প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে আল্লাহ তার প্রতিটি অঙ্গকে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করবেন।২৩৫১[৬৬][৬৭] আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত, মুহাম্মাদ বলেন, তোমাদের কেউ যেন না বলে, তোমার প্রভুকে আহার করাও, তোমার প্রভুকে পান করাও। আর যেন অধিকার ভূক্তরা এরূপ না বলে, আমার মনিব, আমার অভিভাবক। তোমাদের কেউ যেন এরূপ না বলে, আমার দাস, আমার দাসী। বরং বলবে, আমার বালক, আমার বালিকা, আমার খাদিম।২৩৮৪[৬৬] ইবনে ওমর বলেন, আমি রাসূল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি তার ক্রীতদাসকে চড় মারল কিংবা প্রহার করল, তার কাফফারা তাঁকে মুক্ত করে দেয়া।"৪১৫৪[৬৮]
- বন্দীদের বিষয়ে আমাদের কী করা উচিত? আল্লাহপাক বলেন, وَيُطْعِمُونَ الطَّعَامَ عَلَى حُبِّهِ مِسْكِينًا وَيَتِيمًا وَأَسِيرًا - إِنَّمَا نُطْعِمُكُمْ لِوَجْهِ اللَّهِ لَا نُرِيدُ مِنْكُمْ جَزَاءً وَلَا شُكُورًا অর্থ “তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীকে খাদ্য দান করে। তারা বলে,‘আমরা তো আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদেরকে খাদ্য দান করি। আমরা তোমাদের থেকে কোন প্রতিদান চাই না এবং কোন শোকরও না। [৬৯] এ আয়াতে বন্দী বলতে কাফের হোক বা মুসলিম, যুদ্ধবন্দী হোক বা অপরাধের কারণে বন্দী হোক সব রকম বন্দীকে বুঝানো হয়েছে। বন্দী অবস্থায় তাদেরকে খাদ্য দেয়া, মুসলিম কিংবা অমুসলিম, সর্বাবস্থায় একজন অসহায় মানুষকে-যে তার খাবার সংগ্রহের জন্য নিজে কোন চেষ্টা করতে পারে না- খাবার দেয়া অতি বড় সওয়াবের কাজ।
- "মা মালাকাত আইমানুকুম" এর উপর ভিত্তি করে দাসীদের বিয়ে করা কি বাধ্যতামূলক? আল্লাহপাক বলেন, “আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীন-মুমিন নারীদেরকে বিবাহ করার সামর্থ্য রাখে না, সে (বিবাহ করবে) তোমাদের মুমিন যুবতীদের মধ্য থেকে, তোমাদের হাত যাদের মালিক হয়েছে তাদের কাউকে।”[৭০] আয়াতের অর্থ এই যে, যার স্বাধীন নারীদেরকে বিয়ে করার শক্তি-সামর্থ্য নেই কিংবা প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নেই, সে ঈমানদার দাসীদেরকে বিয়ে করতে পারে। এতে বোঝা গেল যে, যতটা সম্ভব স্বাধীন নারীকেই বিয়ে করা উচিত, দাসীকে বিয়ে না করাই বাঞ্ছনীয়। অগত্যা যদি দাসীকে বিয়ে করতেই হয়, তবে ঈমানদার দাসী খোঁজ করতে হবে। স্বাধীন ইয়াহুদী-নাসারা নারীদেরকে বিয়ে করা যদিও বৈধ, কিন্তু তা থেকে বেঁচে থাকা উত্তম। বর্তমান যুগে এর গুরুত্ব অত্যাধিক। কেননা, ইয়াহুদী ও নাসারা নারীরা আজকাল সাধারণতঃ স্বয়ং স্বামীকে ও স্বামীর সন্তানদেরকে স্বধর্মে আনার উদ্দেশ্যেই মুসলিমদেরকে বিয়ে করে।
বাইবেলে আছে, “কেননা তাহারা আমারই দাস, যাহাদিগকে আমি মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছি; তাহারা দাসের ন্যায় বিক্রীত হইবে না। তুমি তাহার উপরে কঠিন কর্তৃত্ব করিও না, কিন্তু আপন ঈশ্বরকে ভয় করিও। তোমাদের চতুর্দিকস্থ জাতিগণের মধ্য হইতে তোমরা দাস ও দাসী রাখিতে পারিবে; তাহাদের হইতেই তোমরা দাস ও দাসী ক্রয় করিও। আর তোমাদের মধ্যে প্রবাসী বিদেশীদের সন্তানগণের হইতে, এবং তোমাদের দেশে তাহাদের হইতে উৎপন্ন তাহাদের যে যে গোষ্ঠী তোমাদের সঙ্গে আছে, তাহাদের হইতেও ক্রয় করিও; তাহারা তোমাদের অধিকার হইবে।” “অন্য বংশীয় কোন লোক পবিত্র বস্তু ভোজন করিবে না; যাজকের গৃহপ্রবাসী কিম্বা বেতনজীবী কেহ পবিত্র বস্তু ভোজন করিবে না। কিন্তু যাজক নিজ রৌপ্য দিয়া যে কোন ব্যক্তিকে ক্রয় করে, সে তাহা ভোজন করিবে, এবং তাহার গৃহজাত লোকেরাও তাহার অন্ন ভোজন করিবে।”[৭১] “কিন্তু সে যদি দুই এক দিন বাঁচে, তবে তাহার মনিব দণ্ড ভোগ করিবে না, কেননা সে তাহার রৌপ্যস্বরূপ।”[৭২]
বিবাহ বিচ্ছেদ
সম্পাদনা- তাত্ক্ষণিক-তালাক কি অনুমোদিত?[৭৩]
- দাম্পত্যকলহ বা বিবাদ সম্পর্কে কি করতে হবে?[৭৪]
- "ইদ্রিবুন" বা প্রহার করো অর্থ কি সবসময় স্ত্রীদের "নির্যাতন" করা যায়?[৭৫]
- পতিতাবৃত্তি/অস্থায়ী বিয়ের কারণে কি মহিলাদের বের করে দেয়া যায়।?[৭৬]
- কিভাবে পতিতাবৃত্তি/অস্থায়ী বিবাহের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায়?[৭৭]
- তালাকের আগে কতদিন অন্তর্বর্তী সময় কার্যকর থাকে?[৭৮]
- বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আমাদের কতজন সাক্ষীর প্রয়োজন?[৭৯]
- দ্বিতীয় বিবাহ বিচ্ছেদের পর দম্পতিরা কি পুনরায় বিয়ে করতে পারে?[৮০]
- তালাকপ্রাপ্ত পিতামাতার সন্তানদের অর্থায়ন কে করবে এবং যত্ন কে নেবে?[৮১]
মৃত্যু এবং উত্তরাধিকার
সম্পাদনা- মৃত ব্যক্তিকে কবর দিতে হবে নাকি পোড়ানো হবে? [৮২]
- উত্তরাধিকারসূত্রে পুত্র ও কন্যার সর্বোচ্চ কতটুকু অংশ হতে পারে?[৮৩]
- উত্তরাধিকার সূত্রে ওয়ারিশ কে কে হতে পারে?[৮৪]
- উত্তরাধিকার ক্ষেত্রে ইচ্ছার স্বাধীনতা কতটুকু? [৮৫]
- উইল কি ভঙ্গ করতে পারে? [৮৬]
- অলিখিত উইল দিয়ে কি হবে? [৮৭]
- উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বাড়ি কী হবে? [৮৮]
বাণিজ্য আইন সীমা
সম্পাদনা- আর্থিক
সামাজিক বিচার
সম্পাদনামামলার সীমা
- ঋণ পদ্ধতি কীরূপ হবে? [৯২]
- আর্থিক সুদ চার্জ হতে পারে কি?
১ দাতব্য প্রাপকদের উপর।[৯৩] ২ দাতব্য প্রাপকের বাইরে?[৯৪] সর্বোচ্চ [৯৫] কেন[৯৬]
নিয়ন্ত্রিত পণ্য
সম্পাদনামামলার সীমা
ফৌজদারি আইনের সীমা
সম্পাদনাআদালতের বিচারপতি
অপরাধ
সম্পাদনামামলার শাস্তি
যৌন নির্যাতন
সম্পাদনারাজনৈতিক আইনের সীমা
সম্পাদনা- মানবাধিকার
- নরনারির সমঅধিকার আছে কী?[১২৪]
- বিচারের অধিকার আছে কি?[১২৫]
- সম্পত্তির অধিকার আছে কি? [১২৬]
- গোপনীয়তার অধিকার আছে কি? [১২৭]
- কেন আল্লাহর বিধান অপরিবর্তনীয়? [১২৮]
- উন্মুক্ত সরকার
- উন্মুক্ত সরকার আছে কি? [১২৯]
- কিভাবে পাবলিক নীতি নির্ধারণ হয়? [১৩০]
- নির্বাচন, গণভোট ও সংসদ আছে কি?[১৩১]
- মুক্ত সংবাদ, বিক্ষোভ এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণ আছে কি?[১৩২]
- কিভাবে প্রতিনিধি নির্বাচন করা যায়? [১৩৩]
- আমরা কি অন্যদের উপর আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি জোর করতে পারি?[১৩৪]
- শাসকের কি জনগণের কথা শোনা উচিত নাকি স্বৈরশাসক হওয়া উচিত? [১৩৫]
- আমাদের কি বিজয়ের সমাধান খোঁজা উচিত? [১৩৬]
- আমাদের কি গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তে আস্থা রাখা উচিত?[১৩৭]
আন্তর্জাতিক আইনের সীমা
সম্পাদনা- মিলিটারী সার্ভিস
- আমরা কি সামরিক চাকরিতে কাজ করব? [১৫০]
- একটি যুদ্ধ জয়ের জন্য সেনাবাহিনীর যুক্তিসঙ্গত সংখ্যা কত?[১৫১]
- সামরিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে কি? [১৫২]
- প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধ
- আমরা কি বিদেশী হানাদারের সাথে শান্তি স্থাপন করতে পারি? [১৫৩]
- বিদেশী সৈনিকের সাথে কি ব্যবহার করব? [১৫৪]
- ভাড়াটেদের সাথে কি ব্যবহার করব? [১৫৫]
- বিশ্বাসঘাতকদেরর সাতে কি করব?[১৫৬]
- ঠিকাদার, সরবরাহকারী, অর্থদাতা ইত্যাদির সাথে কী করব? [১৫৭]
- আক্রমণাত্মক যুদ্ধ
- আমরা কি গোপন যুদ্ধ করতে পারি? [১৫৮]
- আমরা কি অন্যদেশ জয় করতে পারি?[১৫৯]
- নিপীড়িতদের সাহায্য করার ক্ষেত্রে, তারা কি হিজরত করবে নাকি শাসক পরিবর্তন হবে?[১৬০]
- বিদেশে শান্তি কিভাবে রাখা যায়?[১৬১]
- কখন যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে? [১৬২]
- মরুভূমি দিয়ে কি করবেন?[১৬৩]
- বন্দীর সাথে কি করবেন?[১৬৪]
- যুদ্ধলব্ধ সম্পদ কী করবেন?[১৬৫]
- যুদ্ধ কৌশল
- যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য কি করতে হবে?[১৬৬]
- যুদ্ধে কি করতে হবে?[১৬৭]
- বিশ্বাসঘাতকদের সাথে কি করবেন?[১৬৮]
- হারানো সম্পদ কি করতে হবে?[১৬৯]
এই অধ্যায়ে ব্যবহৃত পরিভাষা সম্পর্কে আরও জানতে ইসলামের জীবন পদ্ধতি/শব্দকোষ #আইনি_সীমা সম্পর্কে দেখুন।
শেষ কথা
সম্পাদনাআপনি কি দুইটি মুসলিম দেশ বা প্রদেশকে জানেন যেখানে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে আলাদা আইন রয়েছে, যেমন মহিলাদের পোশাক-সংকেত বা মহিলাদের জন্য অনুমোদিত পেশা?
পার্থক্যের কারণ কি জানেন? উপরের রেফারেন্সগুলি ব্যবহার করে পার্থক্যগুলি এখনও আল্লাহর উচ্চ এবং নিম্ন আইনি সীমার মধ্যে রয়েছে কিনা তা তদন্ত করার চেষ্টা করুন?
অনুগ্রহ করে, আলোচনার পাতায় আপনার গল্প শেয়ার করুন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ কুরআন, ৪ঃ ১৩-১৪
- ↑ http://web.archive.org/web/20060210235322/http://web.amnesty.org/report2005/brn-summary-eng
- ↑ কুরআন, ৩ঃ ১০৪
- ↑ কুরআন, ৪২ঃ৩৮
- ↑ সুরা আরাফ, ২৬
- ↑ সূরা আহযাব: ৩৩
- ↑ সূরা আহযাব: ৫৩
- ↑ কুরআন, ২৪ঃ৩০
- ↑ দারুকুতনীঃ ৯০২
- ↑ তিরমিযী ২৭৯৬
- ↑ আবু দাউদঃ ৪০১৪
- ↑ লেভিটিকাস 18:22
- ↑ যাত্রা 32: 2-3; সংখ্যা 31:50; বিচারক 8:24; সলোমনের গান 1: 10-11
- ↑ বাইবেল, করথিস্থ-১, ১১ঃ ৫-৬
- ↑ 1 Timothy Chapter 2: Verse 9, 10, 11, 12, 13
- ↑ কুরআন, ২৪ঃ৩১
- ↑ কুরআন, ২৪ঃ৩১
- ↑ তিরমিযীঃ ২৭৭৮
- ↑ আবু দাউদঃ ৪১১২
- ↑ জেনেসিস ১৭ঃ১৪, অর্থডক্স ৪ঃ২৫
- ↑ কুরআন, ৪০ঃ৬৪
- ↑ Bible Lev 12:2-5
- ↑ কুরআন, ২ঃ২২২
- ↑ মুস্তাদরাকে হাকিম: ১/১৭১, ১৭২
- ↑ তিরমিযী: ১৩৭
- ↑ Bible Num 8:5-7, Lev 19:27, Lev 21:5, 2nd Sam 10:5
- ↑ কুরআন, ৪০ঃ৬৪
- ↑ কুরআন, ৩৩ঃ ৩৩
- ↑ সহীহ ইবন খুযাইমাহ: ১৬৮৫, সহীহ ইবন হিব্বান: ৫৫৯৯
- ↑ কুরআন, ২৪ঃ ৩২
- ↑ বুখারী/৫০৬৫
- ↑ কুরআন, ১৩ঃ ৩৮
- ↑ বুখারী হা/৫০৭৩
- ↑ নাসাঈ হা/৩২১৩
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ৩
- ↑ আহমাদ, বুখারী
- ↑ কুরআন, ৪ঃ২-৩, ১২৯
- ↑ ইবন মাজাহ: ১৯৫২, ১৯৫৩
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ১২৯
- ↑ আহমাদ ২/৩৪৭
- ↑ আসহাবে সুনান, হাকেম ২/১৮৬
- ↑ ইবনে হিব্বান ৪১৯৪নং
- ↑ সহি বুখারী, মুসলিম, মিশকাত শরিফের হাদিস /৩১২৬
- ↑ আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হাদিস ৩১৩১
- ↑ বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩১২৬
- ↑ মিশকাত, মুসলিম হা/৩১২৭
- ↑ ইবন মাজাহঃ ১৮৮২
- ↑ কুরআন, ৪ঃ২৫
- ↑ কুরআন, ২ঃ ২৩৫
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ৫
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ৩৪
- ↑ বুখারীঃ ৫২০৪
- ↑ কুরআন, ৫ঃ৫
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ২৫
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ১২৭
- ↑ কুরআন, ৪ঃ৬
- ↑ কুরআন, ১২ঃ ৩০
- ↑ কুরআন, ৪ঃ২
- ↑ কুরআন, ৩৩ঃ ৪-৫
- ↑ বুখারী: ৪৭৮২
- ↑ বুখারী: ৪৩২৬
- ↑ মুসলিম: ৬২
- ↑ ইবনে মাজাহ: ২৭88
- ↑ কুরআন, ২৪ঃ ৩২
- ↑ কুরআন, ১৬ঃ৭১
- ↑ ৬৬.০ ৬৬.১ সহীহ বোখারী শরীফ [১ম হইতে ১০ম খন্ড এক ভলিয়মে সমাপ্ত]। শায়খুল হাদিস মাওলানা মোহাম্মদ আজীজুল হক কর্তৃক অনূদিত। আলহাজ্ব মোঃ সোলায়মান চৌধুরী, একুশে বই মেলা। ২০০৬। পৃষ্ঠা ১১২০।
- ↑ এ সংক্রান্ত আরও হাদিস সমূহ হল সহীহ বোখারী ২৩৭৬, ২৩৫৩, ২৩৫৪, ২৩৫২
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;m-s
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ কুরআন,৭৬ঃ ৮-৯
- ↑ কুরআন,৪ঃ ২৫
- ↑ Bible Lev 25:42-46, Lev 22:10-11
- ↑ Bible Exod 21:32
- ↑ কুরআন,২ঃ ২২৬-২২৭, ৬৫ঃ১
- ↑ কুরআন,৪ঃ ১২৮, ৪ঃ৩৪-৩৫
- ↑ কুরআন,২ঃ ২৭৩, ৪৩ঃ ৫, ১৮ঃ ১১
- ↑ কুরআন,৬৫ঃ ১, ২ঃ ২২৯, ৩৩ঃ ৪৯, ৬০ঃ ১০
- ↑ কুরআন,২৪ঃ ৩৩, ৩০-৩১
- ↑ কুরআন, ২ঃ ২২৪, ৬৫ঃ ৪
- ↑ কুরআন, ৬৫ঃ ২
- ↑ কুরআন, ২ঃ ২৩০
- ↑ কুরআন, ২ঃ ২৩৩
- ↑ কুরআন, ৫ঃ ৩১, ২২ঃ ৭
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ১১-১৪
- ↑ কুরআন, ৪ঃ৭-৮, ৪ঃ ১৭৬
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ১১, ১২
- ↑ কুরআন, ২ঃ ১৮০-১৮১
- ↑ কুরআন, ৫ঃ ১০৬-১০৮
- ↑ কুরআন, ২ঃ ২৪০
- ↑ কুরআন, ১৮ঃ ১৯, ৯ঃ ৩৪
- ↑ কুরআন, ৭ঃ ৭৪, ১৩৭
- ↑ কুরআন, ৩৮ঃ ২২-২৪, ২১ঃ ৭৪
- ↑ কুরআন, ২ঃ ২৮২-২৮৩
- ↑ কুরআন, ৯ঃ ৬০, ২ঃ ২৮০, ২ঃ ২৭৮, ২ঃ ২৭৯
- ↑ কুরআন, ৩ঃ ১৩০, ৪ঃ ১৬১, ৩০ঃ ৩৯, ২ঃ ২৭৫-২৮৬
- ↑ কুরআন, ৩:১৩০
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ১৬১, ৩০ঃ ৩৯, ২ঃ ২৭৫-২৭৬
- ↑ কুরআন, ১৬ঃ ৬৭, ৪৭ঃ ১৫
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ৪৩, ২ঃ ২১৯, ৫ঃ ৯০-৯১
- ↑ কুরআন,৬৩ঃ ৯
- ↑ কুরআন, ৫ঃ ৪
- ↑ বাইবেল Deut 4:14-18
- ↑ কুরআন, ৩৪ঃ ১২-১৩
- ↑ কুরআন, ৫ঃ ৯৫-৯৭, ৫ঃ ১-২
- ↑ কুরআন, ৩০ঃ ৪১
- ↑ কুরআন, ১৭ঃ ৩৬, ৪৯ঃ ৬, ৫৩ঃ ৩৮, ২৪ঃ ৬১, ৪২ঃ ৪০-৪২
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ১৩৫, ২ঃ ২৮২, ৪৯ঃ ৬
- ↑ কুরআন, ২৪ঃ ২৭-২৯, ৪৯ঃ ১১-১৩
- ↑ কুরআন, ২২ঃ ৫, ৪ঃ ২৫
- ↑ কুরআন,১২ঃ ৩৬
- ↑ কুরআন, ৫ঃ৩৯, ১২ঃ ৭৩-৭৫, সর্বোচ্চ ৫ঃ ৩৮, ১২ঃ ৩১, ১২ঃ ৫০
- ↑ কুরআন,৫ঃ ৩৩
- ↑ কুরআন, ৫ঃ ৪৫
- ↑ কুরআন,১৭ঃ ৩৩
- ↑ কুরআন,৪ঃ ৯২
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ২৯-৩০
- ↑ কুরআন, ৬ঃ১৫১
- ↑ কুরআন, ১৭ঃ৩১, ৪৬ঃ ১৫, ৩১ঃ১৪
- ↑ বাইবেল দ্বিতীয় 22:20-24, লেভ 20:10
- ↑ কুরআন, ২৪ঃ২-৫
- ↑ কুরআন, ৪ঃ২৫
- ↑ কুরআন, ২৪ঃ ৪-৯
- ↑ কুরআন, ১২ঃ ২৫, ১২ঃ ৪২
- ↑ কুরআন, ৪:১৫-১৮
- ↑ কুরআন, ৪:৫৮, ৫ঃ ৮, ৪৯ঃ ১২
- ↑ কুরআন, ৪:১৪৮, ৫৩ঃ ৩৮, ২ঃ ২৮২, ৪২ঃ ৪৯
- ↑ কুরআন, ২৪:২৭-২৮, ২ঃ ১৮৮, ২৪ঃ ২৯
- ↑ কুরআন, ৪৯:১২
- ↑ কুরআন, ৩০: ৩০, ৩৫ঃ ৪৩, ৩৩ঃ ৬২, ৪৮ঃ ২৩
- ↑ কুরআন, ৫৮ :৯-১০, ৫৮ঃ ১১, ২ঃ ১৮৮, ৪৯ঃ ৬
- ↑ কুরআন, ৪২:৩৬-৩৮
- ↑ কুরআন, ৪২:৩৬-৩৮
- ↑ কুরআন, ৫৮:১১
- ↑ কুরআন, ৫:১২, ৩৭-১৪৭-১৪৮, ২২ঃ ৪০
- ↑ কুরআন, ২: ২৫৬
- ↑ কুরআন, ৯:৬১, ৩ঃ ১৫৯
- ↑ কুরআন, ২৪:৬২
- ↑ কুরআন, ২৪:৬৩
- ↑ কুরআন, ৫ঃ২
- ↑ কুরআন, ৬০ঃ ১২
- ↑ কুরআন, ২ঃ ১৮৮
- ↑ কুরআন, ৩১ঃ ১৯
- ↑ কুরআন, ৮ঃ ২৭, ৩ঃ ১৬১
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ১৩৭, ২ঃ ২৫৬, ১১০ঃ ৯৯, ৮৮ঃ ২১-২২
- ↑ বাইবেল লেভ 24:16, দ্বিতীয় 13:5, দ্বিতীয় 13:6-10
- ↑ কুরআন, ৬:১৫০-১৫১
- ↑ কুরআন, ২ঃ ৪১, ২ঃ ৭৯, ২ঃ ১৭৪, ৫ঃ ৪৪, ৯;৯, ৯ঃ৩৪
- ↑ বাইবেল মাল 3:8, Ps 110, জন 8:39, লেভ 27:30-33, লেভ 27: 3-7, লেভ 27:14-17, লেভ 27:26-28
- ↑ কুরআন, ১৩ঃ ১১, ৬ঃ ১২৩
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ৯৭
- ↑ কুরআন, ২ঃ ২১৬, ৮ঃ৬৫
- ↑ কুরআন, ৮ঃ ৬৫, ৩ঃ ১১২৪-১২৫
- ↑ কুরআন, ৮ঃ ৬০
- ↑ কুরআন, ২ঃ ১৯০-১৯১
- ↑ কুরআন, ২ঃ ১৯০-১৯১
- ↑ কুরআন, ৫ঃ ৪৫
- ↑ কুরআন, ৫:৩৩-৩৪
- ↑ কুরআন, ৮ঃ ৪২
- ↑ কুরআন, ২ঃ ২০৪-২০৫
- ↑ কুরআন, ৮ঃ ১৯
- ↑ কুরআন, ৪ঃ ৭৫, ৮ঃ ৭২
- ↑ কুরআন, ৯ঃ ১২, ৪ঃ ৯৪, ৪৯ঃ ৯-১০
- ↑ কুরআন, ৮:৬১-৬২
- ↑ কুরআন, ৮:১৫-১৬
- ↑ কুরআন, ৮:৬৭, ৮ঃ ৭০, ৪৭ঃ ৪-১৬
- ↑ কুরআন, ৮:১
- ↑ কুরআন, ৮:২৬, ৮ঃ ৬০, ৩৪ঃ ১১, ২১ঃ ৮০, ২৭ঃ ২২, ৯ঃ ৩৪, ৯ঃ ৪১
- ↑ কুরআন, ৮:৪২, ৬১ঃ ৪, ৪৭ঃ ৪, ৮ঃ ৪৬, ৩ঃ ১২১, ৮ঃ ১৫-১৬, ৮ঃ ৪৫
- ↑ কুরআন, ৮:৫৮
- ↑ কুরআন, ৮:৬৫, ৩ঃ ১৪০, ৩ঃ ১৬৫, ৩ঃ ১৪৪, ৩ঃ ১৫৮, ৩ঃ ১৬৯-১৭১, ৩ঃ ১৭৩, ৩৩ঃ ২২