উইকিশৈশব:অনুবাদ গল্প/নির্বোধ পাথুরিয়া
গল্প
সম্পাদনাএকদা এক পাথুরিয়া জীবন নিয়ে খুব অসুখী ছিল। একদিন এক বিত্তবান সওদাগর যাচ্ছিল। সে সওদাগরকে হিংসা করে ভাবল তার জীবনে কী আছে! সে ভাবল, "যদি আমি একজন সওদাগর হতে পারতাম!"
হঠাৎ করে সে সওদাগর হয়ে গেল! অন্য মানুষরা তাকে হিংসা করা শুরু করল, তারাও সওদাগরের মতো হতে চাইল। এই সময়ের দিকে একজন উচ্চ পদস্থ ব্যক্তি সেইদিক দিয়ে পালকি চড়ে যাচ্ছিল। তার আশেপাশে অনেক নিরাপত্তা কর্মী ছিল এবং মানুষ তাকে সম্মান করছিল। সওদাগরসহ সবাই তাকে নতজানু করল। এরপর সওদাগর ভাবল যে উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিটি বেশি শক্তিশালী, তাই এবার সে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হতে চাইল।
হঠাৎ করে সে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হয়ে গেল। তাকে পালকিতে নিয়ে যাওয়া হলো এবং মানুষ তাকে সম্মান করছিল। সময়টা গ্রীষ্মকাল হওয়ায় সে পালকিতে অনেক গরম বোধ করছিল। সে বুঝতে পারলো সূর্য তার থেকে বেশি শক্তিশালী। সে সূর্য হতে চাইল।
হঠাৎ করে সে সূর্য হয়ে গেল। সে সবার উপর উজ্জ্বল হয়ে জ্বলজ্বল করছিল। কিছু সময় পরে, একটা কালো মেঘ তাকে ঢেকে ফেলে। তখন সে ভাবলো মেঘ তার থেকে শক্তিশালী। সে মেঘ হতে চাইল।
হঠাৎ করে সে মেঘ হয়ে গেল। সে সব ক্ষেত বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছিল। দ্রুতই সে বুঝতে পারলো মেঘ বায়ুপ্রবাহ দ্বারা ভেসে যায়। বায়ুপ্রবাহকে বেশি শক্তিশালী ভেবে সে বায়ুপ্রবাহ হতে চাইল।
হঠাৎ করে সে বায়ু হয়ে গেল। সে সব জায়গায় ঝড় তৈরি করছিল, মেঘ সরাচ্ছিল, গাছের মূল উপড়ে ফেলছিল এবং ঘর ভেঙে ফেলছিল। কিন্তু একটি বড় পাথরকে বায়ুপ্রবাহ দিয়ে সরাতে না পেরে, সে ভাবল পাথরটা বেশি শক্তিশালী। সে পাথর হতে চাইল।
সে পাথর হয়ে ভাবল সে অনেক শক্তিশালী। তখন সে শুনল একটা হাতুড়ি তার শরীরে আঘাত করছে। সে দেখল অন্য একজন পাথুরিয়া তাকে ভাঙছে।
এই গল্প থেকে আমরা কী শিখলাম?
সম্পাদনামানুষ প্রায়শই অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করে। মানুষ এমন ব্যক্তিকে হিংসা করে যাকে তারা নিজেদের থেকে ভালো মনে করে। কিন্তু আসলে সবারই কিছু না কিছু দুর্বলতা আছে এবং সবারই কোনো না কোনো সবল দিক আছে। নিজেকে ছেড়ে অন্যের মতো হতে চাইলে নিজের গুণ তো সে হারাবেই, বাস্তবে সে কষ্ট ভোগ করবে অন্য কারো পিছে চিরকাল ছুটে। তাই যে অবস্থাতেই কেউ থাকুক তাতেই সবথেকে ভালোটা বের করে নিতে হয়।