মরিচ মসলার গুণ সম্পন্ন একটি ফল। মরিচের প্রথম উৎপত্তি হয় আমেরিকার মহাদেশগুলোতে। পরে এখান থেকে এই মসলাটি ব্যবসায়ীদের হাত ধরে সারা বিশ্ব ছড়িয়ে পড়ে। খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়াও পূর্বে এটি ওষুধেও ব্যবহৃত হত।

নির্দেশনা সম্পাদনা

তোমার সমস্ত সরঞ্জাম আর মরিচের বীজ প্রস্তুত থাকায় বীজ রোপণ ও চারা গজানোর তো এটাই সময়!

 
মরিচের একটি বীজ।

প্রথম ধাপ সম্পাদনা

যে বীজগুলো তুমি রোপণ করতে চাও তোমাকে প্রথমে মরিচ থেকে সেগুলো আলাদা করার পর গুনে দেখতে হবে। মরিচের বীজ ছোট হলেও বীজের নিরাপত্তার জন্য সেগুলো হাত দিয়েই তাদের আলাদা করা উচিৎ। মরিচ যেহেতু তীব্র প্রদাহের সৃষ্টি করে তাই এসময় হাতে দস্তানা পরতে পার অথবা পাতলা পলিথিন মুড়ে নিতে পার।


 
টবের পুরোটা মাটি দিয়ে পূরণ না করে উপর থেকে কিছুটা ফাঁকা রাখতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপ সম্পাদনা

এরপর টবে মাটি দিতে হবে। এ কাজটি হাত দিয়ে অথবা একটি কাপ বা ছোট বেলচা দিয়েও করা যায়। কাজটি নিশ্চয়ই নোংরা তাই এটি ঘরের বাইরেই করা ভাল। এটা সিঙ্কের উপরে না করাই ভাল কারণ এতে মাটি জমে গিয়ে সিঙ্কের পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। টবে গুঁড়ো করা মাটি ঢালার সময় এর পুরোটা মাটি দিয়ে ভরাট না করে উপর থেকে কিছুটা ফাঁকা রাখতে হবে। মাটি কিছুটা শক্ত করতে হালকা চাপ দিতে হবে তবে বেশি চাপ দেওয়া যাবে না, এতে করে মাটি খুব শক্ত হয়ে যাবে।


 
গর্তগুলো গভীরতা মোটামুটি ১/৪ ইঞ্চি পরিমাণ হতে হবে।

তৃতীয় ধাপ সম্পাদনা

এরপর আঙুল বা কাঠি দিয়ে অথবা অন্য কোনভাবে একটি ছোট গর্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে ট্রান্সপ্লান্টার জাতীয় সরঞ্জাম ভাল কাজ করে। যাই হোক গর্তটি পরিমাপ করে দেখতে হবে যাতে এটি মাটির উপর থেকে ১/৪ ইঞ্চি গভীরে হয়। এর অধিক বা কম গভীরতা বীজ গজাতে বাধার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।


 
বীজগুলো মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

চতুর্থ ধাপ সম্পাদনা

একটি গর্তে কেবল একটি বীজ ফেলতে হবে। এরপর এক চিমটি পরিমাণ মাটি দিয়ে গর্তটি ভরাট করে দিতে হবে। মাটির উপর পুনরায় আগের মতই হালকা চাপ দিতে হবে।


 
বীজগুলো পিপাসার্ত! তাই হালকা পানি দিতে হবে।

পঞ্চম ধাপ সম্পাদনা

এরপর টবের উপর কিছুটা পানি হালকাভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে।


এরপর যা করতে হবে সম্পাদনা

বীজগুলোতে প্রতিদিন পানি দেওয়া হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। বীজে জল দেওয়া হয়েছে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চিয়তা থাকলে "ললিপপ স্টিক পরীক্ষার" মাধ্যমে মাটি পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। মাটি থেকে অঙ্কুর বের হতে সাধারণত ১৬-২০ দিন সময় নেয়। অঙ্কুর বের হওয়ার পর এটি পর্যাপ্ত সূর্যালোক পাচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।

যদি তুমি ছোট টবে বা ঘরের ভিতরে এই বীজগুলো গজিয়ে থাক তবে গাছের শিকড়গুলোর বৃদ্ধির জন্য একে বড় একটি টব পাত্রে স্থানান্তর করতে হবে। চারাগুলো স্থানান্তরের ক্ষেত্রে এগুলোকে পরস্পর থেকে কমপক্ষে ১৮ ইঞ্চি দূরত্বে লাগাতে হবে যাতে করে মরিচ গাছগুলো তাদের বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে জায়গা পায়।


কি পরিমাণ আলো দিতে হবে এবং চারা কখন বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে? সম্পাদনা

 
মরিচের গাছ প্রচুর পরিমাণ সূর্যালোক পছন্দ করে।

মরিচ গাছ প্রচুর পরিমাণ সূর্যালোক পেতে ভালবাসে, তাই এটা নিশ্চিত করতে হবে যে এগুলো দিনে ১ট ঘন্টা সূর্যালোক পাচ্ছে কিনা। মরিচ গাছ যদি ঘরের ভিতরে জন্মানোর চেষ্টা করা হয় তাহলে ঘরের বাইরে এটি সরাসরিভাবে যে পরিমাণ সূর্যালোক পায় ঘরের ভিতরে তার চেয়েও অধিক সময় যাবৎ আলো দিত হবে। ঘরের বাইরে মরিচ গাছ চাষের ক্ষেত্রে গ্রো লাইটের মাধ্যমে কৃত্রিম আলো দেওয়া হলে তা প্রায় ১৮ ঘণ্টা যাবৎ দিতে হতে পারে।

বেশিরভাগ গাছপালা রোপণ বসন্ত মৌসুমে ভাল হয়। অথবা বছরের যে সময় দিনের দৈর্ঘ্য বাড়তে থাকে এবং তাপমাত্রা উষ্ণ হতে থাকে তখনও এদের বৃদ্ধি ভাল হয়। বসন্তের আগমন পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বছরের বিভিন্ন সময়ে ঘটে। অস্ট্রেলিয়ায় বসন্ত শুরু হয় সেপ্টেম্বরের শুরুতে, আর যুক্তরাষ্ট্রে বসন্ত শুরু হয় মার্চের শেষে। শীত প্রধান দেশে মরিচের বীজ রাতের বেলা ঘরের বাইরে না বের করলেই ভাল হবে। কারণ শীতের দরুন তুষারপাত চারার বৃদ্ধি ব্যাহত করতে পারে।