পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত চারটি প্রাচীন সভ্যতার একটি হওয়া সত্ত্বেও অন্যান্য সভ্যতার চেয়ে এটির অগ্রগতি ছিলো অনেক কম। বিশ্বসভ্যতার উন্নয়নে চীনা সভ্যতার অগণিত অবদান রয়েছে। কম্পাস, কাগজ, গান পাউডার, সিল্ক, নুডলস, চীনামাটির বাসন, কাগজের টাকা এবং আরও নানান জিনিস যা আমরা প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহার করি, এসব চীনা সভ্যতার অবদান। এছাড়াও এই সভ্যতায় বেশকিছু স্থাপত্যশৈলীর কাজও হয়েছে। চীনের মহাপ্রাচীর এর মাঝে অন্যতম।

সবচেয়ে বিখ্যাত চারটি সভ্যতার মাঝে একমাত্র চীনা সভ্যতায় এর ইতিহাসের পাঁচ হাজার বছর বেঁচে ছিলো। আধুনিক যুগ পর্যন্ত টিকে থাকা অল্পকিছু সভ্যতার মাঝে এটি একটি সভ্যতা। সাধারণভাবে চীনা সভ্যতা চারটি সময়ে বিভক্ত (প্রাগৈতিহাসিক এবং শাং, হান সাম্রাজ্য, কিং [মাঞ্চু] সাম্রাজ্য এবং আধুনিক কাল)। চীনারা তাদের জীবনপ্রণালী বিস্তারিতভাবে সংরক্ষণ করে রাখায় তাদের ব্যাপারে খুব সামান্যই অজানা রয়েছে। চীনা সভ্যতার প্রভাব এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলসমূহেও পড়েছিল। জাপান, কোরিয়া, মঙ্গোলিয়া এবং ভিয়েতনাম অঞ্চলে এই প্রভাব ছিলো সবচেয়ে বেশি। বর্তমান চীনা সংস্কৃতি এখনও এই অবিরাম বিবর্তন দ্বারাই চিহ্নিত করা হয়। তবে চীন এখন বৈশ্বিক মানব সভ্যতার অংশ।

তারা কোথায় বাস করে?

সম্পাদনা
 

প্রাচীন চীনের ভৌগলিক অবস্থা ভূবিজ্ঞানীগণ তিন ধাপের একটি ব্যবস্থা দ্বারা বর্ণনা করেন। প্রথম ধাপটি হলো পশ্চিমাঞ্চল যেটি বর্তমানের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল (সংক্ষেপে তিব্বত বা শিজাং)। পৃথিবীর সবচেয়ে উচু পর্বতটি রয়েছে এখানেই। তাই তাপমাত্রা এখানে বেশ কম, তবে গ্রীষ্মকালে বেশ উষ্ণ। এই অঞ্চলে বসবাস করা বেশ কঠিন। শীতকালে এখানে তাপমাত্রা -৪০° সেলসিয়াস এবং গ্রীষ্মকালে ৩৭° সেলসিয়াস। এই প্রতিকূলতার কারণে এখানে খুব বেশী গ্রাম এবং যেগুলো রয়েছে সেগুলোও ছোট ছোট।

পরের ধাপটি হলো চীনের মধ্যভাগ। এই এলাকার অধিকাংশই মরুভূমি, সামান্য অঞ্চল সবুজ ভূমি। এখানের লোকেরা চমরি গাই পালন করে। কিছু নিচু পাহাড় রয়েছে, কিন্তু বরফ নেই। ঠান্ডা শীতকাল এবং গরম গ্রীষ্মকালের এই অঞ্চলে কখোনোই অনেক লোকের বসবাস ছিলো না।

প্রাচীন চীনের অধিকাংশ লোক থাকতো পূর্ব চীনে। এই এলাকা দিয়ে তিনটি নদী বয়ে গিয়েছে: উত্তরে হুয়াং হে, মাঝে চাং জিয়াং এবং দক্ষিণে সিকিয়াং। এখানের মূল নদীটি হুয়াং হে যেটি পশ্চিমা বিশ্বে ইয়োলো রিভার নামে সমাধিক পরিচিত। এর কারণটি হলো এই নদীর পানি এবং মাটি হলুদ রঙের। কৃষি কাজের জন্য এখানে প্রচুর পানি ছিলো। উত্তরাঞ্চলে গম প্রধান খাবার ছিলো এবং দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলে ভাত ছিলো প্রধান খাবার।

তাদের ভবনগুলো দেখতে কেমন?

সম্পাদনা
 
City wall of Xi'an is the best preserved city wall in China.

কাঠ দ্বারা নির্মিত হওয়ায় প্রাচীন চীনের অধিকাংশ ভবনই টিকে থাকেনি। সামান্য কিছু সংখ্যাক ভবন পাথর দ্বারা নির্মান করা হয়েছিলো। তবে চীং ও বেইজিং-এর ফরবিডেন প্যালেস বা নিষিদ্ধ প্রাসাদগুলো এখনও টিকে রয়েছে। অনেক পর্যটক প্রতিদিন এইসব প্রাসাদে ভ্রমণে যান। দ্য টেম্পল অব হ্যাভেন বা টিয়ান তান একটি বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান। পাখির পাখনার সদৃশ হিসেবে চীনের স্থাপত্যগুলো বাকানো ছাদের। ছাদের রং-ও বেশ গুরুত্ব বহন করে। নীল রং ধর্মীয় ভবনের জন্য বরাদ্দ ছিলো। কমলা/হলুদ রং ছিলো রাজকীয় ভবনের জন্য।

তারা কী খাবার খেতো?

সম্পাদনা

চীনের উত্তরাঞ্চলের লোকেরা গম এবং দক্ষিণাঞ্চলের লোকেরা ভাত খেতো। খাওয়ার জন্য তারা চপস্টিক ব্যবহার করতো যেটি এখনও এশিয়ায় অনেক অঞ্চলে করা হয়। তাদের অনেকে নুডলস খেতো। শুকরের মাংস তাদের প্রধান খাবার-মাংস ছিলো। তারা লেবু, কমলা, জাম, আদার মতো ফলও চাষ করতো।

তারা কী পোশাক পরিধান করতো?

সম্পাদনা

প্রাচীন চীনে ধনী ব্যক্তিরা সিল্কের কাপড় এবং সাধারণ ব্যক্তিরা সূতির কাপড় পরিধান করতো। রাজকীয় ব্যক্তিরা হলুদ/সোনালী রঙের পোশাক পরিধান করতো। সম্রাটের পোশাকে ড্রাগনের ছবি লাগানো থাকতো এবং সোনা লাগানো থাকতো। লাল রং জনপ্রিয় ব্যক্তি বা আনন্দ বোঝাতো এবং প্রধানত ছুটির দিনে পরিধান করা হতো।

তারা হানফু হিসেবে পরিচিত একধরনের পোশাক পরিধান করতো। হানফু সাধারণের পরিধেয় সরল রূপ থেকে শুরু করে বিচারক ব্যক্তিবর্গের পরিধেয় বিজ্ঞ রূপ এবং ধনী ব্যক্তিদের পরিধেয় বিস্তৃত রূপের ছিলো।

হানফু অনেকটা জাপানি ইউকাতা/কিমোনো, কোরীয় হানবক এবং ভিয়েতনামী আও তু দান এর মিশ্রণ এবং উত্তরসূরী।

১৭শ শতাব্দীতে মাঞ্চুরীয় যাযাবররা মিং রাজবংশে আক্রমণ করে এবং কিং রাজবংশ গড়ে তোলে। তারা সবাইকে মাঞ্চুরীয় পোশাক পরিধানের আদেশ দেয়। মাঞ্চুরীয় পোশাক বর্তমানে চেংসাম নামে পরিচিত। পুরুষদের পোশাক চেংশান এবং মহিলাদের পোশাক কিপাও নামেও এটি পরিচিত।

তাদের লেখা দেখতে কেমন ছিলো?

সম্পাদনা
 
Replica of ancient Chinese script on an oracle turtle shell
 
সরলিকৃত চীনা (বামে)-এর পাশে ঐতিহ্যবাহী চীনা (ডানে)

এখনকার মতোই চীনাদের প্রাচীন লিখন পদ্ধতিও ছিলো অক্ষরভিত্তিক। ঐতিহ্যবাহী চীনা লেখা কার্সিভ, সেমি-কার্সিভ, ওয়াইল্ড কার্সিভ, ক্লেরিক্যাল, সীল ইত্যাদি ধরণের। বর্তমানে চীনের প্রধান অঞ্চলসমূহে সরলীকৃত চীনা অক্ষর ব্যবহার করা হয়। এই সরলীকৃত অক্ষরগুলো সাক্ষরতার হার বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রচলিত হয়েছিলো কিন্তু অনেক ইতিহাসবিদ এর সমালোচনা করেছেন।

তাইওয়ান, হং কং এবং ম্যাকাও এখনও ঐতিহ্যবাহী চীনা অক্ষর ব্যবহার করে।

তারা কী বিশ্বাস করতো?

সম্পাদনা

ব্রোঞ্জ যুগে অধিকাংশ চীনারা অনেক ঈশ্বর এবং আত্মার উপাসনা করতো। টি অথবা টাই এদের মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। চীনারা বিশ্বাস করতো যারা টাই তাদের উপাসকদের সাহায্য করে এবং যারা তার উপাসনা করে না টাই তাদের শাস্তি প্রদান করে। সকল দেব-দেবতার দায়িত্বে ছিলো টাই। সকল দেব-দেবী প্রাকৃতিক কিছুর প্রতিনিধিত্ব করতো, যেমন "মাটির দেবতা"। পুরোহিতগণ ঈশ্বর এবং তাদের উপাসকগণের মাঝে সেতু হিসেবে কাজ করতেন।

ব্রোঞ্জ যুগের পরে চীনা ধর্মে তিনটি বিশ্বাস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিশ্বাস তিনটিকে দর্শনও বলা যেতে পারে কিন্তু তাদের আধ্যাত্মিক উপাদান থাকায় তাদের ধর্মের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চীনে স্থানীয়ভাবে তাওবাদ এবং কনফুসীয়বাদ গড়ে ওঠে। তৃতীয় বিশ্বাস হলো বুদ্ধ ধর্মবিশ্বাস যেটি ভারতীয় সন্ন্যাসীগণ চীনে নিয়ে যান।

চৌউ রাজবংশ (জৌউ রাজবংশের অংশ) দুর্নীতির কারণে যখন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিলো, কনফুসিয়াস ছিলো সেই সময়ের একজন ব্যক্তি। একজন সরকারী কর্মকর্তা হওয়ায় তিনি এই দুর্নীতি খুব কাছে থেকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। কনফুসিয়াস বিশ্বাস করতো চীনারা তাদের ঐতিহ্য এবং পুরোনো সম্মান, শিষ্টাচার, নৈতিকতা এবং সামাজিক নিয়ম বিশ্বাস পরিত্যাগ এই অবক্ষয়ের প্রধান কারণ। এটিই কনফুসীয়বাদের মূল ভিত্তি।

কনফুসীয়বাদ চীনা সংস্কৃতির বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পরে। কনফুসিয়ানের দেওয়া শিক্ষাগুলো চীনা শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে গৃহীত হয়। তার লেখনীগুলো এখনও চীনা শিশুরা পড়ে থাকে।

তাওবাদের মূল ভিত্তি ছিলো তাও-এর বিশ্বাস। তাও-এর শাব্দিক অর্থ "পথ" বা "উপায়"। তাও-এর কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। এটি দ্বারা প্রকৃতির বিশাল সংখ্যক জিনিসকে বোঝায় এবং সকল কিছুর উৎস এটি।

তাওবাদ অনুসারীদের তাও অনুসরণ করতে বলে। এর অর্থ প্রকৃতিকে পরিবর্তনের চেষ্টা করা যাবে না এবং এমন কাজ করা যাবে না যা হওয়ার কথা না। অনুসারীদের অবশ্যই নিষ্ক্রিয় থাকতে হবে এবং কোনো পরিকল্পনা করা যাবে না। তারা তাও-এর বিপরীত কিছু করবে না যেমন ভবন নির্মান বা নদী খনন করবে না। তাওবাদীগণ শিক্ষিত ধনী পরিবারের ছিলেন। অল্পসংখ্যক সাধারণ লোক এটি জেনেছিলো এবং তারা এটিকে বিশুদ্ধ তাওবাদের পরিবর্তে জাদু এবং আলকেমিতে রূপান্তর করে ফেলেছিল।

সিদ্ধার্থ গৌতম আনুমানিক ৫০০ খৃষ্টপূর্বাব্দে বুদ্ধ ধর্ম প্রতিষ্টা করেন। তাই তাকে "বুদ্ধ" বা "আলোকিত" বলা হয়। সিল্ক রোড দিয়ে বৌদ্ধ ধর্ম চীনে পৌছায়। যখন প্রথম চীনে বুদ্ধ ধর্ম পৌছায় তখন তাওবাদ এবং এটির মাঝে মিল দেখে একে তাওবাদের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়েছিলো। তবে ভারত থেকে চীনে যাওয়া সন্ন্যাসীগণ বুদ্ধ ধর্মকে তাওবাদ থেকে পৃথক করে রাখেন। বৌদ্ধ ধর্ম নিজের পছন্দ এবং ইচ্ছা ত্যাগের শিক্ষা দেয়। ধ্যান এবং সঠিক জীবন পরিচালনার মাধ্যমে একজন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নির্ভানা বা দুঃখ-দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে পারে। এই বিশ্বাসের সাথে তাওবাদের মিল পরিলক্ষিত হয়।

এই ধর্ম তিনটি নিজেদের মাঝে বিরোধিতা করতো না; যদিও তারা মিলও প্রদর্শন করতো না। অনেক ব্যক্তিই একাধিক ধর্মাবলম্বী ছিলেন। আবার তিনটি ধর্মই পরস্পরকে প্রভাবিত করেছিলো।

তাদের ইতিহাস কী?

সম্পাদনা

শাং রাজবংশের শাসনের মধ্য দিয়ে চীনা সভ্যতার সূচনা হয়। তারা কিছু শহরাঞ্চল শাসন করতো। ১৭৬৬ - ১০১২ খৃষ্টপূর্বাব্দ তারা শাসন করেছিলো। তারা প্রধানত বর্তমান চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ছিলো। অন্যান্য অঞ্চলে অন্যান্য উপজাতিরা বাস করতো এবং শাং-রা তাদের কাছে পৌছাতে পারেনি। ১০২৭ খৃষ্টপূর্বাব্দে শাং এর স্থানে চৌ রাজবংশ আসে এবং তারা ৪০০ বছরব্যাপী শাসন করে। তারা তাদের রাজ্য দক্ষিণে মধ্যচীনের দিকে বিস্তৃত করে। ৭৭২ খৃষ্টপূর্বাব্দে বারবারীয়রা রাজধানী হাও ধ্বংস করে দিলে লুওইয়াং-এ নতুন রাজধানী গঠন করা হয়। কিন্তু চৌ-রা আর আগের মতো ক্ষমতাশালী হতে পারেনি। ৭৭২ - ৪৮১ খৃষ্টপূর্বাব্দ সময়ে অঞ্চলটি অনেকগুলো ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যায় এবং অঞ্চল প্রধান দ্বারা শাসিত হয়। আনুমানিক ৫০০ খৃষ্টপূর্বাব্দে শত শত গ্রাম ২০টি রাজ্যে রূপ নেয়। যুদ্ধ শেষ করে এসময় শান্তির ডাক দেওয়া হয়। তবে ৪৮১ খৃষ্টপূর্বাব্দে আবার যুদ্ধ ফিরে আসে। ২২১ খৃষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত এ অবস্থা চলমান থাকে। এ সময়কালকে "The Warring States" হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই সময়ের পরে সাতটি বড় রাজ্য ছিলো। ২৩০ খৃষ্টপূর্বাব্দ থেকে শুরু করে কিন (Qin) রাজ্য অন্য রাজ্যদের জয় করতে শুরু করে। রাজকুমার চেং নিজের নাম শি হুয়াংদি রাখেন। তিনিই চীনের প্রথম সম্রাট৷

তাদের কেউ কি বিখ্যাত?

সম্পাদনা

কনফুসিয়াস বিশ্বব্যাপী একজন জ্ঞানী হিসেবে পরিচিত। তিনি সম্পূর্ণ একটি দর্শনের বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন৷ তার অনুসারী মেনসিয়াসও আজও পরিচিত। এছাড়াও আরও অনেক ব্যক্তি এখনও পরিচিত: চীনা প্রধান ৫টি ক্লাসিকের একটি দাওদ জিং-এর লেখক লাওজু, "বিং ফা" বা "আর্ট অব ওয়ার" বইয়ের লেখক সান জু, প্রথম চীনা ইতিহাসবিদ সিমা কিয়ান প্রভৃতি।

রাজনৈতিকভাবে দুজন ব্যক্তিই বেশ পরিচিত৷ প্রথম সম্রাট এবং চীনের মহা প্রাচীরের প্রথম গঠনকারী কিন শি হুয়াং। তার প্রকৃত নাম হলো ইং জেং৷ তিনি অবশিষ্ট চীনা রাজ্যগুলো জয় করেন এবং সমস্ত অঞ্চল করায়ত্ব করেন। প্রায় ৬০ বছর পরে হানের সম্রাট উ (হান উদি) ক্ষমতায় এসে সাম্রাজ্যের রাষ্ট্রগুলোর মূল ভিত্তি হিসেবে কনফুসীয়বাদের শুরু করেন।

চেং হো আরেকজন বিখ্যাত ব্যক্তি যিনি ১৪০৫ সালে একটি বিশাল জাহাজে করে বিশ্বভ্রমণ করেছিলেন। চেং হো ভারত, পারস্য উপসাগর, মিশর এবং সম্ভবত আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলও ভ্রমণ করেছিলেন।