উইকিশৈশব:বাংলাদেশের জাতিগোষ্ঠী/ভূমিকা
বাংলাদেশ ভূখন্ডের জনসংখ্যার অধিকাংশ হচ্ছে আদিবাসী বাঙালি, এছাড়া অনেক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে যারা অনেকে আদিবাসী বলেও নিজেদের উল্লেখ করে থাকে । বাংলাদেশের উপজাতিরা ভারত,তিব্বত,চীন ও মায়ানমার থেকে আগত।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনগোষ্ঠির সংখ্যা ১৫ লক্ষ ৮৭ হাজার প্রায় ; সমগ্র জনগোষ্ঠির প্রায় এক শতাংশের মতো (১.১১%) । বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সিংহভাগ পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহ , সিলেট ও রাজশাহী অঞ্চলে বসবাস করে । বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হল চাকমা। এছাড়া রয়েছে গারো, ত্রিপুরা, সাঁওতাল ইত্যাদি।
বাঙালি
সম্পাদনাবাংলাদেশের প্রধান আদিবাসী হলো হাজার বছর ধরে এই ভূখণ্ডে বাস করা বাঙালি জাতিগোষ্ঠী। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতে (মূলত পশ্চিমবঙ্গে) অনেক বাঙালি বসবাস করে। বাঙালি জাতি কয়েকটি উপভাগে বিভক্ত। বাংলাদেশে বাঙালিরা প্রধানত ঢাকাইয়া, সিলেটি , চাঁটগাইয়া, নোয়াখালিয়া, বরিশালিয়া, রংপুরি ইত্যাদি কয়েকভাগে বিভক্ত।...
উপজাতি সম্প্রদায়সমূহ
সম্পাদনানৃগোষ্ঠী বিবিএস ১৯৮৪ সালের রিপোর্টে ২৪টি নৃ-তাত্ত্বিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী এবং মোট জনসংখ্যা ৮,৯৭,৮২৮ জন বলা হয়েছে । উপজাতিগুলো হলো সাঁওতাল , ওঁরাও , পাহাড়িয়া , মুন্ডা, রাজবংশী, কোচ, খাসিয়া, মনিপুরী, ত্রিপুরা, পাংখো, গারো, হাজং, মারমা , চাকমা,তঞ্চঙ্গ্যা, চাক, সেন্দুজ, ম্রো, খিয়াং, বম (বনজোগী), খুমি, লুসাই (মিজো)।
পক্ষান্তরে ১৯৯১ সালের রিপোর্টে ২৯টি নৃ তাত্ত্বিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী মোট ১২,০৫,৯৭৮ জন মানুষের অস্তিত্ব স্বীকার করা হয়েছে। নৃ তাত্ত্বিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীগুলো হলো বংশী, বম, বুনা, চক (চাক), চাকমা, কোচ, গারো, হাজং, হরিজন, খাসিয়া, খিয়াং, খুমি, লুসাই, মাহাতো, মারমা, মণিপুরী, মুন্ডা, মুরুং, ম্রো, পাহাড়ি, পাংখো, রাজবংশী, রাখাইন, সাঁওতাল, তঞ্চঙ্গ্যা, টিপরা, ত্রিপুরা, ওঁরাও, উরুয়া।
লক্ষণীয় বিষয়, এতে প্রচুর তথ্যবিভ্রাট রয়েছে। যেমন টিপরা ও ত্রিপুরা, ম্রো ও মুরুং, ওঁরাও ও উরুয়া একই নৃ তাত্ত্বিক ক্ষুদ্র হলেও রিপোর্টে এদের আলাদা নৃ তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী বলা হয়েছে। বিভিন্ন রিপোর্টে প্রচলিত ইংরেজি বানানে ভিন্ন রীতির কারণে এমনটি হয়েছে বলে মনে হয়। বুনা, হরিজন নামে আলাদা কোনো নৃ তাত্ত্বিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী নেই । কোঁচ জনগোষ্ঠীর বসবাসের মূল এলাকা উত্তরবঙ্গ হলেও এ বিভাগে কোঁচদের কথা উল্লেখ করা হয়নি।[১]
সর্বশেষ আদমশুমারি ও গৃহগণনা বলছে, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৪৭টিতেই ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসংখ্যা কমেছে। অন্য ১৭ জেলায় বেড়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার ৯৭২ জন। তবে বাস্তব অবস্থার সঙ্গে এই হিসাবের মিল নেই। ফলে আদমশুমারির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০১১ প্রতিবেদনে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ‘এথনিক পপুলেশন’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।[২]
বাংলাদেশের উপজাতি সমূহের তালিকা
সম্পাদনাপরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে বাংলাদেশে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সংখ্যা ৪৫টি।[২] এগুলো হচ্ছে:
- চাকমা (৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭৪৮ জন)
- মারমা (২ লক্ষ ২ হাজার ৯৭৪ জন)
- সাঁওতাল (১ লক্ষ ৪৭ হাজার ১১২ জন)
- ত্রিপুরা (১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৭৯৮ জন)
- গারো (৮৪ হাজার ৫৬৫ জন)
- ওঁরাও (৮০ হাজার ৩৮৬ জন)
- তঞ্চ্যঙ্গা (৪৪ হাজার ২৫৪ জন)
- ম্রো (৩৯ হাজার ৪ জন)
- বম (১২ হাজার ৪২৪ জন)
- পাংখো (দুই হাজার ২৭৪ জন)
- চাক (দুই হাজার ৮৩৫ জন)
- খেয়াং (তিন হাজার ৮৯৯ জন)
- খুমি (তিন হাজার ৩৬৯ জন)
- লুসাই (৯৫৯ জন)
- কোচ (১৬ হাজার ৯০৩ জন)
- ডালু (৮০৬ জন)
- কুকি (৩৪৭ জন)
- রাখাইন (১৩ হাজার ২৫৪ জন)
- মণিপুরী (২৪ হাজার৬৯৫ জন)
- হাজং (৯ হাজার ১৬২ জন)
- খাসিয়া বা খাসি (১১ হাজার ৬৯৭ জন)
- মং (২৬৩ জন)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ http://www.banglanews24.com/news.php?nssl=46471টেমপ্লেট:অকার্যকর সংযোগ
- ↑ ২.০ ২.১ ২.২ "৪৭ জেলায় আদিবাসীর সংখ্যা কমেছে!"। www.prothom-alo.com। ২০১২-০৮-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০৯।