উইকিশৈশব:বিখ্যাত উদ্ভাবক/পরিবহণে উদ্ভাবক/টমাস টেলফোর্ড
কবে, কোথায় এবং কার কাছে তিনি জন্মগ্রহণ করেন?
সম্পাদনাটমাস টেলফোর্ড ১৭৫৭ সালের ৯ আগস্ট স্কটল্যান্ডের ডামফ্রিসশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন জন টেলফোর্ড এবং মা ছিলেন জ্যানেট জ্যাকসন।
তাঁর শৈশব কেমন ছিল?
সম্পাদনাটমাস টেলফোর্ডের জন্মের কয়েক মাস পরে তাঁর বাবা মারা যান। তাঁর বাবা ছিলেন একজন মেষপালক। তাঁর বাবা মারা যাবার পর তিনি তাঁর মা জ্যানেট জ্যাকসনের কাছে দারিদ্র্যের পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠেন।
কেন এই মানুষটি বিজ্ঞানে আগ্রহী হয়ে উঠলেন?
সম্পাদনা১৭৮০-এর দশকে পঞ্চম ব্যারোনেট স্যার উইলিয়াম পুল্টেনির পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁকে একজন স্থপতি হিসাবে স্ব-প্রশিক্ষণ দিতে এবং সমারসেট হাউসে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। এই সময় তিনি বিজ্ঞানে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
তুমি কি জানো?
- তাঁর কোন প্রথাগত প্রশিক্ষণ ছিল না এবং তিনি স্ব-শিক্ষিত ছিলেন।
- তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে মেনাই ঝুলন্ত সেতু এটি সেই সময় কালের দীর্ঘতম সেতু ছিল। এছাড়া তিনি ক্যালেডোনিয়ান ক্যানাল নির্মাণ করেন।
- তিনি ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের প্রথম সভাপতি (এবং প্রতিষ্ঠাতা)। আমৃত্যু তিনি এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
- তিনি নির্মাণ কার্যে গরম শর্করা অর্থাৎ চিনি ও রোমান সিমেন্ট ব্যবহার করেন।
এই মানুষটি কোথায় স্কুলে গিয়েছিল?
সম্পাদনাতিনি দারিদ্রের কারণে স্কুলের পড়া শেষ করে উঠতে পারেন নি। স্কুলের পাঠ অসমাপ্ত রেখে মাত্র ১৪ বছর বয়সে একজন শিক্ষানবিশ রাজমিস্ত্রি হিসাবে প্রশিক্ষণ নেন।
তিনি কি সমস্যা তুলে ধরেন যার সমাধান প্রয়োজন ছিল?
সম্পাদনা১৮ শতকের শেষভাগে পূর্ব থেকে পশ্চিমে জাহাজ চলাচলের কোনো জলপথ ছিল না। তাই ১৯ শতকের শুরুতে স্কটিশ হাইল্যান্ডসের লোকেদের মধ্যে বিষণ্ণতা দেখা দেয়। ১৯ শতকের গোড়ার দিকে লন্ডন, ইংল্যান্ড এবং ডাবলিন, আয়ারল্যান্ডের মধ্যে উন্নত যোগাযোগেরও প্রয়োজন ছিল।
কি সমাধান ইতিমধ্যেই চেষ্টা করা হয়েছিলো যে, সমস্যার সমাধান হয়নি? কেন এটা কাজ করছিল না?
সম্পাদনাহাইল্যান্ড ক্লিয়ারেন্সের ফলে স্কটিশ হাইল্যান্ডগুলি জনশূন্য হয়ে পড়েছিল। হাইল্যান্ড ক্লিয়ারেন্স হলো হাইল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের পশ্চিম দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ। এই উচ্ছেদ ১৮ শতকের মাঝামাঝির থেকে শুরু হয় এবং ১৯ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে থাকে। হাইল্যান্ড ক্লিয়ারেন্সের ফলে ঐতিহ্যবাহী গোষ্ঠী সমাজ ধ্বংস হয়ে যায় এবং স্কটল্যান্ড থেকে গ্রামীণ জনসংখ্যা হ্রাস এবং দেশত্যাগ শুরু হয়।
এই মানুষটি কি উদ্ভাবন করেছেন যা সমস্যার সমাধান করেছে?
সম্পাদনাতিনি অনেক বড় বড় রাস্তা, সেতু এবং ক্যানাল নির্মাণ করেন। ১৮ শতকের শেষের দিকে ক্যালেডোনিয়ান ক্যানাল এবং ১৯ শতকের গোড়ার দিকে লন্ডন-হলিহেড রোড তার অন্যতম কীর্তি। এই রাস্তাটি রোমান আমল থেকে সেই সময় পর্যন্ত ব্রিটেনে প্রথম বড় রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প।
কিভাবে তাঁর উদ্ভাবন সমস্যার সমাধান করেছে?
সম্পাদনাজাহাজগুলি স্কটিশ হাইল্যান্ডের পূর্ব উপকূল থেকে পশ্চিম উপকূলে ১,৪৮০ কিমি (৯২০ মাইল) বিস্তৃত নতুন রাস্তা এবং এক হাজারের বেশি নতুন সেতু দিয়েও যেতে পারত। লন্ডন-হলিহেড রোডটি ছিল রোমান আমলের পর থেকে ব্রিটেনে প্রথম বড় সড়ক নির্মাণ প্রকল্প।
কিভাবে এই উদ্ভাবক মানুষ এবং বিশ্বের পরিবর্তন করেছেন?
সম্পাদনাতিনি এক মহাশক্তিধর সড়ক বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি হিসাবে পরিচিতি পান। তাঁর তৈরি পন্টসিসিলট অ্যাক্যুডাক্ট ২০১৯ সালে একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে মনোনীত হয়।
শেষ পর্যন্ত এই উদ্ভাবকের কি হল?
সম্পাদনা১৮৩৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর লন্ডনে এই বহুমুখী স্কটিশ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের জীবনাবসান হয়।
এই উদ্ভাবককে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার সুযোগ পেলে তুমি কি জিজ্ঞাসা করতে?
সম্পাদনাআধুনিক সেতু নির্মাণ এবং দীর্ঘতম সেতু সম্পর্কে তিনি কী মনে করেন? ইংরেজ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার উইলিয়াম জেসপের অবদান সম্পর্কে তাঁর কী মতামত?
তুমি যদি এই উদ্ভাবককে আজকে নিয়ে আসতে পারতে এবং একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার সুযোগ পেতে তাহলে তাঁর উদ্ভাবনের প্রভাব সম্পর্কে কী বলতে?
সম্পাদনাবর্তমানে অনেক দীর্ঘ সেতু তৈরি হয়েছে। টমাস টেলফোর্ড দাবি করেছিলেন যে ৫৭৯ ফুটের মেনাই সেতুটি বাতাসের প্রভাবের কারণে ঝুলন্ত সেতুগুলির মধ্যে সর্বাধিক দৈর্ঘ্যযুক্ত সেতু। এই বিষয়ে মতামত।