উইকিশৈশব:মজার বৈজ্ঞানিক গবেষণা/কেন বৃষ্টি হয়?

বৃষ্টি হয় কেন?

সম্পাদনা
 
জলচক্র

পৃথিবীতে পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।পানি ছাড়া জীবজগৎ বাঁচতে পারে না। তাই পানির অপর নাম জীবন। পানি পান করা এবং কৃষিকার্যের জন্য পানি অপরিহার্য। বৃষ্টি হলো মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহ করার অন্যতম প্রধান উপায়। বৃষ্টি কেন হয় তা বোঝার জন্য আমাদের পনি সম্পর্কে কিছুটা জানতে হবে।

 
এই পাত্রের জল তরল অবস্থায় গরম হলে বাষ্পে পরিণত হবে

সৌরজগতের একটি বিশেষ সদস্য হলো আমাদের এই পৃথিবী। কারণ এর পৃষ্ঠে জল তরল অবস্থায় রয়েছে। মঙ্গল বা শনি গ্রহে গেলে কখনও সমুদ্র পাওয়া যাবে না! বেশিরভাগ পদার্থের মতো জলও কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় এই তিনটি প্রধান অবস্থার মধ্যে যে কোনো একটি অবস্থায় থাকতে পারে। কঠিন জলকে বরফ বলা হয়। তরল অবস্থার জলকে সহজভাবে জল বলা হয়। আবার গ্যাসীয় অবস্থায় থাকলে জলকে জলীয় বাষ্প বলে। কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় এই তিনটি প্রধান অবস্থার মধ্যে পদার্থ কোন অবস্থায় থাকবে তা নির্ধারণ করে পদার্থের তাপমাত্রার উপর। অর্থাৎ পদার্থটি কতটা গরম তার উপর ভিত্তি করে। সাধারণভাবে খুব ঠান্ডা পদার্থ কঠিন, মাঝারি তাপমাত্রার পদার্থ তরল এবং গরম তাপমাত্রার পদার্থের অবস্থা গ্যাসীয়। বিভিন্ন ধরণের পদার্থের বিভিন্ন তাপমাত্রায় অবস্থার পরিবর্তন হয়। জল শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় কঠিন থেকে তরলে এবং ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (২১২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় বাষ্পে পরিণত হয়।

জলচক্র

সম্পাদনা

পৃথিবীতে জল প্রতিনিয়ত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলাচল করছে। এই যাত্রাকে আমরা বলি "জলচক্র"। এটি একটি জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্র যা পৃথিবীর পৃষ্ঠের উপরে এবং নীচে জলের ক্রমাগত গতিবিধি বর্ণনা করে। পৃথিবীর বেশিরভাগ জলই তরল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের সমুদ্র, হ্রদ, পুকুর, নদী, স্রোত সর্বত্রই জল তরল অবস্থায় বিদ্যমান। জল বাইরে থাকার ফলে সূর্যের তাপে গরম হতে শুরু করে। যখন এটি ঘটে তখন জল তরল অবস্থা থেকে বাষ্পে পরিণত হয় এবং বায়ুমণ্ডলে চলে যায়। একে "বাষ্পীভবন" বলা হয়। বাতাসে যে পরিমাণ জলীয় বাষ্প থাকে তাকে বলা হয় ‘আর্দ্রতা’। যখন একজন ব্যক্তি বলেন যে, বাইরেটা খুব আর্দ্র তখন তারা আসলে বলতে চাইছেন যে বাতাস খুব জলীয় বাষ্পে পূর্ণ!

 
বৃষ্টি হলো জলের তরল অবস্থা যা বায়ুমণ্ডল থেকে ভূপৃষ্ঠে পড়ে।

জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলে উপরের দিকে ওঠার সাথে সাথে এটি শীতল হয়ে যায় এবং এটি জলকণাযুক্ত মেঘে পরিণত হয়। যখন জলীয় বাষ্প তরলে পরিণত হয়, তখন তাকে "ঘনীভবন" বলে। এই ঘনীভবনের ফলে জলকণাযুক্ত মেঘ তৈরি হয়। বায়ুমণ্ডল অনেক জল ধরে রাখতে পারে। বায়ুমণ্ডলের উঁচু মেঘে অনেক জলকণা ভাসমান অবস্থায় থাকে। যখন বায়ুমণ্ডল জলীয় বাষ্পে খুব বেশি পরিপূর্ণ হতে শুরু করে তখন জলকণাযুক্ত মেঘগুলি ভারী হয়ে তরল অবস্থায় জলে পরিণত হয়ে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসে। একে বৃষ্টি বলা হয়।। তারপর বৃষ্টি আবার সাগর, হ্রদ, পুকুর, নদী, স্রোত, ভূমি এবং ভূপৃষ্ঠের আরও অনেক স্থানে প্রবাহিত হয়। পরে এই জল আবার বাষ্পীভূত হবে এবং আবার তার যাত্রা শুরু করবে।