উইকিশৈশব:রাসায়নিক মৌল/নাইট্রোজেন
মৌলটি দেখতে, স্পর্শে, স্বাদে, অথবা গন্ধে কেমন লাগে?
সম্পাদনানাইট্রোজেন একটি বর্ণহীন, গন্ধহীন এবং স্বাদহীন গ্যাসীয় পদার্থ।
মৌলটি কিভাবে আবিষ্কৃত হয়েছিল?
সম্পাদনা১৭৭২ সালে স্কটিশ পদার্থবিদ ড্যানিয়েল রাদারফোর্ড নাইট্রোজেন আবিষ্কার করেন।
মৌলটির নাম কোথা থেকে এসেছে?
সম্পাদনানাইট্রোজেনের নাম "নাইট্রোজেনিয়াম" শব্দ থেকে এসেছে। এই শব্দটি ল্যাটিন এবং গ্রীক শব্দের সংমিশ্রণ। যার অর্থ "সল্টপিটার উৎপাদক"।
তুমি কি জান?
- নাইট্রোজেন হলো বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে সাধারণ উপাদান। বায়ুমণ্ডলের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগই হলো নাইট্রোজেন। বাকিটা প্রধানত অক্সিজেন এবং আর্গন।
- পৃথিবীর সমস্ত জীবনের জন্য নাইট্রোজেনের প্রয়োজন, কারণ ডিএনএ, আরএনএ এবং প্রোটিনে নাইট্রোজেন থাকে।
মৌলটি কোথায় পাওয়া যায়?
সম্পাদনাপ্রকৃতিতে প্রাচুর্য দিক থেকে নাইট্রোজেনের স্থান পঞ্চম। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের শতকরা প্রায় ৭৮ ভাগই নাইট্রোজেন দিয়ে তৈরি। প্রাথমিকভাবে বায়ুমণ্ডলে এবং জীবিত পদার্থে নাইট্রোজেন পাওয়া যায়। নাইট্রোজেন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের প্রধান উপাদান। এটি বায়ুমণ্ডল থেকে মাটিতে, মাটি থেকে উদ্ভিদে, উদ্ভিদ থেকে জীবদেহে এবং জীবদেহ থেকে অবশেষে পুনরায় বায়ুমণ্ডলে ফিরে যায়। এভাবে নাইট্রোজেনের প্রকৃতিতে এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তরের পর আবার পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসাকে নাইট্রোজেন চক্র বলে।
এর ব্যবহার কোথায়?
সম্পাদনাপ্রোটিন এবং ডিএনএর মতো অপরিহার্য অণু তৈরি করতে সমস্ত জীবিত পদার্থের নাইট্রোজেন প্রয়োজন হয়। নাইট্রোজেন গাছের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই সার উৎপাদনে নাইট্রোজেন ব্যবহার করা হয়। নাইট্রোজেন সার উৎপাদক কারখানাগুলি নাইট্রোজেন সার উৎপাদনে বায়ুমণ্ডল থেকে নাইট্রোজেন ব্যবহার করে। "লাফিং গ্যাস"-এ নাইট্রাস অক্সাইড (N2O) থাকে এবং এটি চেতনানাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দ্রুত আইসক্রিম তৈরি করতে তরল নাইট্রোজেন ব্যবহার করা হয়।
এটা কি বিপজ্জনক?
সম্পাদনাবেশিরভাগ পরিস্থিতিতে নাইট্রোজেন বিপজ্জনক নয়। বিশুদ্ধ নাইট্রোজেনে শ্বাস নেওয়া যায় না। মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীদের শ্বাস নেওয়া জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। তরল নাইট্রোজেন খুবই ঠান্ডা, তাই এর স্পর্শে তুষারক্ষত হয়ে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। নাইট্রোজেনের কিছু যৌগ খুবই বিপজ্জনক। বিপজ্জনক যৌগের উদাহরণ হিসাবে গাঢ় নাইট্রিক অ্যাসিড এবং ডিনামাইট বিস্ফোরকের নাম করা যেতে পারে। ডিনামাইটের সক্রিয় উপাদান হলো নাইট্রোগ্লিসারিন।
জেনে রাখা দরকার
ডুবুরিরা জলের গভীরে ডুব দিলে জলের চাপে নাইট্রোজেন রক্তপ্রবাহে দ্রবীভূত হয়। ডুবুরিরা যদি খুব দ্রুত উপরিতলে চলে আসে তবে চাপ দ্রুত হ্রাস পায়। এর ফলে নাইট্রোজেন রক্তপ্রবাহে বুদবুদ সৃষ্টি করে, যার ফলে মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।