উইকিশৈশব:রাসায়নিক মৌল/বেরিয়াম
ধাতুটি দেখতে কেমন লাগে?
সম্পাদনাবেরিয়াম নরম ধাতু। এটি বিশুদ্ধ হলে রূপালী সাদা দেখায়। জলে যেসব বেরিয়াম যৌগ দ্রবীভূত হয় সেগুলি বিষাক্ত। তাই তোমাদের স্বাদ নেওয়ার দরকার নেই।
ধাতুটি কিভাবে আবিষ্কৃত হয়েছিল?
সম্পাদনাভিনসেন্টিয়াস ক্যাসিওরোলাস নাম এক জুতা প্রস্তুতকারী ভারী, রূপালী-সাদা এক খনিজের সন্ধান পান। এটি আসলে ছিল অশুদ্ধ বেরিয়াম সালফেট। তিনি লক্ষ্য করেছিলেন যে, তাপের সংস্পর্শে আসার পরে এই খনিজ অস্বাভাবিক নুড়ির আকারে বছরের পর বছর ধরে জ্বলতে থাকে। তিনি এই নুড়িগুলিকে "বোলোনা পাথর" নাম দিয়েছিলেন। যদিও পরে সেগুলি বেরিয়াম সালফেট হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এরপর আঠারো শতকের শেষের দিকে জার্মান রসায়নবিদ কার্ল শেলি এবং ইংরেজ রসায়নবিদ উইলিয়াম উইথারিং মিলে বারাইট খনিজ থেকে বেরিয়াম আবিষ্কার করেন। ১৮০৮ সালে হামফ্রে ডেভি তড়িৎ বিশ্লেষণ করে বেরিয়াম নিষ্কাশন করেন।
ধাতুটির নাম কোথা থেকে এসেছে?
সম্পাদনাবেরিয়াম নামটি গ্রীক শব্দ "ব্যারিস" থেকে এসেছে। যার অর্থ ভারী। বেরিয়াম মৌল ভারী বলে তার যৌগগুলিও বেশ ভারী হয়। তাই এই মৌলের নাম বেরিয়াম হয়েছে।
তুমি কি জান?
- বেরিয়াম ধাতু জলের সাথে তৎক্ষনাৎ বিক্রিয়া করে হাইড্রোজেন গ্যাস নির্গত করে।
- পৃথিবীর ভূত্বকে মাত্র ০.০৪২৫% বেরিয়াম রয়েছে। বেরিয়াম শরীরে তৈরি হয় না এবং এটি ক্যান্সার সৃষ্টি করে না। তবে এর ধূলিকণায় শ্বাস নিলে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- বাতাসের সংষ্পর্শে বেরিয়াম জারিত হয়ে একটি গাঢ় ধূসর আবরণ তৈরি করে।
- অ্যালুমিনিয়াম, টিন, সীসা এবং নিকেলের মতো কিছু ধাতুর সঙ্গে বেরিয়াম সংকর ধাতু তৈরি করতে পারে।
ধাতুটি কোথায় পাওয়া যায়?
সম্পাদনাবেরিয়ামের রাসায়নিক ভাবে খুব সক্রিয়। তাই প্রকৃতিতে এটি মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না। বেরিয়ামের যৌগ হিসাবে পাওয়া যায়। বেশিরভাগই সালফেট বা কার্বনেট যৌগ হিসাবে থাকে। এর অনেক ধর্ম ক্যালসিয়ামের মতো। তবে ক্যালসিয়ামের চেয়ে এর সক্রিয়তা বেশি।
এর ব্যবহার কোথায়?
সম্পাদনাসবুজ রঙের আতশবাজি তৈরি করতে বেরিয়ামের যৌগ ব্যবহার করা হয়। বেরিয়ামের যৌগ ইলেকট্রনিক্স শিল্পে ভ্যাকুয়াম নলের অবশিষ্ট গ্যাস অপসারণ করতেও কাজে লাগে। পেট্রোলিয়াম শিল্পে বেরিয়ামের যৌগের ব্যবহার দেখা যায়। পরিপাকযন্ত্রের এক্স-রশ্মি চিত্র তুলতে বেরিয়াম সালফেটের প্রয়োগ রয়েছে।
ধাতুটি কি বিপজ্জনক?
সম্পাদনাজলে যেসব বেরিয়াম যৌগ দ্রবীভূত হয় এরা ভীষণরকমের বিষাক্ত। খুব অল্প পরিমাণে খেলে পেশি উত্তেজিত হয়। বেশি খেলে স্নায়ুতন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে। বেরিয়াম যদি আমাদের পাকস্থলীতে প্রচুর পরিমাণে দ্রবীভূত হয় তাহলে এটি শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব দিতে পারে। এক্ষেত্রে শরীরের হৃৎপিণ্ডের ছন্দের পরিবর্তন হতে পারে।