উইকিশৈশব:সৌরজগৎ/বৃহস্পতি/অ্যামালথিয়া

অ্যামালথিয়া

অ্যামালথিয়ার তথ্য:

  • অ্যামালথিয়া হলো সৌরজগতের সবচেয়ে লালচে বস্তু, এমনকি মঙ্গল গ্রহের চেয়েও বেশি লাল।
  • ১৯৭৫ সালে এই উপগ্রহের নাম অ্যামালথিয়ার রাখা হয়। এটির আগের নাম ছিলো বৃহস্পতি ৫ (তবে মুখে মুখে এটিকে অ্যামালথিয়া নামেই ডাকা হতো)।
আইয়ো (বড়) এবং অ্যামালথিয়ার (ছোট) মধ্যে তুলনা।

অ্যামালথিয়া হলো বৃহস্পতির তৃতীয় চাঁদ। অ্যামালথিয়ার কক্ষপথ অ্যামালথিয়া গসামার রিং এর খুব কাছাকাছি।

অ্যামালথিয়া কতো বড়? সম্পাদনা

অ্যামালথিয়া বলের মতো গোলকীয় না। এটি দেখতে গ্রহাণুর মতো। গ্রহাণু বেষ্টনীতে ১১৩ অ্যামালথিয়া নামের একটি গ্রহাণুও আছে। এটি আমাদের চাঁদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বৃহস্পতির এই উপগ্রহের গড় ব্যাস ১১২ কিলোমিটার। সম্পূর্ণ উপগ্রহটা বাংলাদেশের অর্ধেকের চেয়েও ছোট।

অ্যামালথিয়ার পৃষ্ঠ দেখতে কেমন? সম্পাদনা

আমালথিয়ার পৃষ্ঠ উজ্জ্বল লালচে রঙের। এই লালচে রঙ সালফার বা অন্য কিছুর কারনে হতে পারে। অ্যামালথিয়ায় অনেকগুলো গর্ত থাকলে মাত্র দুইটির নাম দেওয়া হয়েছে। একটির নাম প্যান এবং অন্যটির নাম গাইয়া। প্যান নামটি গ্রীক বন্যের দেবতার নামে এবং গাইয়া নামটি পৃথিবীর দেবীর নামে দেওয়া হয়েছে হয়েছে। অ্যামালথিয়ায় দুটি পাহাড়ও আছে। দুইটি পাহাড়ের নামই গ্রীসের বৃহত্তম দ্বীপ ক্রিটের দুইটি স্থানের নামে নামকরণ করা হয়েছে। একটি নাম লাইকটাস ফ্যাকুলা (লাইকটাসের নামানুসারে) এবং অন্যটির নাম আইডা ফ্যাকুলা (মাউন্ট আইডার নামানুসারে)। ইতালীয় ভাষার ফ্যাকুলা অর্থ "ছোট মশাল"।

অ্যামালথিয়ার দিবা দৈর্ঘ্য কত? সম্পাদনা

অ্যামালথিয়ায় একদিন পৃথিবীর প্রায় একদিনের অর্ধেক। সেখানে একদিন হয় ১১ ঘন্টা ৫৭ মিনিট ২৩ সেকেন্ডে। এখানে দিনের দৈর্ঘ্য বৃহস্পতির থেকে অল্প সময় বেশি।

বৃহস্পতিকে প্রদক্ষিণ করতে কত সময় লাগে? সম্পাদনা

অ্যামালথিয়ায় একদিনে যতক্ষন সময়, বৃহস্পতির চারপাশে এর প্রদক্ষিণ করতেও প্রায় একই সময় লাগে। সুতরাং পৃথিবীর একদিনের অর্ধেক সময়ের মধ্যে অ্যামালথিয়া বৃহস্পতির চারপাশে একবার ঘুরে আসে। যেহেতু অ্যামালথিয়ার ঘূর্ণনের সময় এবং প্রদক্ষিণের সময় একই, তাই বৃহস্পতি থেকে অ্যামালথিয়ার কেবল একপাশই সবসময় দেখা যায়। পৃথিবীর চাঁদও একই রকম। একারনেই আমরা সবসময় চাঁদের কেবল একপাশই দেখতে পাই।

অ্যামালথিয়ার মাধ্যাকর্ষণ আমার ওপর কত পরিমাণ অভিকর্ষজ বল দেবে? সম্পাদনা

তুমি যদি অ্যামালথিয়ার পৃষ্ঠে দাড়াও তাহলে তোমার ওজন পৃথিবীর ওজনের ৫৫৫ ভাগের একভাগ হবে। ১০০ কেজি ভরের একজন ব্যক্তি অ্যাামালথিয়ায় নিজেকে ০.১৮ কেজি বা ১৮০ গ্রাম মনে করবেন। এর অর্থ এই যে, তুমি যদি পৃথিবীতে ১০ কেজি ভরের কিছু উঠাতে পারো তাহলে অ্যামালথিয়ার তুমি একসাথে ৩টি গাড়ি উঠাতে পারবে। প্রতিদিন ব্যায়াম করেন এমন একজন ব্যক্তি পৃথিবীর সবথেকে বৃহৎ এবং ভারী প্রাণী নীল তিমিও তুলতে পারবেন।

কার নামে অ্যামালথিয়ার নামকরণ করা হয়েছে? সম্পাদনা

গ্রীক পুরাণের একজন মহিলার নামানুসারে অ্যামালথিয়া (গ্রীক Ἀμάλθεια) নাম রাখা হয়েছে। তিনি গ্রীক দেবতা জিউসকে ছাগলের দুধ দিয়ে লালন পালন করেছিলেন।

এটি কিভাবে আবিষ্কৃত হয়েছিল? সম্পাদনা

 
অ্যামালথিয়ার আবিষ্কারক এডওয়ার্ড এমারসন বার্নার্ড।

এডওয়ার্ড বার্নার্ড ক্যালিফোর্নিয়ার লিক মানমন্দিরের ৩৬ ইঞ্চি (৯১ সেন্টিমিটার) প্রতিসারক দূরবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করে ১৮৯২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর অ্যামালথিয়াকে আবিস্কার করেন। ১৬১০ সালে গ্যালিলিও ইউরোপা আবিষ্কারের পর এনিই সর্বপ্রথম বৃহস্পতির অন্য কোনো উপগ্রহ আবিষ্কার করেন।