গরু পালন/গর্ভাবস্থা নির্ণয়
বাহ্যিক লক্ষণ দেখে, হাত দিয়ে অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন অনুভব করে অথবা রাসায়নিক পরীক্ষা করে গাভীর গর্ভাবস্থা নির্ণয় করা যায়।
বাহ্যিক পরিবর্তন
সম্পাদনা- গাভীর ইস্ট্রাস চক্র বন্ধ হবে, ডাকে আসবে না।
- ষাঁড় এড়িয়ে চলবে এবং ষাঁড়ও গাভীর কাছে আসবে না।
- গাভী শান্ত হয়ে যাবে। চেহারা উজ্জ্বল হতে থাকবে ও পশম চকচকে হবে।
- গাভীর পেট ক্রমশ বড় হতে থাকবে এবং শেষ দিকে বাচ্চার নড়াচড়া বোঝা যাবে।
- গাভীর দুগ্ধ উৎপাদন ক্রমান্বয়ে কমে যাবে।
- যোনিমুখ ক্রমশ ফোলা ফোলা ও নরম হতে থাকবে।
- ওলান ক্রমেই বড় হতে থাকবে ও বাট দিয়ে দুধের মতো কস বের হবে।
অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন
সম্পাদনারেকটাল পালপেশন পদ্ধতিতে গর্ভবতী গাভীর অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন পরীক্ষা করা হয় এবং এটা প্রজননের ৬-১২ সপ্তাহ পর করতে হবে।
- জরায়ুর গ্রীবা বন্ধ হবে।
- ডিম্বাশয়ে করপাস লুটিয়াম বড় হতে থাকবে।
- ৯০ দিনের মধ্যে জরায়ুর হর্ণদ্বয়ের আকারে অসামঞ্জস্যতা বোঝা যাবে অর্থাৎ গর্ভধারণকৃত হর্ণ-এর আকার বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
- ৩ মাস ১৫ দিন হতে ৪ মাসের মধ্যে জরায়ুর ধমনীর স্পন্দন স্পষ্ট বোঝা যাবে।
- বাচ্চা বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমান্তয়ে পেটের দিকে নেমে যাবে এবং গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায়ে পেলভিক কেভিটি-তে চলে আসবে।
রেকটাল পালপেশনের মাধ্যমে গর্ভাবস্থা নির্ণয় করার সময় ডিম্বাশয়কে অতিরিক্ত নাড়াচাড়া করা ঠিক নয়, এতে করপাস লুটিয়াম বিনষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে।
রাসায়নিক পরীক্ষা
সম্পাদনাএক্ষেত্রে জারন বিজারন ইনডিকেটর ব্যবহার করা হয়। একটি টেস্ট টিউবে ৩ মি. লি. গাভীর মূত্রের মধ্যে সাধারণ তাপমাত্রায় ০.৬ মি. লি. বেনজোয়েট ইনডিকেটর যোগ করতে হবে। টিউবটি একটু ঝাকিয়ে ইনডিকেটর ও মূত্র ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে, এবং ৩০ সেকেন্ড সময় অপেক্ষা করতে হবে। ইনডিকেটর ও মূত্রের মিশ্রণটি সবুজ বর্ণ ধারণ করবে। গাভীটি গর্ভবতী হলে ১০ মিনিট রেখে দিলেও মিশ্রণটি বর্ণহীন হবে না, কিন্তু গর্ভহীন গাভীর মূত্র হলে মিশ্রণটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই পূর্বের বর্ণ ধারণ করবে।
গর্ভস্থ বাচ্চার দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের সূত্র: বাচ্চার দৈর্ঘ্য = ক (ক+২) সেন্টিমিটার যেখানে, ক = গর্ভাবস্থার মাসের সংখ্যা