গোষ্ঠী ও দল পরিচালনা/একনায়কতন্ত্র বনাম নেতৃত্ব
একজন নেতার গৌরব জর্জরিত এবং ছাপিয়ে যেতে পারে এমন অনেক উদ্বেগের দ্বারা যা দলের সাফল্যকে প্রভাবিত করতে পারে। একজন নেতাকে অবশ্যই অনেক ভূমিকা পালন করতে হবে এবং একটি দলকে কার্যকর করার জন্য নেতৃত্ব দিতে এবং উৎসাহিত করতে সক্ষম হতে হবে। একজন নেতাকে দলের একজন নিযুক্ত সদস্য হিসেবে কাজ করা প্রয়োজন, তবে একই সাথে তাকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হতে হবে। এটা অবশ্যম্ভাবী যে ভিন্ন ব্যক্তিত্ব, কর্মক্ষেত্র এবং লক্ষ্য যেকোনো নেতাকে বর্তমান পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে বাধ্য করে। একটি দলকে সফলভাবে উৎসাহিত করার এবং নেতৃত্ব দেওয়ার সর্বোত্তম উপায় কী? এটি একটি লাখ টাকার প্রশ্ন। যদিও প্রতিটি পরিস্থিতি বিভিন্ন সুযোগ এবং প্রয়োজনীয়তা উপস্থাপন করে যা একজন নেতাকে অবশ্যই পূরণ করতে হয়, আবার কিছু নেতৃত্বের শৈলী থাকে যা প্রতিবার দলকে বাধা দেয়।
একজন স্বৈরশাসক হওয়া এবং দুর্বল হওয়া বা মানিয়ে নেওয়ার মধ্যে উপযুক্ত ভারসাম্য কী? একজন নেতাকে অবশ্যই দলের সাথে সম্পর্ক রাখতে এবং লক্ষ্যের প্রতি তাদের সম্মান এবং আনুগত্য অর্জন করাতে সক্ষম হতে হবে। আর এই কাজটি একজন স্বৈরশাসক হয়ে এবং দল এবং সদস্যদের ক্ষুদ্র-পরিচালনা করে সম্পন্ন করা যায় না। একজন নেতাকে কার্যকরী এবং সম্মানিত হওয়ার জন্য লাফাস্টো এবং লারসন-এর "হোয়েন টিম ওয়ার্ক বেস্ট"-এ উল্লেখ করা মূল দক্ষতাগুলো পরিচালনা এবং আয়ত্ত করতে হবে। যখন একজন নেতা একজন স্বৈরশাসক হন তখন সেটি নেতার নিজের দলের একটি অংশ হওয়ার ধারণাকে লঙ্ঘন করে। তবে, যখন একজন নেতা সক্রিয় না হয় বা প্রক্রিয়ার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ না হয়, তখন দলের ভেতর থেকে একজন অযোগ্য নেতা বিকশিত হয়, যা দলে কর্মহীনতা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
নেতৃত্বের বর্ণালীর এক প্রান্তে রয়েছে একনায়কত্ব। যখন একজন নেতা একজন স্বৈরশাসক হন তখন তারা ভাল বোধ করেন কারণ তার হাতে নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষমতা থাকে। যে নেতাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য উচ্চ আকাঙ্ক্ষা রয়েছে তারা দলের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। দলের সদস্যরা সহজেই শনাক্ত করতে পারে যখন দলে একজন স্বৈরশাসকের আবির্ভাব হয় এবং সেই সময়ে নেতার পক্ষে এই সংজ্ঞায়িত ছাঁচ থেকে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন। ফলস্বরূপ, সদস্যরা স্বকীয় চিন্তা বন্ধ করে দেন কারণ তারা মনে করেন যে তাদের অবদান এবং ধারণার মূল্য নেই। এটি দলের পরিচয়, আত্মবিশ্বাস, খোলামেলাতা এবং সমর্থনকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলে যেকোনো ধারণা এবং কর্ম এখন দলের অনন্য সংগ্রহের পরিবর্তে নেতার একার হয়ে ওঠে।
বিপরীতভাবে, নেতৃত্বের বর্ণালীর অন্য প্রান্তে একটি মানিয়ে হওয়া বা যাকে উদাসীন বা অনিচ্ছার অধিকারী হিসেবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। যখন একজন মনোনীত নেতা দলের লক্ষ্যের ব্যাপারে খুব সামান্য ইচ্ছা বা আগ্রহ প্রকাশ করেন তখন দল থেকে একজন অনানুষ্ঠানিক নেতার উদ্ভব হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। ফলশ্রুতিতে, দলের লক্ষ্যের দিকে যাওয়ার রাস্তা বাধাগ্রস্ত হয়ে যায় এবং লক্ষ্যটি আরও দূরবর্তী এবং কুয়াশাচ্ছন্ন হয়। তদুপরি, নেতা যখন সিদ্ধান্তে উদ্বেগ বা দায়িত্ব প্রদর্শন না করেন তখন সদস্যরা নিজেদের পরিত্যক্ত বোধ করেন। এটি সদস্যদের নেতার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভাবতে করতে বাধ্য করে এবং শেষ পর্যন্ত তারা তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে, যা তাদের নেতার প্রতি তাদের বিশ্বাস ও আস্থার অবমূল্যায়ন ঘটায়। তখন গোষ্ঠীর ধারণা এবং কর্মগুলো কম সৃজনশীল এবং কার্যকর হয়ে ওঠে কারণ সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ বোধ করেন না।
অতএব, একজন নেতাকে অবশ্যই উপযুক্ত ভারসাম্য আবিষ্কার করতে হবে এবং সূক্ষ্ম লাইনে হাঁটতে হবে। একজন কার্যকরী নেতাকে নির্দেশনা প্রদান করতে হবে এবং সদস্যদের আস্থা তৈরি করার সময় তাদের ধারণাগুলো ভাগ করতে দিতে হবে। একজন নেতার পক্ষে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তর্ক করা এবং লড়াই করা অনেক সহজ যখন তারা স্বৈরশাসকে রূপান্তরিত হন না। একজন নেতার উচিত তাদের নিয়ন্ত্রণ পরিচালনা করা এবং দলের সাথে নিয়ন্ত্রণ ভাগ করে তাদের প্রতি যত্ন এবং আবেগ প্রদর্শন করা। যখন নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষমতা ভারসাম্যপূর্ণ হয় এবং নেতা ও দলের মধ্যে বিভিন্ন জিনিস ভাগ করা হয় যেমন কী আলোচনা করা হয় এবং সম্ভাব্য সমাধান; তখন কর্মগুলো একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরিণত হয়। ফলস্বরূপ, এই ধরণের সম্পর্ক এবং ব্যবস্থা উচ্চ স্তরের বিশ্বাস এবং সন্তুষ্টির দিকে নিয়ে যায়। এবং এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য যে এটি একটি উৎপাদনশীল এবং সুখী দল এবং গোষ্ঠীর জন্য অন্যতম মৌলিক উপাদান।