ছাগল পালন/ছাগলের প্রজনন ব্যবস্থাপনা

উন্নতমানের ও অধিক উৎপাদনশীল বাচ্চা পেতে হলে ছাগলকে সুপরিকল্পিতভাবে প্রজনন করাতে হবে। ক্রমাগত বাছাই পদ্ধতিতে দলের মধ্যে উন্নত মানের পাঁঠা এবং প্রজনন উপযোগী ছাগী নির্বাচন করে তাদের মধ্যে প্রজনন ঘটিয়ে ছাগলের মান উন্নয়ন করা হয়। বাছাই ক্রিয়ার সময় নিম্নের বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখবে হবে।

প্রজনন উপযোগী ছাগলের বৈশিষ্ট্য

সম্পাদনা

বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য

সম্পাদনা
  • দৈহিক বৃদ্ধির হার
  • যৌন পরিপক্কতায় আসার বয়স ও ওজন
  • জন্মকালীন বাচ্চার ওজন
  • দুধ ছাড়ার বয়স ও ওজন
  • দুধ ছাড়ার পর দৈহিক বৃদ্ধির হার

উৎপাদন বৈশিষ্ট্য

সম্পাদনা
  • ছাগল প্রতি মাংস উৎপাদন
  • ড্রেসিং আউট পার্সেন্টেজ
  • চামড়ার গুণাগুণ
  • দুধ উৎপাদন
  • লোম উৎপাদন
  • লোমের গুণগত মান

পুনরুৎপাদন বৈশিষ্ট্য

সম্পাদনা
  • বয়োসন্ধির বয়স প্রথম প্রজননে আসার বয়স ও ওজন
  • প্রথম গর্ভধারণের সময় বয়স ও ওজন
  • প্রথম প্রসবে ওজন ও বয়স
  • কিডিং ইন্টারভ্যাল
  • প্রতিবার গর্ভধারণের জন্য পাল দেয়ার সংখ্যা পাঁঠার শুক্রাণুর গুণগত মান

প্রজনন উপযোগী পাঠা নির্বাচন

সম্পাদনা

প্রজনন উপযোগী পাঁঠা নির্বাচনের সময় নিচের বৈশিষ্ট্যসমূহের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে:

  • পাঁঠার বয়স কমপক্ষে ১২ মাস বা তার বেশি হতে হবে।
  • পাঁঠা শারীরিকভাবে সুস্থ হবে এবং শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিখুঁত হবে।
  • পাঁঠা রুক্ষ, আক্রমণাত্নক ও শৌর্য বীর্যের অধিকারী হবে।
  • পাঁঠার পিতামাতার অধিক উৎপাদনের রেকর্ড থাকতে হবে।
  • পাঁঠার অণ্ডকোষ বড় ও সুগঠিত হবে।
  • পেছনের পা মজবুত ও শক্তিশালী হবে।
  • অবশ্যই সকল প্রকার যৌন রোগ হতে যুক্ত থাকবে।

প্রজনন উপযোগী ছাগী নির্বাচন

সম্পাদনা

প্রজনন উপযোগী ছাগী নির্বাচনের সময় নিচের বৈশিষ্ট্যসমূহের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে:

  • ছাগীর বয়স কমপক্ষে ৯ মাস হতে হবে। দৈহিক ওজন কমপক্ষে ১২ কেজি হতে হবে।
  • ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের হলে মাংসবহুল ছাগী নির্বাচন করতে হবে।
  • দুধ উৎপাদনকারী জাতের হলে ওলান ও বাঁট বড় ও সুগঠিত হবে।
  • ছাগীর পিতা-মাতার অধিক উৎপাদনের রেকর্ড থাকতে হবে।
  • দৈহিক বৃদ্ধির হার বেশি এমন ছাগী নির্বাচন করতে হবে।
  • ছাগী অবশ্যই শান্ত প্রকৃতির হবে।

ছাগী গরম হওয়ার লক্ষণ

সম্পাদনা
  • ছাগীর আচরণে অস্থিরতা দেখা যায়।
  • খাওয়া দাওয়া কমে যায় বা ছেড়ে দেয়।
  • মাঝে মাঝে উচ্চ স্বরে চিৎকার করে।
  • সঙ্গী অন্য ছাগলের পিঠের উপর লাফিয়ে উঠে। অন্য ছাগলকে তার পিঠে উঠতে দেয়।
  • ঘন ঘন লেজ নাড়ে, যোনীদ্বার (ভালোভা) লাল হয় এবং ফুলে যায়।
  • যোনীদ্বার দিয়ে জেলির মতো মিউকাস জাতীয় তরল পদার্থ বের হয়।

ছাগীকে পাল দেওয়ার উপযুক্ত সময় নির্ধারণ

সম্পাদনা
  • ছাগী গরম হওয়ার ৮ ঘণ্টা পর এবং ১৮ ঘণ্টার মধ্যে পাল দিতে হয়।
  • প্রয়োজনে এ সময়ের মধ্যে দুইবার পাল দিয়ে গর্ভধারণ নিশ্চিত করা যায়। সকালে গরম হলে বিকালে এবং বিকালে গরম হলে পরের দিন সকালে পাল দেয়া প্রয়োজন।
  • সঠিক সময়ে পাল দেয়া না হলে পরবর্তী ১৮ দিন হতে ২১ দিনের মধ্যে ছাগী পুনরায় গরম হবে বা হিটে আসবে।
  • একবার বাচ্চা প্রসবের দেড় হতে দুই মাস পর ছাগী পুনরায় গরম হয়।
  • ছাগীকে ৩-৪ বার পাল দেয়ার পরও গর্ভবর্তী না হলে অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ানের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।