ছায়াপথ স্তবক/শীতল রেখা

চন্দ্র এক্স-রশ্মি মানমন্দিরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আবিষ্কারগুলোর একটি ছিল শীতল বায়ুরেখা। প্রথমে ছায়াপথ স্তবকের পৃষ্ঠ উজ্জ্বলতা প্রোফাইলে আকস্মিক পরিবর্তন চিহ্নিত হয়, বিজ্ঞানীরা ভাবেন এ বুঝি কোন নিমজ্জন অভিঘাত বা মার্জার শক। প্রথম এ ধরণের পৃষ্ঠ উজ্জ্বলতা পরিবর্তন চিহ্নিত হয়েছিল "এবেল ২১৪২" নামক স্তবকের এক্স-রশ্মি ছবিতে। কিন্তু তাপমাত্রার হিসাব থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় এরা মার্জার শক নয়। কারণ, এ ধরণের রেখার যে পাশে পৃষ্ঠ উজ্জ্বলতা বেশি সে পাশে তাপমাত্রা কম এবং ঘনত্ব বেশি। এর ফলে এনট্রপির পরিবর্তনও পরিমাপ করা সম্ভব, আপেক্ষিক এনট্রপি (কণা প্রতি এনট্রপি) হচ্ছে:

সুতরাং ঘনত্ব বেশি ও তাপমাত্রা কম হলে আপেক্ষিক এনট্রপি কম হবে। এর অর্থ দাড়াচ্ছে শীতল বায়ুরেখার যে পাশে পৃষ্ঠ উজ্জ্বলতা বেশি সে পাশে আপেক্ষিক এনট্রপি কম, নিম্ন ঘনত্ব এবং উজ্জ্বলতার অঞ্চলে আপেক্ষিক এনট্রপি তুলনামূলকভাবে বেশি। অভিঘাত রেখার যে পাশে উজ্জ্বলতা বেশি সে পাশে তাপমাত্রাও বেশি থাকে। তাছাড়া অভিঘাত রেখার স্থানটিতে চাপের তীব্র পরিবর্তন ঘটে যা এক্ষেত্রে ঘটে না, কারণ এক্ষেত্রে উচ্চ ঘনত্ব অঞ্চলে এনট্রপি কম। এজন্য এ ধরণের রেখাকে উত্তপ্ত ও বিস্তৃত গ্যাস এবং শীতল ও ঘন গ্যাসের মধ্যকার একটি ডিসকন্টিনুয়িটি হিসেবে দেখা হয়। ২০০০ সালে প্রকাশিত Chandra Observation of Abell 2142: Survival of Dense Subcluster Cores in a Merger নামক গবেষণাপত্রে শীতল বায়ুরেখার আবিষ্কার ঘোষিত হয়। এই গবেষণাপত্রেই ম্যাক্সিম মার্কেভিচ ও তার সহকর্মীরা যুক্তি দেখান, শীতল বায়ুরেখার শীতল ও অতি উজ্জ্বল গ্যাসের উৎস হচ্ছে স্তবকের শীতল কোর, নিমজ্জনরত দুটি স্তবকের যেকোন একটি বা দুটোরই শীতল কোর হয়ত নিমজ্জনের ঝঞ্জা থেকে রক্ষা পেয়ে শীতল বায়ুরেখা গঠন করেছে। পরবর্তীকালে দেখা গেছে, অনেক নিমজ্জনেই প্রকৃতপক্ষে শীতল কোরটি রক্ষা পেতে পারে, অন্তত কিছু সময়ের জন্য।