নাক্ষত্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞান/আরআর লাইরি বিষম তারা

আর আর লাইরি নিম্ন ভরের তারা, যাদের কেন্দ্রে হিলিয়াম দহন ঘটছে এবং যারা অনুভূমিক রেখায় থাকা অবস্থায় অস্থিতি স্ট্রিপ অতিক্রম করছে। এদের স্পন্দনের পর্যায়কাল ০.২ থেকে ০.৯ দিন এবং নীল ব্যান্ডে আপাত মান ০.২ থেকে ১.৬ এর মধ্যে। আর আর লাইরি চার ধরণের হতে পারে:

  1. - মৌলিক কম্পাঙ্কে স্পন্দিত হয়। লাইট কার্ভের বিস্তার বেশি এবং কম্পাঙ্ক বেশি।
  2. - এটিও মৌলিক কম্পাঙ্কে স্পন্দিত হয় তবে বিস্তার ও কম্পাঙ্ক অপেক্ষাকৃত কম।
  3. - প্রথম অতিস্বরে (ওভারটোন) স্পন্দিত হয়।
  4. - মৌলিক এবং ওভারটোন দুটোতেই স্পন্দিত হয়।

এই মৌলিক কম্পাঙ্ক এবং অতিস্বর নিয়ে কিছু বলা প্রয়োজন। প্রতিটি বস্তু তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে কিছু নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কে স্পন্দিত হতে ভালবাসে। অনেক বস্তু আবার কেবল একটি কম্পাঙ্কে স্পন্দিত হতে পায়। বস্তুটির এই প্রাকৃতিক কম্পাঙ্ককে বলা হয় তার অনুনাদ কম্পাঙ্ক বা রেজোনেন্ট কম্পাঙ্ক। অনুনাদ ছাড়া অন্য কোন কম্পাঙ্কে তাকে স্পন্দিত করা বেশ কষ্টকর এবং সেজন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। উদাহরণ: একটি দোলনা। দোলনায় বসে প্রথমে একবার দোল দিলে তা একটি নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কেই স্পন্দিত হতে থাকে। কম্পাঙ্ক পরিবর্তন করতে হলে আবারও দোল দিতে হয়, কিন্তু কিছুক্ষণ সে আবার তার প্রাকৃতিক কম্পাঙ্কে ফিরে আসে। এই প্রাকৃতিক কম্পাঙ্কই তার অনুনাদ কম্পাঙ্ক।

দোলনা একটি মাত্র অনুনাদ কম্পাঙ্কবিশিষ্ট ব্যবস্থার উদাহরণ। কিন্তু প্রকৃতির অধিকাংশ বস্তুরই একাধিক অনুনাদ কম্পাঙ্ক থাকে। সর্বনিম্ন অনুনাদ কম্পাঙ্ককে বলা হয় তার মৌলিক বা ফান্ডামেন্টাল কম্পাঙ্ক। আরেকটু টেকনিক্যালভাবে বললে: যেকোন জটিল স্পন্দনকে অনেকগুলো সাধারণ পর্যাবৃত্ত তরঙ্গের (সাইন তরঙ্গ) সমষ্টি হিসেবে বিবেচনা করা যায়। প্রতিটি পর্যাবৃত্ত তরঙ্গের নিজস্ব ধ্রুব কম্পাঙ্ক, বিস্তার এবং দশা থাকে। জটিল স্বন যেসব সাইন তরঙ্গ দিয়ে গঠিত সেগুলোকে বলা হয় পারশিয়াল (partial)। কোন বস্তুর অনুনাদ তরঙ্গগুলোও পারশিয়াল। সর্বনিম্ন পারশিয়াল (অনুনাদ) হচ্ছে মৌলিক কম্পাঙ্ক। মৌলিকের চেয়ে বেশি কম্পাঙ্কের যেকোন পারশিয়ালকেই অতিস্বর বলে। যেসব অতিস্বরের কম্পাঙ্ক মৌলিক কম্পাঙ্কের পূর্ণ সংখ্যক গুণিতক তাদেরকে বলা হয় হারমনিক বা ছন্দ।

সুতরাং আমাদের শ্রেণীবিভাগে এবং কে আদর্শ দোলনার সাথে তুলনা করা যায়, কারণ একটিমাত্র কম্পাঙ্কে (মৌলিক) স্পন্দিত হয়।