নাক্ষত্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞান/দশা সমীকরণ

আগেই আমরা তারার গঠনের চারটি সমীকরণ উল্লেখ করেছি। সমীকরণ চারটি প্রমাণ করার জন্য যে অনুমিতিগুলো নেয়া হয়েছে সেগুলো হল:

  1. আইসোট্রপিক বিকিরণ
  2. গোলকীয় প্রতিসাম্য
  3. তাপগতীয় সাম্যাবস্থা

তারার পৃষ্ঠে পদার্থ এবং বিকিরণের মিথস্ক্রিয়া চলে। পদার্থ তথা কণাগুলো ম্যাক্সওয়েল-বোলৎজমান বণ্টন মেনে চলে এবং বিকিরণ কৃষ্ণবস্তু বিকিরণের নিয়ম মেনে চলে বলে ধরে নেয়া হয়েছিল।

কিন্তু তারার পৃষ্ঠে এই নিয়মগুলো মেনে নিলে আমাদের তারাটি দেখতে পারারই কথা নয়। কারণ তারা দেখার জন্য প্রয়োজন ফোটন। আইসোট্রপিক ও তাপগতীয় সাম্যাবস্থা ধরে নিলে সেই ফোটন আসার সম্ভাবনাই একেবারে কমে যাবে। তার মানে তারার পৃষ্ঠে:

  1. আইসোট্রপিক বিকিরণ থেকে খানিকটা ব্যত্যয় ঘটে
  2. বিকিরণ স্থানীয় তাপগতীয় সাম্যাবস্থা মেনে চলে না

সুতরাং এই স্থানে আমরা স্বাভাবিক তাপমাত্রা ঢাল বা গ্র্যাডিয়েন্ট ব্যবহার করতে পারব না। আরও কিছু বিষয় লক্ষ্য করলে দেখা যায় নাক্ষত্রিক গঠনের চারটি সমীকরণের তিনটিই তারার পৃষ্ঠে অকেজো হয়ে পড়ে। কারণ এই অঞ্চলে তারার ব্যসার্ধ্য-নির্ভর ভর মোট ভরের সমান, ব্যসার্ধ্য-নির্ভর প্রভা মোট প্রভার সমান এবং ব্যসার্ধ্য মোট ব্যসার্ধ্যের সমান। এই তিনটি রাশিই ধ্রুবক হয়ে যাচ্ছে। অথচ তিনটি সমীকরণে এই রাশিগুলোর ডেরিভেটিভ নেয়া হয়েছিল। ধ্রুবক হওয়ায় এদের মান শূন্য হয়ে যাবে। যে সমীকরণ তিনটি অকেজো হয়ে পড়ে সেগুলো হচ্ছে ভরের সংরক্ষণ সূত্র, তাপমাত্রা ঢাল এবং শক্তির নিত্যতা সমীকরণ।