নিউজিল্যান্ডের ইতিহাস/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

মহামন্দায় নিমজ্জিত নিউজিল্যান্ডে ফিরে যান

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিউজিল্যান্ড

সম্পাদনা

১৯৩৯ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর রাত ৯.৩০ টায় নিউজিল্যান্ড জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এবং এইভাবেই তারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রবেশ করে। নিউজিল্যান্ড ব্রিটেনকে সহায়তা করেছিল, কারণ নিউজিল্যান্ডের অধিবাসীরা তখনও তাদের 'মাতৃদেশ'-এর প্রতি অনুগত বলে নিজেদের মনে করতো।

নিউজিল্যান্ড সেখানকার পুরুষদের ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ার ফোর্স এবং রয়্যাল নেভিতে পরিষেবার জন্য পাঠিয়েছিল। নিউজিল্যান্ড রয়্যাল নেভিকে ব্রিটেনের হাতে রাখা হয়েছিল, এবং যুক্তরাজ্যে অপেক্ষারত নতুন বোমারু বিমানগুলিকে নিউজিল্যান্ডে পাঠানোর জন্য রয়্যাল এয়ার ফোর্সের কাছে তৈরী রাখা হয়েছিল।

নিউজিল্যান্ড আর্মি "নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ডিভিশন" হিসাবে যুদ্ধে অবদান রাখে।

১৯৪১ সালের এপ্রিল মাসে, নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ডিভিশনকে গ্রীসে মোতায়েন করা হয়েছিল, ব্রিটিশ এবং অস্ট্রেলিয়ানদের ইতালীয় আক্রমণকারীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে সাহায্য করার জন্য। জার্মানরা শীঘ্রই ব্রিটিশ এবং কমনওয়েলথ বাহিনীর কাছে নিজেকে অপ্রতিরোধ্য হিসাবে লড়াইয়ে যোগ দেয়। এই কারণেই, ব্রিটিশ এবং কমনওয়েলথ বাহিনীকে ৬ই এপ্রিলের মধ্যে ক্রিট এবং মিশরে পিছু হটতে হয়েছিল। নিউজিল্যান্ডের সর্বশেষ সৈন্যদেরকে ২৫শে এপ্রিলের মধ্যে গ্রীস থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, এই অভিযানে ২৯১ জন সৈন্য নিহত, ৩৮৭ জন গুরুতর আহত এবং ১,৮২৬ জন সৈন্য বন্দী হয়েছিল।

 
ক্রিটের যুদ্ধে নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ডিভিশনের অবস্থান দেখানো মানচিত্র।

যেহেতু নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ডিভিশনের বেশিরভাগ সৈন্যই ক্রিটে চলে গিয়েছিল, তাই তারা ১৯৪১ সালের মে মাসে জার্মান সৈন্যদের বিরুদ্ধে ক্রিট রক্ষায় অনেক বেশি জড়িত ছিল। তবে মাসের শেষের দিকে, জার্মান সৈন্যরা আবারও ব্রিটিশ এবং কমনওয়েলথ বাহিনীকে ভয়াভিভুত করেছিল এবং সেই কারণে তাদের জুন মাসের মধ্যে আলেকজান্দ্রিয়াতে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই যুদ্ধে ৬৭১ জন নিউজিল্যান্ডের সৈন্য মারা যায়, ৯৬৭ জন আহত হয় এবং ২১৮০ যুদ্ধবন্দী হয়।

১৯৪১ সালের ১৮ই নভেম্বর, নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ডিভিশন উত্তর আফ্রিকা অপারেশন ক্রুসেডার অভিযানে অংশ নেয়। ব্রিটিশ অষ্টম সেনাবাহিনীর সাথে একত্রিত হয়ে নিউজিল্যান্ডের সৈন্যরা লিবিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করে সাইরেনাইকায় প্রবেশ করে। অপারেশন ক্রুসেডার ব্রিটিশদের জন্য একটি সামগ্রিক সাফল্য ছিল এবং নিউজিল্যান্ডের সৈন্যরদের উদ্ধার করার জন্য প্রত্যাহার করে সিরিয়ায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ডিভিশন-এর জন্য অপারেশন ক্রুসেডার অভিযানটি ছিল সবচেয়ে ব্যয়বহুল, যেখানে ৮৭৯ জন নিহত এবং ১৭০০ জন আহত হয়েছিল।

নিউজিল্যান্ড তৃতীয় ডিভিশন, যা ১৯৪১ সালের ডিসেম্বরের পরে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে বিদ্যমান গ্যারিসন সৈন্যদের পরিপূরক হিসাবে সক্রিয় ছিল। যাইহোক, নিউজিল্যান্ডের সৈন্যরা অবশেষে আমেরিকান সৈন্যদের দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছিল, ইতালিতে নিউজিল্যান্ড তৃতীয় ডিভিশনকে নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ডিভিশনের মধ্যে পরিষেবার জন্য স্বাধীনতা দেত্তয়া হয়েছিল।

নিউজিল্যান্ড ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত যুদ্ধের শেষ অবধি অংশগ্রহণ করে।


হতাহত

মোট, প্রায় ১৪০,০০০ সৈন্য মিত্রবাহিনীর হয়ে যুদ্ধের জন্য বিদেশে সেবা করেছিল। যুদ্ধের জন্য দেশটিকে মহার্ঘ মূল্য দিতে হয়েছিল, এই যুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের ১১,৬২৫জন নিহত হয়েছিল, জনসংখ্যার প্রতি দশলক্ষে ৬৬৮৪ জন নিহতের অনুপাত যা কমনওয়েলথের মধ্যে সর্বোচ্চ হার ছিল।


বিংশ শতাব্দীর মধ্য থেকে শেষ পর্যন্ত ফরোয়ার্ড