বাংলা ভাষার যেসকল শব্দের শেষের ব্যঞ্জন বর্ণের সাথে স্বরবর্ণটি উচ্চারিত হয় না সেগুলোকে 'হলন্ত শব্দ' বা 'হসন্ত' বলা হয়। এক কথায় যে শব্দ আমরা উচ্চারণে অ-কারান্ত করি না, তাদেরকে 'হলন্ত শব্দ' বা 'হসন্ত' বলে।

- ব্যঞ্জন বর্ণের ভেতরে একটি 'অ' স্বরধ্বনি লুকিয়ে থাকে

- এই 'অ' ধ্বনি মুক্ত করতে 'হসন্ত' ব্যবহার করা হয়

- যে শব্দ আমরা হসন্ত ছাড়াই উচ্চারনে অ-কারান্ত করি না, তাদেরকে 'হলন্ত শব্দ' বলে

- শব্দের ভেতরের কোন ব্যঞ্জন বর্ণ থেকে 'অ' ধ্বনি দুর করার জন্য 'হসন্ত' ব্যবহৃত হয়


বাংলা সঠিক ভাবে উচ্চারণ করতে ও লেখতে হলে আপনাকে অবশ্যই 'হলন্ত শব্দ' এবং হসন্তের ব্যবহার জানতে হবে। সঠিক উচ্চারনের জন্য হসন্ত অত্যাবশ্যকীয় একটি চিহ্ন।কোন ব্যঞ্জনবর্ণের অন্তর্নিহিত স্বরবর্ণকে চাপা দিতে হসন্ত ব্যবহার করা হয়। হসন্তের সাথে স্বরবর্ণের যেন জন্মের আড়ি।

আমরা অনেকেই লক্ষ করি না যে বাংলা ব্যঞ্জন বর্ণের ভেতরে আসলে একটি করে স্বর বর্ণ লুকিয়ে থাকে। উদাহরণ দেই-ক = (ক + অ) (উচ্চারণ: কঅঅ)খ = (খ + অ) (উচ্চারণ: খঅঅ)..... .....জ = (জ + অ) (উচ্চারণ: জঅঅ)

কিন্তু আমরা যদি ব্যঞ্জন বর্ণের উপর থেকে স্বরবর্ণের এই প্রভাবটা মুক্ত করতে চাই তাহলে আমাদেরকে যে চিহ্নটি ব্যবহার করতে হবে সেটিই 'হসন্ত' (্‌ )। মানে যে ব্যঞ্জন বর্ণের সাথে 'হসন্ত' থাকবে সেগুলোতে স্বরবর্ণ (আ-কার, ই-কার, ঈ-কার, উ-কার, ঊ-কার ইত্যাদি) যুক্ত হবে না।

হসন্ত ব্যবহারের ফলে ঐ ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে স্বরবর্ণ যুক্ত থাকে না বলে একে মৃত ব্যঞ্জনবর্ণ বলা হয়। (যেমন ক+্ = ক্)। এই প্রকার ব্যঞ্জনবর্ণ অন্য ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তাক্ষর গঠন করতে পারে। (যেমন ক+্+ষ = ক্ষ)।