রন্ধনপ্রণালী:আলু ভর্তা
আলু ভর্তা হল সিদ্ধ নরম আলু মরিচ, পেঁয়াজ ও তেল মিশিয়ে পিষে তৈরিকৃত একধরনের খাদ্য। যা সাধারনত তরকারী হিসাবে খাওয়া হয়।
উপকরণসমূহ
সম্পাদনা- আলু
- সরিষার তেল/ঘিঁ
- মরিচ
- পেঁয়াজ কুচি
- লবণ
প্রস্তুত প্রণালী
সম্পাদনাপ্রথমে একটি আলাদা পাত্রে পরিমাণমত আলু সিদ্ধ করে নিতে হবে। আলাদা একটি বাটিতে সিদ্ধ আলুর খোসা ছাড়িয়ে রেখে দিতে হবে। এবার পেঁয়াজ কুচি , মরিচ কুচি একটি ফ্রাই প্যানে হালকা তেলে একটু ভাজাভাজা করে নিতে হবে। এ পর্যায়ে সিদ্ধ আলুগুলো হাতের সাহায্যে চাপ দিয়ে ভেঙ্গে পিষতে হবে। সাথে ভাজা পেঁয়াজ ও মরিচকুচি এবং সরিষার তেল ভালভাবে মাখতে হবে। সাথে পরিমাণ মত লবণ দিতে হবে। অনেকে আলুর সাথে সিদ্ধ ডিম, শিম, বেগুন ইত্যাদিও ব্যবহার করেন।
এছাড়া অনেকে পোড়া মরিচ ব্যবহার করে; এতে ভর্তায় আলাদা এক প্রকার স্বাদ ও গন্ধ আসে। আবার কাঁচা মরিচ কুচিও ব্যবহার হয়। বৈচিত্র্য ও স্বাদের জন্য অনেক সময় ঘি ব্যবহার করা হয়।
বিভিন্নতা
সম্পাদনাআলু ভর্তায় বিভিন্ন উপাদান যোগ করায় এর বিভিন্নতা এসেছে। যেমনঃ-
- আলু ভর্তা
- ডিম ও আলু ভর্তা
- শিম ও আলু ভর্তা
পরিবেশন
সম্পাদনাবাংলাদেশে রান্নার ধরন ও সনাতনী ধারা বাংলাদেশী রান্নায় ব্যাপকভাবে প্রতিফলিত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। এছাড়াও স্থানভেদে খাবারের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। থালা, রান্না পদ্ধতি, রীতি-নীতি, খাবার পরিবেশন, খাদ্যের নামকরণ, স্বাদ-সহ অনেকগুলো বিষয়ে এ ভিন্নতা রয়েছে। সচরাচর প্রশাসনিক বিভাগসমূহে রান্নার বহমান ধারা কম-বেশী বিভাজিত হয়ে থাকে।
তন্মধ্যে - বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা বিভাগের স্থায়ী অধিবাসীগণ সাগর তীরবর্তী এলাকায় অবস্থান করেন বিধায় তাদের খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক খাবারের ব্যবহার অধিক হয়ে থাকে। এছাড়াও, সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি নারিকেলের ব্যবহার বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। মাছকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় রোদে শুকিয়ে শুঁটকি হিসেবে রূপান্তর করা হয়। এ ধারাটি বরিশাল ও চট্টগ্রামে দেখা যায়। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুঁটকি সরবরাহ ও বাজারজাতকরণসহ বিদেশে রপ্তানী করা হয়।
তবে খুলনায় সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি স্বাদু পানির মাছের প্রাচুর্য রয়েছে এবং তা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। চট্টগ্রাম বিভাগে অতিথি হিসেবে পরিচিত মেজবানগণকে গো-মাংস ও মসুর ডাল সহযোগে পরিবেশন করা হয়। কিন্তু, বরিশাল কিংবা খুলনায় গো-মাংস ভক্ষণের পরিবর্তে মুরগী, মুরগীর বাচ্চা ও মাছকেই খাদ্য হিসেবে প্রাধান্য দেয়া হয় বেশী।
সুপ্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহে মসলা সংযুক্ত ভাত এবং প্রচুর মাংস সহযোগে খাদ্য পরিবেশনের রেওয়াজ প্রচলিত রয়েছে। এ রীতি-রেওয়াজ এখনো পুরনো ঢাকায় অস্তিত্ব বজায় রেখেছে। বিরিয়ানি, বিভিন্ন ধরণের কাবাব, বাকরখানি ইত্যাদি শতাব্দী প্রাচীন খাবারগুলো বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁয় তৈরী করতে দেখা যায়।
পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এলাকাগুলোয় সব্জিসহযোগে তরকারীর সাথে খাদ্য গ্রহণ করা হয় ব্যাপকভাবে। এছাড়া, মশলাও সাধারণ অর্থে এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। নদীর মাছ বিশেষ করে স্বাদু পানির মাছও সাধারণভাবেই পাতে বা থালায় থাকে। বৃহত্তর বরিশাল বিভাগে মেজবান অনুসঠানের প্রচলন ইদানিং ঊঠে যাচ্ছে।
বাঙ্গালি খাবারের প্রধান অংশ ভাত, যা প্রায় প্রতিবেলার আহারেই অন্তর্ভূক্ত থাকে । তবে ভাতের পরিবর্তে অনেকেই রুটিও খেয়ে থাকেন । এর সাথে মাছ, মাংস, ডাল, সবজি, ভর্তা, ভাজি ইত্যাদি খাওয়া হয়ে থাকে ।
এছাড়া আটা বা ময়দা থেকে প্রস্তুত লুচি, পরোটা, পিঠা ইত্যাদিও খাবার হিসেবে পরিবেশিত হয়ে থাকে । ডালজাতীয় খাবারের মধ্যে মুসুরের ডাল, খেসারির ডাল, মুগের ডাল, মাসকলাই ডাল, ছোলা ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়ে থাকে । গ্রীষ্মপ্রধান দেশ হওয়ার কারনে বাংলাদেশে বিভিন্ন রকমের শাকসবজি ও ফলমূল পাওয়া যায়