উইকিশৈশব:সৌরজগৎ/শনি/রিয়া

ক্যাসিনি মহাকাশযান থেকে রিয়ার ছবি

রিয়া কত বড়?

সম্পাদনা

রিয়ার ব্যাস (বৃত্তের কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে এক পাশ থেকে অন্য পাশের দূরত্ব) ১৫৩০ কিমি। সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহের চাঁদের সাথে তুলনা করলে রিয়া আকারে তুলনামূলকভাবে বেশ বড়।

এর উপরিতল কেমন?

সম্পাদনা
 
রিয়ার অস্বাভাবিক নীল রেখা।

রিয়ার পৃষ্ঠতলটি প্রচুর পরিমাণে গহ্বরযুক্ত এবং এর পৃষ্ঠে উজ্জ্বল সূক্ষ্ম পালকের মত দাগ রয়েছে। এর পৃষ্ঠতলকে দুটি অঞ্চলে ভাগ করা যায়। প্রথম অঞ্চলে ৪০ কিলোমিটারেরও বেশি চওড়া পরিমাপের গহ্বর রয়েছে, দ্বিতীয় অঞ্চলেও গহ্বর রয়েছে কিন্তু সেগুলি পরিমাপে প্রথম অঞ্চলের চেয়ে ছোট।

সম্মুখে স্থিত গোলার্ধ অঞ্চলে প্রচুর গহ্বর আছে এবং তাদের উজ্জ্বলতা সব জায়গাতেই সমান। ক্যালিস্টোর মত, গহ্বরগুলি ধীরে ধীরে চাপা পড়ে গেছে। পশ্চাতে স্থিত গোলার্ধ অঞ্চলে একটি অন্ধকার পশ্চাদপটে উজ্জ্বল সূক্ষ্ম পালকের মত দাগ এবং কিছু দৃশ্যমান গহ্বর আছে। এই উজ্জ্বল অংশগুলি রিয়ার ইতিহাসের প্রথম দিকের বরফ আগ্নেয়গিরির উপাদান হতে পারে, যে সময় এর অন্তস্থিত অংশ তরল অবস্থায় ছিল। ডিওনেরও একই রকম উজ্জ্বল রেখা রয়েছে। সেগুলির সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণের পর, দেখা গেছে যে এগুলি আসলে বরফের খাড়া ঢাল। অতএব, ধরে নেওয়া যেতে পারে যে রিয়ার পৃষ্ঠতলের উজ্জ্বল রেখাগুলিও বরফের খাড়া ঢাল। ২০০৫ সালের ২৫শে নভেম্বর যখন ক্যাসিনি রিয়ার পাশ দিয়ে উড়ে যাবে, তখন আমরা নিশ্চিতভাবে জানতে পারব এগুলি ঠিক কি।

রিয়ার একটি দিন কত বড়?

সম্পাদনা

রিয়ায় একটি দিন পৃথিবীর সাড়ে চার দিনের সমান।

শনির চারপাশে এর কক্ষপথে আবর্তন করতে কত সময় লাগে?

সম্পাদনা

শনির চারপাশে কক্ষপথে একবার প্রদক্ষিণ করে আসতেও রিয়ার সাড়ে চার দিন সময় লাগে। নিজের অক্ষকে কেন্দ্র করে একবার ঘুরে আসতে রিয়ার যত সময় লাগে, কক্ষপথে শনি গ্রহকে একবার ঘুরে আসতেও তার একই সময় লাগে। একে বলা হয় সমলয় ঘূর্ণন। এর অর্থ এই যে রিয়ার একটিই দিক সবসময় শনির মুখোমুখি থাকে।

এটি কি দিয়ে তৈরি?

সম্পাদনা

রিয়ার ভরের এক তৃতীয়াংশ হল শিলা পাথর, যা এর মজ্জা অংশে পাওয়া যায়। বাকি অংশ জলের বরফ দিয়ে তৈরি।

রিয়ার মাধ্যাকর্ষণ আমাকে কতটা টানবে?

সম্পাদনা

তুমি যদি রিয়ার পৃষ্ঠতলে দাঁড়িয়ে থাক, প্লুটোতে তোমার যা ওজন, এখানে তার চেয়ে কম হবে — পৃথিবীতে তোমার যা ওজন এখানে তার প্রায় ৬% ওজন হবে। এর অর্থ পৃথিবীতে ১০০ কেজি ওজন হলে এখানে ওজন হবে ৬ কেজি।

কার নামে এর নামকরণ করা হয়েছে?

সম্পাদনা

গ্রিক পুরাণের একজন টাইটানেসের (মহিলা টাইটান) নামে রিয়ার নামকরণ করা হয়েছে। রিয়া নামটি জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম হার্শেলের ছেলে জন হার্শেল প্রস্তাব করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে, তিনি রেজাল্টস অফ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেশনস মেড অ্যাট দ্য কেপ অফ গুড হোপ (উত্তমাশা অন্তরীপে তৈরি জ্যোতির্বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণের ফলাফল) প্রকাশ করেছিলেন, সেখানে তিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন এই টাইটানগুলির নামকরণে ক্রোনোস (গ্রিক শনি) এর ভাই এবং বোনেদের নাম ব্যবহার করতে। এর আগে, রাজা চতুর্দশ লুইকে সম্মান জানানোর জন্য, রিয়া, টেথিস, ডিওন, এবং অ্যাপেটাসের নাম দেওয়া হয়ছিল সাইডেরা লডোসিয়া ("লুই এর তারা")।

এটি কিভাবে আবিষ্কার করা হয়েছিল?

সম্পাদনা

১৬৭২ সালের ২৩শে ডিসেম্বর, জিওভান্নি ক্যাসিনি রিয়া আবিষ্কার করেছিলেন।