কুরআন ও আধুনিক বিজ্ঞান/পদার্থবিজ্ঞান
অতিপারমাণবিক কণার অস্তিত্ব
প্রাচীনকালে 'পরমাণুবাদের তত্ত্ব' নামে একটি সুপরিচিত তত্ত্ব ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়েছিল। এই তত্ত্বটি মূলত গ্রীকদের দ্বারা প্রস্তাবিত হয়েছিল, বিশেষ করে দেমোক্রিতোস নামে একজন ব্যক্তি, যিনি প্রায় তেইশ-শতাব্দী আগে বসবাস করেছিলেন। দেমোক্রিতোস এবং তার পরে আসা লোকেরা ধরে নিয়েছিল যে, কোন পদার্থের ক্ষুদ্রতম একক হল পরমাণু। আরবরাও একই কথা বিশ্বাস করত। আরবি শব্দ "দাররাহ" আক্ষরিক অর্থে বোঝায় একটি পরমাণুকে।
সাম্প্রতিক সময়ে আধুনিক বিজ্ঞান উন্নত হওয়ায় আবিষ্কার করেছে যে একটি পরমাণুকেও বিভক্ত করা সম্ভব। পরমাণুকে যে আরও বিভক্ত করা যেতে পারে তা বিংশ শতাব্দীর একটি বিকাশ। চৌদ্দ শতাব্দী আগে এই ধারণাটি একজন আরবের কাছেও অস্বাভাবিক মনে হতো। তাদের জন্য ধরা ছিল এমন এক সীমা যার বাইরে কেউ যেতে পারে না। তবে নিম্নলিখিত কুরআনের আয়াতটি এই সীমাকে স্বীকার করতে অস্বীকার করে:
কাফিরগণ বলে - ক্বিয়ামত আমাদের নিকট আসবে না। বল, না, আমার প্রতিপালকের শপথ! তোমাদের নিকট তা অবশ্য অবশ্যই আসবে। তিনি যাবতীয় অদৃশ্যের জ্ঞানী। তাঁর থেকে লুক্কায়িত নেই আকাশ ও পৃথিবীতে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অনুকণা, না তার থেকে ছোট আর না তার থেকে বড় (কোনটাই নেই লুক্কায়িত)। সবই আছে (লাওহে মাহফুয নামক) এক সুস্পষ্ট কিতাবে। [৩৪:০৩]
এই আয়াতটি শুধুমাত্র ঈশ্বরের সর্বজ্ঞতা, গোপন বা প্রকাশ্য সমস্ত বিষয়ে তাঁর জ্ঞানকে নির্দেশ করে না, বরং ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে তুলে ধরে। এটি তারপর আরও এগিয়ে যায় এবং বলে যে ঈশ্বর পরমাণুর চেয়ে ছোট বা বড়সহ সবকিছু সম্পর্কে অবগত। এইভাবে আয়াতটি স্পষ্টভাবে দেখায় যে পরমাণুর চেয়েও ছোট কিছুর অস্তিত্ব থাকা সম্ভব, যা আধুনিক বিজ্ঞান সম্প্রতি আবিষ্কার করেছে।
এছাড়াও কুরআনে আরও একটি আয়াতে এটি উল্লেখ রয়েছে:
তুমি যে অবস্থাতেই থাক না কেন, আর তুমি কুরআন থেকে যা কিছুই তিলাওয়াত কর না কেন, আর যে ‘আমালই তোমরা কর না কেন, আমি তোমাদের উপর রয়েছি প্রত্যক্ষদর্শী, যখন তোমরা তাতে পূর্ণরূপে মনোনিবেশ কর। এমন অণু পরিমাণ বা তাত্থেকে ছোট বা তাত্থেকে বড় বস্তু না আছে পৃথিবীতে, আর না আছে আসমানে যা তোমার প্রতিপালকের দৃষ্টির আড়ালে আছে। তা (লেখা) আছে এক সুস্পষ্ট কিতাবে। [১০:৭১]