“বাংলা সাহিত্যে কল্পবিজ্ঞান” সংজ্ঞা: কল্পবিজ্ঞান নিছক কল্পনাও নয় আবার বিজ্ঞানও নয়। কল্পবিজ্ঞান হল এমন একটি সাহিত্য শাখা যেখানে কল্পনা ও বিজ্ঞানের সংমিশ্রণে সৃষ্ট কাহিনী যা অ্যাডভেঞ্চার ও রহস্যময় আবদ্ধ করে পাঠককে এক ভিন্নধর্মী আস্বাদন প্রদান করে।

বৈশিষ্ট্য: যেকোনো রচনা গল্প বিজ্ঞান হয়ে উঠতে পারে না। কল্প বিজ্ঞানের নিজস্ব কিছু আইন কানুন বা শর্ত রয়েছে। গল্প বিজ্ঞানের শর্ত বা বৈশিষ্ট্য গুলি হল:- (1) কল্পবিজ্ঞানে থাকে কল্পনা ও বাস্তবের মেলবন্ধন। (2) কল্পবিজ্ঞানে যা লেখা হয় অনেক সময় তা বৈজ্ঞানিকদের নিত্য নতুন আবিষ্কারে সহায়তা করে। (3) কল্পবিজ্ঞান উপভোগ করতে গেলে বিজ্ঞানের প্রাথমিক পাঠ অতি জরুরী। (4) কল্প বিজ্ঞানের গল্প অ্যাডভেঞ্চার ও রহস্যে ভরা থাকবে। (5) কল্পবিজ্ঞানের গল্প ৮ থেকে ৮০ সব বয়সের মানুষই এর আনন্দ লাভ করতে পারবে। (6) কল্প বিজ্ঞানের গল্পের পরিশেষে রহস্য উন্মোচন থাকবে। (7) কল্পবিজ্ঞানে থাকবে, অজানা সম্ভাব্য জগতের কথা, প্রাণীর কথা, আগামী দিনের কথা।


উদ্ভব ও বিকাশ:- প্রত্যেক শুভ সূচনারই একটি উৎস পর্ব থাকে। ঊনবিংশ শতকের কল্প বিজ্ঞানের উদ্ভবের অনেক আগে আমরা কোন কোন লেখায় কল্পবিজ্ঞানের ইঙ্গিত পাই তা উল্লেখ করে উনিশ শতকের কল্প বিজ্ঞানের উদ্ভবের পরিচয় গ্রহণ করে তা পরবর্তীতে কেমন সমৃদ্ধিলাভ করেছে তা আলোচনা করতে প্রয়াসী হবো।

বাংলায় কল্পবিজ্ঞান গল্প, উপন্যাস লেখার অনেক আগে রোমান কবি লুকানোর লেখায় যে গল্প বিজ্ঞানের ছোঁয়া পাওয়া যায়, তা অনেকটাই বিকশিত হয় সপ্তদশ শতকের ফরাসি লেখক সিরানো দ্য বারজারাক- এর ‘অন্য জগৎ’ গ্রন্থের মাধ্যমে।

তবে সার্থকভাবে পাশ্চাত্যে প্রথম কল্পবিজ্ঞানের উপন্যাস লেখেন, ----

মেরি শেলি:- কবি শেলির প্রথমা পত্নী আত্মহত্যা করলে ১৮১৬ সালে তিনি মেরি কে বিবাহ করেন। শেলির লেখা অন্যতম উপন্যাস ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’১৮১৮ সালে প্রকাশিত হয়। গল্পটিতে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন নামক এক যুবক বিজ্ঞানী কবর থেকে মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তুলে এনে তাদের জোড়া লাগিয়ে জীবন্ত মানুষ তৈরি করতে গেলে তা রাক্ষসে পরিণত হয় এবং প্রাণীটি পরবর্তীতে ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের প্রিয়তমা সহ ফ্রাঙ্কেনস্টাইনকে হত্যা করে। স্রষ্টাকে সৃষ্টির এই হত্যার বিবরণের মাধ্যমে একটি নীতিকথা কাহিনীটির মধ্যে প্রচ্ছন্ন হয়েছে।

এছাড়া ভবিষ্যতে প্লেগ রোগে মানবজাতি কিভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হতে পারে তাই নিয়ে তিনি রচনা করে গেছেন তার শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘দি লাস্ট ম্যান’ (১৮২৬) ।


জুল ভার্ন:- পিতার ইচ্ছাতে প্যারিস থেকে আইন নিয়ে পড়ে ব্যারিস্টার হন। মূলত বন্ধু আলেকজান্ডার দ্যুমার প্রেরণাতেই সাহিত্য জগতে পদার্পণ করেন। ‘এ জার্নি টু দি সেন্টার অফ দি আর্থ’( ১৮৭৪), ‘টোয়েন্টি থাউজ্যান্ড লীগস্ আন্ডার দি সী’ (১৮৭৩) প্রভৃতি জুল ভার্ণের জনপ্রিয় কল্পবিজ্ঞান উপন্যাস।

এইচ. জি. ওয়েলস্:- প্রথম জীবনের স্কুলে সহকারী শিক্ষকের চাকরি নিলেও সাংবাদিকের প্রেশা গ্রহণ করে গল্প লেখা শুরু করেন। ‘দি টাইম মেশিন' (১৮৯৫), ‘দি ওয়ান্ডারফুল ভিজিট'( ১৮৯৫ ), 'দি ইনভিজিবল ম্যান' (১৮৯৭) প্রভৃতি কল্পবিজ্ঞান উপন্যাস তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দেয়।

  এছাড়াও স্যার আর্থার কোনান ডয়েল, লিওনার্ড হাক্সলি, আর্থার সি ক্লার্ক, এডওয়ার্ড সাগান, ব্রড ব্রুরি প্রমুখ খ্যাতিসম্পন্ন সাহিত্যিকগণ কল্পবিজ্ঞান নিয়ে অজস্র সাহিত্যচর্চা করেছেন।


বাংলা সাহিত্যে কল্পবিজ্ঞানের ধারা:-

উনিশ শতকের অন্যান্য কিছু সাহিত্য শাখার মতো বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রে কল্পবিজ্ঞানও মূলত পাশ্চাত্য সাইন্স ফিকশন থেকে উদ্ভাবিত হয়েছে। উনবিংশ শতাব্দীতে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও বিজ্ঞান চেতনার প্রভাবে সেই সময়ের বাঙ্গালীদের মধ্যে নবজাগরণ শুরু হয়। তাই গল্পের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার ব্যবহার দেখার জন্য খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি।

জগদানন্দ রায়:- বাংলা ভাষায় কল্প বিজ্ঞানের সূচনা ১৮৯৬ সালে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর কলমে। কিন্তু দীপ ঘোষ ও সন্ত বাগ "কল্পবিশ্ব" পত্রিকায় জগদানন্দ রায়ের 'শুক্র ভ্রমণ' গল্পটির প্রকাশকাল - “১৮৯৫ সালের ভারতী পত্রিকার ১৯তম বর্ষ” প্রমাণ করায় পথিকৃতের অভিধা যে জগদানন্দ রায়ের প্রাপ্য তাতে আর সন্দেহ থাকে না।

হেমলাল দত্ত:- কিছু বিশেষজ্ঞ হেমলাল দত্তকে বাঙালি বিজ্ঞানের প্রথম কথা সাহিত্যিক লেখক হিসেবে অভিহিত করেন। কেননা তার ‘রহস্য’(The mystery) গল্পটি ১৮৮২ সালে ‘বিজ্ঞান দর্পণ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

জগদীশচন্দ্র বসু:- বাংলা বিজ্ঞান কথা সাহিত্যের পিতা বলে বিবেচিত। ১৮৯৬ সালে তিনি লিখেছেন ‘নিরুদ্দেশের কাহিনী’। প্রথম বাংলা বিজ্ঞান কথা সাহিত্য গুলির মধ্যে এটি একটি। এই গল্পে দেখা যায় আবহাওয়া দপ্তর থেকে কলকাতাবাসীকে জানিয়ে দেওয়া হয় প্রচন্ড ঝড় জলোচ্ছ্বাসের কথা। সকলে প্রস্তুত থাকলেও কোন কিছু না ঘটায় বৈজ্ঞানিকরা এর কারণ খুঁজতে মরিয়া হয়ে যান। জগদীশচন্দ্র বসু জানালেন যে এর কারণ একমাত্র তার জানা আছে। সিংহল উদ্দেশ্যে সমুদ্র যাত্রা পথে তারা ঝড়ের কবলে পতিত হয়। জাহাজের মাস্তুল ও লাইফবোট ভেঙে গেলে মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার মুহূর্তে তার মনে পড়ে তিনি সম্প্রতি এক কাগজে পড়েছিলেন তৈল জলরাশিকে মসৃণ করে। মুহূর্তে নিজের মাথার অবশিষ্ট কয়েক গোছা চুল রক্ষার্থে স্নেহময়ী কন্যার দেওয়া এক শিশি ‘কুন্তলীন তেল’ সাগরে নিক্ষেপ করেন এবং এর ফলে তুফানটিও শান্ত হয়ে যায়। এ কারণেই তুফানটি আর কলকাতা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। তুফান না হওয়ার রহস্য এভাবে উন্মোচিত হয়ে গল্পের ইতি ঘটে।

 পরবর্তীতে ‘নিরুদ্দেশের কাহিনী’ নামটি পরিবর্তন করে ‘পলাতক তুফান’ নামক কল্পকাহিনী হিসেবে ‘অব্যক্ত’ প্রবন্ধ সংগ্রহের অন্তর্ভুক্ত করেন জগদীশচন্দ্র বসু। 


রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন:- বেগম রোকেয়া ‘সুলতানার স্বপ্ন’ নামক একটি কল্পবিজ্ঞান গল্প লিখেছেন। এটি ১৯০৫ সালে ভারতীয় মহিলা ম্যাগাজিনে প্রথম প্রকাশিত হয় এবং ১৯০৮ সালে গ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হয়। নারীদের জন্য প্রচ্ছদ প্রথাগত মুসলিম অভ্যাসের অনুরূপ একটি পদ্ধতিতে অনুরূপ ভূমিকা পালনের মধ্যে নারীর অন্তর্ধানের মধ্যে একটি নারীবাদী স্বপ্নকে চিত্রিত করে।


হেমেন্দ্রকুমার রায়:- অ্যাডভেঞ্চার, অলৌকিক, রহস্য, গোয়েন্দা কাহিনীর তুলনায় পরিমাণে সামান্য হলেও হেমেন্দ্রকুমার রায়ের কল্পবিজ্ঞান কাহিনীগুলিও আমাদের সমভাবে আকর্ষিত করে। ‘মেঘদূতের মর্ত্যে আগমন’, ‘ড্রাগনের দুঃস্বপ্ন’, ‘অমানুষিক মানুষ’, ‘অসম্ভবের দেশে’, ‘কালের কবলে’ প্রভৃতি হেমেন্দ্রকুমার রায়ের জনপ্রিয় কল্পবিজ্ঞান কাহিনী। বস্তুত তার হাতেই বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাবালক হয়ে ওঠে এবং মধ্যযুগের দিকে যাত্রা করে।

রাজশেখর বসু:- ‘পরশুরাম’ ছদ্মনামে সকলের কাছে পরিচিত। মূলত হাস্যরসের মাধ্যমে তিনি আমাদের তথাকথিত সমাজ ব্যবস্থাকে ব্যঙ্গ করে গেছেন। ‘গা মানুষ জাতির কথা’, ‘মাঙ্গলিক’, ‘গগন-চটি’ এই তিনটি তার বিখ্যাত কল্পবিজ্ঞানের গল্প।


ক্ষিতীন্দ্রনারায়ণ ভট্টাচার্য:- তার লেখা গ্রন্থ গুলি হল ‘টিটিঙ্গি পাহাড়ের দেবতা’, ‘বন ঝাউয়ের রহস্য’, ‘লুপ্ত ধন’, ‘ফুটোস্কোপ’, ‘মেঘনাদ’, ‘চৌহান গুম্ফার দেবতা’ প্রভৃতি তার রচিত জনপ্রিয় কল্পবিজ্ঞান কাহিনী।


প্রেমেন্দ্র মিত্র:- প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রথম বাঙালি সাহিত্যিক যিনি নিয়মিত কল্পবিজ্ঞান গল্প উপন্যাস রচনায় মননিবেশ করেন। তার প্রথম গল্প বিজ্ঞান কাহিনী ‘পিঁপড়ে পুরাণ’। ক্ষিতীন্দ্রনারায়ণ ভট্টাচার্য ছোটদের জন্য লিখতে অনুরোধ করলে তিনি এটি লেখেন। মনোজ ভট্টাচার্যের ‘রামধনু’ পত্রিকায় এটি প্রকাশিত হয়। ‘কুহকের দেশে’ গল্পগ্রন্থটিতে মামা বাবু চরিত্রের আত্মপ্রকাশ ঘটান। ‘আকাশের আতঙ্ক', ‘সূর্য কাঁদলে সোনা’, ‘মঙ্গল বৈরী’, ঘনাদা সিরিজের (মশা, নুড়ি,মাছ, পোকা ইত্যাদি) গল্পগুলি তার রচিত কল্পবিজ্ঞান কাহিনী। এদের হাত ধরে বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্য আধুনিক যুগে পৌঁছে যায়।


সত্যজিৎ রায় :- প্রখ্যাত সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর পৌত্র এবং সুকুমার রায় ও সুপ্রভা রায়ের পুত্র সত্যজিৎ রায় ২ মে ১৯২১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রথম কল্পবিজ্ঞানের গল্প ‘বঙ্কুবাবুর বন্ধু’ ১৯৬২ সালে ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯৬৫ সালে তার প্রথম গল্প বিজ্ঞানের গ্রন্থ ‘প্রফেসর শঙ্কু’ প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি ১৯৬৭ সালে শ্রেষ্ঠ সাহিত্য গ্রন্থ হিসেবে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পেয়ে জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। ‘প্রফেসর শঙ্কুর শনির দশা’, ‘ প্রফেসর শঙ্কু ও গোলক রহস্য’, ‘শঙ্কু ও গরিলা’, ‘কর্ভাস’ , ‘শঙ্কু ও আদিম মানুষ’ প্রভৃতি একাধিক গল্প প্রফেসর শঙ্কু গ্রন্থটিতে সংকলিত হয়েছে। মৌলিক গল্প বিজ্ঞান লেখার পাশাপাশি তিনি কিছু বিখ্যাত বিদেশী লেখকের গল্প বিজ্ঞানের কাহিনী অনুবাদ করেছেন। ‘মঙ্গলই স্বর্গ’/ রে ব্র্যাডবেরি, ‘ঈশ্বরের ল'লক্ষ নাম’ / আর্থার. সি. ক্লার্ক।

অদ্রিশ বর্ধন:-

প্রথম বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাময়িকী ‘আশ্চর্য’ পত্রিকার সম্পাদক অদ্রিশ বর্ধন। আকাশ সেন ছদ্মনামে তিনি এটি সম্পাদনা করেন। পরবর্তীতে ‘ফ্যান্টাস্টিক’ ও ‘কিশোর মন’ নামক পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন। ‘বাড়ির নাম ব্যাবিলন’, ‘মারন মেশিন’, ‘রুনা’ প্রভৃতি তার উল্লেখযোগ্য গল্প কাহিনী। বাংলা গল্প বিজ্ঞান সাহিত্যকে এক অনন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছেন অদ্রিশ বর্ধন। 


হুমায়ুন আহমেদ:- হুমায়ুন আহমেদ একজন বাংলাদেশী উপন্যাসিক, ছোট গল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার এবং চিত্রনাট্যকার। বাংলা কথা সাহিত্যে তিনি সংলাপ প্রধান নতুন শৈলীর জনক। তার লেখা ‘তোমাদের জন্য ভালোবাসা’ (১৯৭৩) বাংলা সাহিত্যের প্রথম আধুনিক গল্প বিজ্ঞান কাহিনী। একারণে তাকে আধুনিক বাংলা গল্প কাহিনীর জনক বলা হয়।


মহম্মদ জাফর ইকবাল:-

জনপ্রিয় সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’ পত্রিকায় ‘কপোট্রনিক ভালোবাসা’ নামে একটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী প্রকাশিত হয়। লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এক তরুণ। গল্পটি প্রকাশ হবার পর কে বা কারা অভিযোগ আনেন যে তিনি লেখাটি নাকি রাশিয়ান সাইন্স ফিকশন ‘আইভা’ থেকে হুবহু নকল করেছেন। লেখক প্রতিবাদ লিপি পাঠানোর কথা ভেবে শেষ পর্যন্ত পাঠালেন না। যা করলেন তা হলো, কপোট্রনিক নামে একের পর এক গল্প লিখে চললেন। আর এভাবেই জন্ম হয় বাংলা সাহিত্যের সর্বকালের জনপ্রিয় কল্পবিজ্ঞানের লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালের। তিনি আবার হুমায়ুন আহমেদের ভ্রাতা ছিলেন। কপোট্রনিক সিরিজটি পরবর্তীকালে বাংলাদেশের বিখ্যাত প্রকাশনা ‘মুক্তধারা’ “কপোট্রনিক সুখ দুঃখ” নামে গ্রন্থ আকারে প্রকাশ করেন। 
 এছাড়া মহম্মদ জাফর ইকবালের সম্পাদিত অন্যান্য বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীগুলি হলো:- মহাকাশে মহাত্রাস, ক্রুগো, ট্রাইটন একটি গ্রহের নাম, বিজ্ঞানী সফদর আলীর মহা মহা আবিষ্কার, টুকুনজিল, যারা বায়োবট, ত্রিনিত্র রাশিমালা, নয় নয় শূন্য তিন, অনুরণ গোলক, পৃ, রবো নগরী, একজন অতিমানবি, সিস্টেম এডিকাস, মেতসিস, জলজ, ইরন, ফোবিয়ানের যাত্রী, প্রজেক্ট নেবুলা, ত্রাতুলের জগত, শাহনাজ ও ক্যাপ্টেন ভাবলু, সায়রা সাইন্টিস্ট, ফিনিক্স, সুহানের স্বপ্ন, অবনীল, নায়ীরা, বিজ্ঞানী আধুনিক লুম্বা, অক্টোপাসের চোখ, ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা,অন্ধকারের গ্রহ প্রভৃতি। 


অন্যান্য:- পরবর্তীতে আমরা বাংলা করব বিজ্ঞান জগতে পেয়ে থাকি তারা হলেন যথাক্রমে:- •সঙ্কর্ষণ রায়- ঘুম ভাঙলো চল্লিশ কোটি বছর পর, রিগার মর্টিস, মতিঝিলের ডাইনোসর। • অনীশ দেব- বুদ্ধি যদি বৃদ্ধি পায়, হারিয়ে যাওয়া। • এনাক্ষী চট্টোপাধ্যায়- কলম্বাসের বাবা, প্রতিরূপ। • দিলীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়- ডাইনি দ্বীপে বিস্ফোরণ, ঝিজু। • নিরঞ্জন সিংহ- আশ্চর্য চুরি, উত্তরণ। • সমরজিৎ কর- অরণ্যের অন্ধকারে, কাদের মিয়ার কান। • বিশু দাস- ডঃ হাইজেনবার্গ আর ফেরেননি, ডাঃ ওয়াগনারের পরাজয়। • হীরেন চট্টোপাধ্যায়- রোব্বস, দেলটা গ্রহে বিল্টু। • লীলা মজুমদার- একটি আষাঢ়ে গল্প, চাকর। • সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ- প্রতিবিম্ব, অপলা। • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়- উলট পুরান, সময়। • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়- মেঘ চোর, রাক্ষুসে পাথর। • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী- ক্যাপ্টেন। • আরও গল্প:- • রণেন ঘোষ- বিজন দ্বীপে উড়ন পিপে। •বিমলেন্দু মিত্র- বঙ্কুবাবুর গল্প •নারায়ণ সান্যাল ফ্যান্টাস্টিক নয়? রবি বলে টুকি। •তারাপদ রায়- গিরগিটির রহস্য •দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়- জানালার বাইরে শাল গাছ, মায়াবী •অরূপ রতন ভট্টাচার্য- ফিরে পাওয়া, আবিষ্কারের শিশি •কিন্নর রায়- ল্যাডলি লস্করের ল্যাজ, স্পিলবার্গ রায় ও এলিয়েন। •চঞ্চল পাল- রঙের রহস্য। •মঞ্জিল সেন-চাচা •তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়- সময়ের মোচর, খেলনা। •সুনেত্রা গুপ্ত- আমি মানব একাকী।

মূলত এই সময় বিভিন্ন লেখকের বিভিন্ন স্বাদের লেখায় বাংলা কল্পবিজ্ঞান তার উন্নতির চরম শিখর স্পর্শ করে।