এই ভাষার লিখনপদ্ধতি কী?

সম্পাদনা

জাপানি ভাষা পৃথক তিন ধরনের লেখার পদ্ধতি ব্যবহার করে, হিরাগানা, কাতাকানা, এবং কাঞ্জি। কিছু ক্ষেত্রে, জাপানের অধিবাসীরা ইংরেজি ভাষার বর্ণমালাও ব্যবহার করে থাকে; একে rōmaji বা রোমাজি বলা হয় (শাব্দিক গঠন বিবেচনায়, "রোমান ক্যারেক্টারস")।

 

rōmaji শব্দের 'o' এর উপরে থাকা চিহ্নকে ম্যাক্রন বলা হয়। চিহ্নটি ইঙ্গিত করে এই যে "o" অংশটি সাধারণভাবে 'ও' উচ্চারণের চেয়ে কিছুটা বেশি সময় নিয়ে উচ্চারণ করতে হবে। এটি স্বরের উচ্চারণে কোনো তারতম্য আনে না, শুধু উচ্চারণের সময় কিছুটা বাড়িয়ে দেয়।

হিরাগানা এবং কাতাকানা-কে একত্রে "syllabaries বা অক্ষরমালা" বলা হয়, কারণ এগুলোর প্রতিটি চিহ্ন একেকটি এক-অক্ষরবিশিষ্ট নির্দিষ্ট শব্দকে নির্দেশ করে। এছাড়া এগুলোর ব্যবহার অনেকটাই সাধারণ বর্ণমালার মতো। এসব অক্ষর ব্যবহার করে সহজেই জাপানি শব্দ উচ্চারণানুযায়ী বানান করে ফেলা যায়। হিরাগানা এবং কাতাকানা-এর অধিকাংশ প্রতীকে একটি ব্যঞ্জন-স্বর যোটক থাকে, যেমন "কা" কিংবা "সো"। হিরাগানা জাপানি শব্দ লিখতে ব্যবহার করা হলেও, বিদেশি শব্দ, যা দিনে দিনে জাপানি ভাষায় আত্তীকৃত হয়েছে, যেমন "রোডিও" (স্প্যানিশ থেকে) এবং "শ্যাম্পু" (হিন্দি থেকে), লেখার কাজে শুধুমাত্র কাতাকানা ব্যবহৃত হয়।

প্রাথমিক হিরাগানা (বাম) এবং কাতাকানা (ডান)
(আ) (ই) (উ) (এ) (ও)
(কা) (কি) (কু) (কে) (কো)
(সা) (শি) (সু) (সে) (সো)
(তা) (চি) (ত্সু) (তে) (তো)
(না) (নি) (নু) (নে) (নো)
(হা) (হি) (ফু) (হে) (হো)
(মা) (মি) (মু) (মে) (মো)
(ইয়া) * (ইয়ু) * (ইয়ো)
(রা) (রি) (রু) (রে) (রো)
(ওয়া) * * * (ও)
(ন্‌/উন্‌/উম্‌)
 

প্রকৃতপক্ষে টেবিলে দুটি চিহ্নের জন্য উচ্চারণ "ও" হলেও উক্ত দুটো চিহ্নের ব্যবহার সম্পূর্ণ আলাদা। শেষোক্ত চিহ্নের উচ্চারণ বাংলা 'ও'-এর মতো হলেও ইংরেজিতে লিখলে তা 'wo' হবে। টেবিলে '*'-যুক্ত সংযুক্তিগুলো জাপানি ভাষায় খুব বেশি প্রচলিত নয়।

কাঞ্জি চিহ্নগুলো সাধারণত অর্থবহুল পূর্ণাঙ্গ শব্দ নির্দেশ করে। হিরাগানা এবং কাতাকানা অক্ষরমালা দুটো থেকে কাঞ্জি এই আঙ্গিকে সম্পূর্ণ আলাদা। প্রত্যেকটি কাঞ্জি-কে একের অধিক উপায়ে "পড়া" (বাক্যে ব্যবহার করা) যায়। এমনকি অধিকাংশ কাঞ্জির অন্তত দুটো করে উচ্চারণ রয়েছে: একটা কথ্য জাপানি ভাষার উচ্চারণ, আরেকটি কথ্য চীনা ভাষার উচ্চারণ। এর পেছনে কারণ হলো কাঞ্জি প্রতীকগুলো মূলত চীনা ভিক্ষুদের হাত ধরে পঞ্চম শতাব্দীর শুরুর দিকে জাপানে আসে।

অনেক জাপানি কাঞ্জি দেখতে একই বিষয়বস্তুর চীনা চিহ্নের সাথে অবিকল কিংবা অনেকাংশেই মিলে যায়। কিন্তু কালের বিবর্তনে জাপানি এবং চীনা ভাষার পৃথক পরিবর্ধনের সাথে সাথে অনেক কাঞ্জির রূপেও কিছুটা পরিবর্তন চলে এসেছে।

জাপানি সরকার ২,১০০ এরও বেশি সংখ্যক কাঞ্জি স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে নির্ধারণ করে দিয়েছে; গ্রাজুয়েট হওয়ার আগে প্রতিটি হাই স্কুল শিক্ষার্থীর জন্য স্ট্যান্ডার্ড কাঞ্জিগুলো আত্মস্থ করা বাধ্যতামূলক।

  • কাঞ্জির উদাহরণ: (বড়), (নারী), (পুরুষ), (তুষার), (ঘোড়া), (লাল)

রোমাজি মূলত রোমান বর্ণমালা ব্যবহার করে জাপানি শব্দের উচ্চারণ লিখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে, যেমন (hiragana, katakana, kanji, romaji), এতে করে জাপানি শিখতে ইচ্ছুক ইংরেজি ভাষাভাষীর মানুষদের জন্য জাপানি ভাষা শেখাটা তুলনামূলক সহজ হয়।

কত সংখ্যক মানুষ এই ভাষা ব্যবহার করে?

সম্পাদনা

জাপানি ভাষায় প্রায় ১২৭ মিলিয়ন স্থানীয় ভাষাভাষীরমানুষ কথা বলেন, সেই সাথে আরো এক মিলিয়ন মানুষ আছেন যারা দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে জাপানি শিখেছেন।

 

স্থানীয় ভাষাভাষী — শৈশবেই কোনো একটি নির্দিষ্ট ভাষায় কথা বলতে শিখেছে এমন মানুষ।

 

দ্বিতীয় ভাষা — মাতৃভাষার পরে স্বেচ্ছায় শেখা অন্য কোনো ভাষা।

ভাষাটি কোন ভূখণ্ডে ব্যবহার করা হয়?

সম্পাদনা

জাপানি ভাষা মূলত জাপানেই সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। কিন্তু হাওয়াই, গুয়াম এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু অংশে মানুষ জাপানি ভাষা ব্যবহার করে। এর অধিকাংশই প্রশান্ত মহাসাগরের নিকটবর্তী এলাকা; দক্ষিণ আমেরিকার প্রধানত পেরু এবং ব্রাজিলে, এবং বেশ কিছু প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জেও জাপানি ভাষার ব্যবহার দেখা যায়।

এই ভাষা সৃষ্টির ইতিহাস কী?

সম্পাদনা

প্রথম দর্শনেই চীনা ভাষার সাথে জাপানি ভাষার মিল প্রত্যক্ষ করা যায়। কাঞ্জি প্রতীকগুলোর সবই এসেছে চীনা ভাষা থেকে, আর সেখান থেকেই ধীরে ধীরে কানা অক্ষরমালার (হিরাগানা এবং কাতাকানা) উৎপত্তি। কিন্তু জাপানি ভাষা মূলত চীনা ভাষার চেয়ে অনেকটাই আলাদা। পঞ্চম শতাব্দীর আগে জাপানি ভাষার কোনো লেখ্যরূপ ছিল না। চীনের সান্নিধ্যে আসার পর চীনা ভাষার লিখনপদ্ধতি ব্যবহার করে জাপানি ভাষায় লেখার সূত্রপাত ঘটে।

জাপানি ভাষার উৎপত্তির ইতিহাস কালের পরিক্রয়ায় হারিয়ে গেলেও কিছু মানুষ বিশ্বাস করে এর সাথে কোরিয়ান ভাষার যোগসূত্র আছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। হয়তো ভবিষ্যতে কোনো একদিন জাপানি ভাষার উদ্ভব নিয়ে এই রহস্যের উন্মোচন হবে।

ভাষাটির অন্যতম লেখক এবং কবি কারা?

সম্পাদনা

মুরাসাকি শিকিবু (c.৯৭৩–c.১০১৪), বিখ্যাত দ্যা টেল অব গেনজি-এর লেখক, যা পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন উপন্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম।

মিইয়ামোতো মুসাশি (c.১৫৮৪–১৬৪৫), একজন স্যামুরাই যিনি দ্যা বুক অব ফাইভ রিংস লেখেন।

মাতসুও বাশোও (c.১৬৪৪–১৬৯৪), কবিতার একটি বিশেষ ছন্দ হাইকুর অন্যতম পথিকৃত।

কিইয়োকুতেই বাকিন (১৭৬৭–১৮৪৮), নানসো সাতোমি হাক্কেনদেন বা দ্যা লেজেন্ড অব দ্যা এইট ডগ ওয়ারিয়ারস-এর রচয়িতা।

শুসাকু এনদো (১৯২৩–১৯৯৬) একজন লেখক যার কাজের অনুপ্রেরণায় জাপানি ক্যাথলিক হওয়ার প্রভাব লক্ষণীয়।

কোজি সুযুকি (b. ১৯৫৭) একজন ভৌতিক উপন্যাস এবং ছোটোগল্প লেখক। তার অধিকাংশ কাজই অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি কালজয়ী কাজ হলো রিং। তার লেখা অনেক বইয়ের আলোকে পরবর্তীতে বেশ কিছু ভাষায়, বিশেষ করে ইংরেজি, কোরিয়ান এবং জাপানি ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।

দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার্য এই ভাষার কোন শব্দগুলো আমি সহজেই শিখতে পারি?

সম্পাদনা

প্রাথমিক অভ্যর্থনা:

  • おはようございます! - ওহাইয়ো গোজাইমাসু! - "সুপ্রভাত!"
  • こんにちは! - কোন্নি‌চিওয়া! - "শুভ বিকেল!" বা "হ্যালো!"
  • さようなら! - সাইয়োনারা! - "বিদায়!"
  • また明日! - মাতা আশিতা! - "কাল দেখা হবে!"

নিত্যব্যবহার্য সহজ শব্দ:

  • はい - হাই - "হ্যাঁ"
  • いいえ - ইইয়ে - "নো"
  • 猫 - নেকো - "বিড়াল"
  • 犬 - ইনু - "কুকুর"
  • 日本 - নিহোন - "জাপান"
  • 日本語 - নিহোনগো - "জাপানি ভাষা"
  • 月 - সুকি - "চাঁদ"
  • 絵 - এ - "ছবি"
  • 愛 - আই - "ভালোবাসা"

সংখ্যা:

  1. 一 - ইচি
  2. 二 - নি
  3. 三 - সান
  4. 四 - ইয়োন (শি-চীনা উচ্চারণ)
  5. 五 - গো
  6. 六 - রোকু
  7. 七 - নানা (শিচি-চীনা উচ্চারণ)
  8. 八 - হাচি
  9. 九 - ক্যু
  10. 十 - জ্যু

সৌজন্য:

  • すみません - সুমিমাসেন - "এক্সকিউজ মি"
  • ありがとうございます - আরিগাতোও গোজাইমাসু - "ধন্যবাদ"
  • ごめんなさい - গোমেন নাসাই - "আমি দুঃখিত"
  • 大丈夫ですか? - দাইজোওবু দেসুকা - "তুমি কি ঠিক আছো?"

আমি শিখতে পারি ভাষার এমন সহজবোধ্য গান/ছড়া/গল্প কোনগুলো?

সম্পাদনা
桜 桜 さくら さくら সাকুরা, সাকুরা চেরি ফুল

桜 桜
野山も里も
見わたすかぎり
かすみか雲か
朝日ににおう
桜 桜
花ざかり

桜 桜
やよいの空は
見わたすかぎり
かすみか雲か
においぞいずる
いざや いざや
見にゆかん

さくら さくら
のやま も さと も
みわたす かぎり
かすみ か くも か
あさひ に におう
さくら さくら
はな ざかり

さくら さくら
やよい の そら は
みわたす かぎり
かすみ か くも か
におい ぞ いずる
いざや いざや
みに ゆ かん

সাকুরা সাকুরা
নোইয়ামা মো সাতো মো
মিওয়াতাসু কাগিরি
কাসুমি কা কুমো কা
আসাহি নি নিওউ
সাকুরা সাকুরা
হানা যাকারি

সাকুরা সাকুরা
ইয়াইয়োই নো সোরা ওয়া
মিওয়াতাসু কাগিরি
কাসুমি কা কুমো কা
নিয়োই যো ইজুরু
ইজায়া ইজায়া
মিনি ইউ কান

চেরি ফুল, চেরি ফুল,
পাহাড়ে আর গাঁয়ে,
যতদূর চোখ যায়।
তাদের দেখতে কুয়াশার মতো, কখনও বা মেঘ,
সকালের সূর্যে তারা ঘ্রাণ ছড়ায়।
চেরি ফুল, চেরি ফুল,
এবার তারা ফুটেছে।

চেরি ফুল, চেরি ফুল,
এপ্রিলের আকাশ জুড়ে,
যতদূর চোখ যায়।
তাদের দেখতে কুয়াশার মতো, কখনও বা মেঘ,
সুবাস ছড়িয়ে ফুটেছে।
চলো যাই! চলো যাই!
চলো তাদের দেখে আসি!

গানের দ্বিতীয় অংশ


かえるの歌 かえる の うた কায়েরু নো উতা ব্যাঙের গান

かえるの歌が
聞こえてくるよ
ぐぁ ぐぁ ぐぁ ぐぁ
げろ げろ げろ げろ
ぐぁぐぁぐぁ

かえる の うた が
きこえて くる よ
ぐぁ ぐぁ ぐぁ ぐぁ
げろ げろ げろ げろ
ぐぁぐぁぐぁ

কায়েরু নো উতা গা
কিকোএতে কুরু ইয়ো
গ্যোয়্যা, গ্যোয়্যা, গ্যোয়্যা, গ্যোয়্যা,
গেরো, গেরো, গেরো, গেরো,
গ্যোয়্যা, গ্যোয়্যা, গ্যোয়্যা।

ব্যাঙের গান
আমরা শুনতে পাই
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ,ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ,
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ,
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ।

রেফারেন্স

সম্পাদনা